প্রকাশ: শুক্রবার, ২৬ মে, ২০২৩, ৭:২৪ এএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 80
‘মিনতি ভরা আঁখি, কে তুমি ঝড়ের পাখি
।’ কার? তার। যাকে ভালোবাসি, তার আঁখি। মিনতি ভরা। কী চায় সে? কার কাছে চায়? নজরুল প্রেমেরই কবি। বিদ্রোহী বলে যতই পরিচিতি ঘটে যাক না কেন, চুরুলিয়ায় জন্মানো কবি কাজী নজরুল ইসলাম চিরকালের প্রেমের কবি, চিরদিনের বিরহের কবি। ব্যথাবেদনা ও ফুলের কবি। ফুলের জলসায় নীরব কবি কাজী নজরুল ইসলাম। কবি জন্মালেন এমন এক সময়ে, যখন অবিভক্ত বাংলা বা ভারতবর্ষে, ব্রিটিশ শাসন চলছে। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে চাইছে ভারতবর্ষের তরুণেরা। যখন হিন্দু-মুসলমান জাতপাতের দ্বন্দ্বে বিভক্ত সমাজ।
সে সময় বাংলায়, বিশেষ করে বাঙালি মুসলমান সমাজ যথেষ্ট পিছিয়ে পড়া এক জাতি। শিক্ষায় পিছিয়ে, অর্থনীতিতে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশের মুসলমান সমাজ। সেই পিছিয়ে পড়া গোত্রকে কাজী নজরুল তার কবিতা ও গানে জাগিয়ে দিলেন। একটি ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে দিলেন। ব্রিটিশরাজ ক্ষিপ্ত হয়ে নজরুলকে জেলে ভরেছে। জীবনের মূল্যবান সময় কেড়ে নিয়েছে, তবু নজরুল অনমনীয়ই রয়ে গেছেন। হয়তো সে কারণেই তাকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দেওয়া হয়েছে একদা।
কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা লিখেছেন নিপীড়িত মানুষের জন্য, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে। এমন কোনো কবির উদাহরণ আমরা দিতে পারি না, যার দশা নজরুলের মতো হয়েছে।
কাজী নজরুল এক মিথ, বাংলায়, উপমহাদেশেও। অসংখ্য নিরক্ষর মানুষ, যারা কোনো লেখায় পড়ে না কিন্তু তারা জানে কবি নজরুলকে। কেননা নজরুল পৌঁছে আছেন তাদের মানস চেতনায়। এখানে কবির সার্থকতা এর চেয়ে বেশি আর কীভাবে হতে পারে?
বাংলাদেশের ঘরে ঘরে বিকশিত হচ্ছে যত শিশু, বিশেষ করে ছেলে শিশু, তারা নজরুলকে এমনভাবে পায়, মনে হয় প্রতেকেই একবার তার জীবনে নজরুল হতে চায়। কবির এক বড় অর্জন। কবির জন্মদিন পালিত হয়েছে ঘটা করে। সমস্ত স্কুল-কলেজে পালিত হচ্ছে। জাতিগতভাবেই নজরুল মিশে গেছেন বাঙালির জীবনে। গান নজরুলকে অবিস্মরণীয় উচ্চতায় নিয়ে গেছে। অমরত্ব দিয়েছে কবিকে। কবির জন্য অশেষ ভালোবাসা জানাচ্ছি।