প্রকাশ: বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩, ৭:৫৫ এএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 113
সাফ নারী ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদায় আসীন বাংলাদেশ। বয়সভিত্তিক গ্রুপে নিয়মিত সাফল্য পেতে পেতে সর্বশেষ দক্ষিণ এশিয়ার মূল প্রতিযোগিতায়ও শিরোপা জিতেছে বাংলার মেয়েরা। এরপর সর্বশেষ সাফ অনূর্ধ্ব-২০ আসরেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। তবে এবার নতুন চ্যালেঞ্জে বাংলার মেয়েরা। চলতি সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ইউরোপের দেশ রাশিয়া।
বুধবার কমলাপুরের শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে এই তাপ ছড়ানো ম্যাচটি শুরু হবে স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে।
ইউরোপের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত ফুটবল শক্তি রাশিয়ার বিপক্ষে একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ। দক্ষিণ এশিয়ার সীমানা ছাড়িয়ে যাওয়ার পরীক্ষা বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের। ফিফা নারী ফুটবল র্যাঙ্কিংয়ে রাশিয়া অবস্থান করছে ২৬ নম্বরে। আর বাংলাদেশের অবস্থান ১৪০। যদিও বয়সভিত্তিক আসর তারপরও ফুটবলের সার্বিক মানদণ্ডে রাশিয়ার চেয়ে যোজন যোজন পেছনে বাংলাদেশ। তবে ধাপে ধাপে র্যাঙ্কিংয়ের ওপরের দিকে দলগুলোকে হারিয়েই দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের।
চলতি আসরকে ঘিরে যথেষ্টই সিরিয়াস রাশিয়া। বিদেশি দলগুলোর মধ্যে সবার আগে বাংলাদেশে এসেছে তারাই। ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে এক রকম নিষিদ্ধ রাশিয়া। এ অবস্থায় ইউরোপিয়ান ফুটবল অভিভাবক উয়েফার পৃষ্ঠপোষকতায় এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে রাশিয়া। বলাবাহুল্য, এ আসরে এই প্রথম দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের কোনো দল অংশ নিচ্ছে। সেদিক থেকে দেখলে এই আসর ব্যতিক্রমী। সবথেকে বড় কথা, রাশিয়ার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা বৈশ্বিক আদল পেয়েছে এবারের আসর।
চলতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের এটা দ্বিতীয় ম্যাচ হলেও রুশ নন্দিনীদের এটি প্রথম ম্যাচ। উদ্বোধনী ম্যাচে ভুটানকে ৮-১ গোলে বিধ্বস্ত করে নিজেদের শক্তিমত্তার স্বাক্ষর রেখেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এখন সবার চোখ আসরের ভিন্ন আকর্ষণ রুশ মেয়েদের সঙ্গে কতটা লড়াই করতে পারে ছোটনের শিষ্যরা। রাশিয়াকে একটা মানদণ্ড হিসেবেই দেখছেন বাংলাদেশ কোচ। তার ভাষায়, এটা তো সত্যি যে ইউরোপীয় আর দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের মান এক নয়। আমরা খেলি এ অঞ্চলের ফুটবল। রাশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ খেললে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে সেটা বুঝতে পারব।
রুশ চ্যালেঞ্জকে সুযোগ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ ছোটন। তার কথায়, আমি মনে করি রাশিয়ার বিপক্ষে খেলাটা মেয়েদের জন্য বিশাল একটা সুযোগ। আমাদের কোথায় উন্নতি হয়েছে, কোথায় উন্নতি করতে হবে, সেগুলো বুঝতে পারব। এই ম্যাচে অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের। রাশিয়াকে শক্তিশালী মানলেও শিরোপা জয়ের লক্ষ্য থেকে সরছেন না মেয়েদের কোচ। তিনি জানান, ইউরোপের দলের বিপক্ষে খেলবে বলে মেয়েরা ভীষণভাবে শিহরিত। আর কোনো চাপও অনুভব করছে না। যোগ করেন, রাশিয়া শক্তিশালী দল। তবে আমাদের মেয়েরা তাদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত। আমরা চাই ভালো খেলতে। আর ভালো খেলার ধারাবাহিকতায় থেকেই জিততে চায় শিরোপা।
এই আসরকে সামনে রেখে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে রাশিয়া। দলটির কোচ ইয়েলেনা মেদভেদের কথায়, আমরা এই টুর্নামেন্টের জন্য দুই মাস তুরস্কে প্রস্তুতি নিয়েছি। সেখানে আমরা ম্যাচও খেলেছি। আমি মনে করি, আমাদের দলের জন্য এটা দারুণ একটা টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে। আমরা এমন একটা টুর্নামেন্টের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। তবে বাংলাদেশের ফুটবল সম্পর্কে তেমন একটা ধারণা নেই বলেও জানান মেদভেদ। তিনি বলেন, এশিয়া অঞ্চলে আমরা কখনোই খেলিনি। আর স্বাগতিকদের সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণাও নেই। তবে আমরা এখানে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। শিরোপা নিয়ে যেতে চাই রাশিয়ায়।