ই-পেপার বিজ্ঞাপনের তালিকা  বুধবার ৩১ মে ২০২৩ ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
ই-পেপার  বুধবার ৩১ মে ২০২৩
https://www.shomoyeralo.com/ad/Amin Mohammad City (Online AD).jpg

https://www.shomoyeralo.com/ad/780-90.jpg
ওষুধের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ: দাম মানুষের নাগালের মধ্যে রাখুন
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০২৩, ৩:৪৭ এএম | অনলাইন সংস্করণ  Count : 96

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে ওষুধ অন্যতম। বাজারের অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে ওষুধের দামও বেড়ে গেছে। ওষুধ প্রস্তুতের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যাচ্ছে, ওষুধের মোড়কিকরণ সামগ্রী, পরিবহন ও বিপণন ব্যয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের মূল্য, ডলারের বিনিময়ে মূল্য ইত্যাদি বৃদ্ধির কারণে সার্বিকভাবে ওষুধের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে ওষুধের বর্তমান মূল্যবৃদ্ধি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ওষুধের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা গ্রহণ দুরূহ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে একজন রোগীর মোট চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৫ শতাংশই ওষুধ ক্রয়ে ব্যয় হচ্ছে। স্বাস্থ্য ব্যয় অত্যধিক বাড়ার কারণে বছরে অন্তত ৮৬ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। 

সম্প্রতি পুলিশের এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বলে বুধবার সময়ের আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ওষুধের কাঁচামাল, বিভিন্ন চিকিৎসা উপকরণ এবং ওষুধ আমদানি কমে যাওয়ায় গত এক বছরে দেশে ওষুধের মূল্য প্রায় ৯০ শতাংশ বেড়েছে। একই সঙ্গে গত এক বছরে চিকিৎসা সরঞ্জামের মূল্যও দ্বিগুণ থেকে চারগুণ বেড়েছে। 

আমাদের প্রয়োজনীয় ওষুধের ৯৮ শতাংশই নিজেরা উৎপাদন করি। ইউরোপসহ বেশ কিছু দেশে ওষুধ রফতানিও হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১৫১টি দেশে বাংলাদেশ ওষুধ নিয়মিত রফতানি করে। বিদেশে বড় ওষুধ কোম্পানির প্লান্ট প্রতিষ্ঠার খবরও রয়েছে। আমাদের ওষুধের মান নিয়েও সন্তুষ্টির অবকাশ রয়েছে। এর দামও তুলনামূলকভাবে কম বা সহনীয় বলে বর্ণনা করা হয়। জীবনযাত্রার ব্যয় যখন বেড়ে চলেছে এবং সিংহভাগ মানুষকে কৃচ্ছ্রসাধন করে চলতে হচ্ছে, এ অবস্থায় ওষুধের দাম অব্যাহতভাবে বেড়ে যাওয়ার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে আমরা মনে করি। এ পরিস্থিতি কাম্য নয়। ওষুধ তো এমন পণ্য নয় যে, ব্যয় সংকোচনের জন্য কেনা বাদ দেওয়া যায় কিংবা কমিয়ে দেওয়া যায়। মূল্যস্ফীতির এ সময়টায় এর মূল্যবৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি থাকলেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রয়োজনে দেশেই মানসম্মত কাঁচামালের উৎপাদন বাড়িয়ে কীভাবে ওষুধের দাম কমিয়ে রাখা যায়, সে ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 

ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরকে ১১৭টি জেনেরিকের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্য নির্ধারণের এখতিয়ার প্রদান করা হয়। তবে দেশে বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার জেনেরিকের ২৭ হাজারেরও বেশি ওষুধ তৈরি হয়। ১১৭টি ছাড়া বাকি সব উৎপাদিত ওষুধের মূল্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করে। তারা শুধু দামের বিষয়টি ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরকে অবহিত করে। ফলে দেশে উৎপাদিত ওষুধের একটি বৃহৎ অংশের মূল্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের এখতিয়ার না থাকায় যৌক্তিক মূল্যের বাধ্যবাধকতা আরোপ ও যথাযথ তদারকির অভাবে ওষুধের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

এর মধ্যে ওষুধের মোট উৎপাদন ব্যয়ের অন্তত ১০ শতাংশ অনৈতিকভাবে ব্যয় হয়। চিকিৎসকরা যাতে কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লেখেন সে জন্য কোম্পানিগুলো চিকিৎসকদের নানা অনৈতিক সুবিধা দেয়, এতে অনৈতিক বিপণন ব্যয় বৃদ্ধি পায়। ফলে কোম্পানিগুলোকে ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করে এই অনৈতিক বিপণন ব্যয় মেটাতে হয়।

এর আগে ২৩ প্রকারের ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছিল। এবার বাড়ানো হয়েছে ৫৩ ধরনের ওষুধের দাম। যেখানে বিদেশের বাজারে ওষুধ রফতানি করে বাংলাদেশ কোটি কোটি ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে, সেখানে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ওষুধ কিনে খাওয়ার সমস্যায় ভুগবে, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ঔষধ প্রশাসনের অবশ্যই সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত। সাধারণ মানুষের আয়ের কথা চিন্তা করে অপরাপর প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মতো ওষুধের বাজারমূল্য অবশ্যই তাদের নাগালের মধ্যে রাখতে হবে। আমরা মনে করি, অনতিবিলম্বে ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। 









https://www.shomoyeralo.com/ad/Google-News.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com