রাত পোহালেই ভোট গ্রহণ শুরু গাজীপুর সিটি নির্বাচনের। এরই মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন পাঠাতে শুরু করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রিজাইটিং অফিসারদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে নির্বাচন পরিচালনা সামগ্রী। পুলিশ সদস্য ও আনসার সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে এসব সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছেন।
তবে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন কেন্দ্রে থাকা সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলার ঘটনা নিয়ে। ভোটের আগের দিন বুধবার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা ভাঙার খবর এসেছে নির্বাচন কমিশনে। নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ২০২ নম্বর কেন্দ্র জয়দেবপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়সহ তিনটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ভাঙার বিষয়টি নজরে এসেছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে কিছু ভাঙা সিসি ক্যামেরার ছবি এসেছে। সেগুলো আমরা যাচাই করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পাঁচ হাজার পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি ৪৫০ র্যাব ও ২০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে বিভিন্ন এলাকায় টহল দিতে দেখা গেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল হাসান সময়ের আলোকে জানান, টঙ্গীর পূর্ব ও পশ্চিম থানা এলাকায় তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নির্ধারিত সময়ের প্রচারণা শেষ হওয়ায় কোনো প্রার্থীকে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ আসেনি।
বর্তমানে এই এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে প্রার্থী ও ভোটাররা নিজ নিজ স্থানে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে ৩ হাজার ৪৯৭টি ভোট কক্ষ থাকবে। এখানে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ এবং নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮, আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১৮ জন।
নির্বাচন পরিস্থিতি দেখতে গাজীপুরে বসানো হয়েছে মোট ৪ হাজার ৪৩৫টি সিসি ক্যামেরা। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বড় পর্দায় ভোটের পরিস্থিতি দেখবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকেরা। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছিলেন, সিসি ক্যামেরায় কোনো অনিয়ম দেখতে পেলে গাইবান্ধা নির্বাচনের চেয়েও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবারের নির্বাচনে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে কাশিমপুর থানায় ৪৭টি, কোনাবাড়ী থানায় ৪৩টি, বাসন থানায় ৪২টি, সদর থানায় ৯৬টি, গাছা থানায় ৫৭টি, পুবাইল থানায় ৩২টি, টঙ্গী পূর্ব থানায় ১১১টি ও টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৫২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব ভোটকেন্দ্রে ৩৫১টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ১২৯টি কেন্দ্রকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সূত্রমতে, নানা দিক বিবেচনায় তারা কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। মূলত গুরুত্বপূর্ণ বলতে এখানে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৫২ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন।