ই-পেপার বিজ্ঞাপনের তালিকা  বুধবার ৩১ মে ২০২৩ ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
ই-পেপার  বুধবার ৩১ মে ২০২৩
https://www.shomoyeralo.com/ad/Amin Mohammad City (Online AD).jpg

https://www.shomoyeralo.com/ad/780-90.jpg
অনাবৃষ্টিতে পেয়ারা ফলন কম, ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা
আতিকুর রহমান, ঝালকাঠি
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৬ মে, ২০২৩, ১১:০৭ এএম আপডেট: ২৬.০৫.২০২৩ ১১:১১ এএম | অনলাইন সংস্করণ  Count : 62

অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পেয়ারাগাছে ফুল আসলেও তা ঝড়ে গেছে। কিন্তু মাঘ-ফাল্গুন মাসে পেয়ারা গাছের পরিচর্যায় কোন অংশেই কম ছিলো না। যে পরিমাণ অর্থ ও শ্রম ব্যয় হয়েছে তাতে আশানুরূপ ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে চোখে-মুখে হতাশার ছাপ চাষিদের। 

জানা গেছে- ঝালকাঠি, বানারিপাড়া ও স্বরূপকাঠি উপজেলার ৫৫ গ্রামে ফলন হয় পেয়ারার। এই এলাকার হাজার হাজার মানুষের কাছে ‘পেয়ারা’ অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ও জীবিকার অবলম্বন। আষাঢ়-শ্রাবণের ভরা বর্ষায় এসব এলাকার নদী-খালজুড়ে পেয়ারার সমারোহ। দেরিতে ফুল আসলেও বৃষ্টি না হওয়ায় সেই ফুল অনেকটাই ঝড়ে গেছে। এখনও পরিপক্ব হয়ে বিক্রি করার সময় হতে আরো প্রায় মাসখানেক লাগবে। তাই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে কৃষকদের।

বরিশাল বিভাগের কম-বেশি সবজায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পেয়ারার চাষ হলেও বরিশাল জেলার বানারীপাড়া, ঝালকাঠি সদর ও পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি ঘিরেই মূলত পেয়ারার বাণিজ্যিক চাষ। বরিশাল জেলার বানারীপাড়ার ১৬ গ্রামে ৯৩৭ হেক্টর, ঝালকাঠি জেলার ১৩ গ্রামে ৩৫০ হেক্টর জমিতে, স্বরূপকাঠির ২৬ গ্রামের ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পেয়ারা চাষ হয়। এসব এলাকার মধ্যে ঝালকাঠির কীর্ত্তিপাশা, ভিমরুলী, শতদশকাঠী, খাজুরিয়া, ডুমুরিয়া, কাপুড়াকাঠি, জগদীশপুর, মীরকাঠি, শাখা গাছির, হিমানন্দকাঠি, আদাকাঠি, রামপুর, শিমুলেশ্বর এই গ্রামে বৃহৎ অংশজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে যুগ যুগ ধরে পেয়ারার চাষ হচ্ছে। স্বরূপকাঠির ২৬ গ্রামের মধ্যে রয়েছে সঙ্গীতকাঠি, খায়েরকাঠি, ভদ্রানন্দ, বাচ্চুকাঠি, ভাংগুরা, আদাবাড়ি, রাজাপুর, ব্রাহ্মণকাঠি, ধলহার, জিন্দাকাঠি, আটঘর, কুড়িয়ানা, পূর্ব জলাবাড়ি, ইদিলকাঠি, আরামকাঠি, মাদ্রা, গণপতিকাঠি, আতাকাঠি, জামুয়া, জৈলশার, সোহাগদল, আদমকাঠি,অশ্বত্থকাঠি, সমীত, সেহাংগল, আন্দারকুল। 

বাগানগুলো মূল ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। চাষিরা মৃতপ্রায় গাছের ডাল কেটে, মাটি আলগা করে পেয়ারা গাছে আলাদা করে যত্ন নেয়। বাগানের চতুর্দিক জালের মতো ছড়িয়ে থাকা নালা কেটে মাটি পেয়ারা গাছের গোঁড়ায় দেয়া হয়। চাষিরা জানান, পেয়ারা গাছে তেমন কোন সার বা আলাদা করে কিছু দেবার প্রয়োজন নেই। শুধু পরিচর্যাই যথেষ্ট। সারাবছর তেমন কোন কিছু করার দরকার হয় না। বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসেই পেয়ারা গাছে ফুল আসতে শুরু করে। তবে বৃষ্টি শুরু না হলে পেয়ারা পরিপক্ব হয় না। জমি ভালো হলে হেক্টর প্রতি ১২ থেকে ১৪ মেট্রিক টন পেয়ারার উৎপাদন হয়।

কৃষক পঙ্কজ বড়াল জানান, মাঘ-ফাল্গুন মাসে পেয়ারা গাছের গোঁড়া পরিষ্কার করে সার প্রয়োগ করতে হয়েছে। এরপরে কাঁদা মাটি দিয়ে গোঁড়া ঢেকে দিয়েছি। তাতে প্রতিটা গাছের গোঁড়ায় গড়ে তিনশতাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে। পেয়ারা গাছে যে পরিমাণ ফুল এসেছিলো এবছর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় তা অনেকটাই ঝড়ে গেছে। লাভ তো দূরের কথা, আসল খরচের টাকাই ওঠে কি না তাই নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানালেন এই কৃষক। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার কৃষকদের জন্য অনেক কিছুই দেয়। আমি একজন প্রান্তিক ও দরিদ্র কৃষক। সারাদিনই কৃষি নিয়ে পড়ে থাকি। তাই কারো কাছে যেতে না পারায় কৃষি সার ও বীজ কোন কিছুই পাইনি।

মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলায় ১৩ গ্রামে ৩৫০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা চাষ হয়। পেয়ারা মৌসুমে এলাকার হাজার হাজার মানুষের কাছে ‘পেয়ারা’ অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ও জীবিকার অবলম্বন। বৃষ্টি পাত না হওয়ার কারণে ফুল কিছুটা ঝড়ে গেছে। তবুও যা আছে তা ঠিকমতো ঠিকে থাকলে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য সরকারীভাবে প্রণোদনার সার ও বীজ সুষম বণ্টন করা হচ্ছে।

পেয়ারাচাষি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ভবেন হালদার জানান, কৃষির ফলনে সবচেয়ে সুবিধাজনক হলো স্বাভাবিক মাত্রায় বৃষ্টি। কিন্তু এবছর পেয়ারা গাছের পরিচর্যা সঠিকভাবে করা হলেও বৃষ্টি না থাকায় যে পরিমাণে ফুল এসেছিলো তার বেশিরভাগই ঝড়ে গেছে।




https://www.shomoyeralo.com/ad/Google-News.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com