প্রকাশ: সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩, ২:১২ এএম (ভিজিট : ৩১২)
মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে পরকালের জগৎ সাজানোর জন্য। যারা নেক আমল করবে তারা মৃত্যুর পর অনন্ত সুখের জগৎ জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ জন্য বলা হয়, দুনিয়া হচ্ছে পরকালের শস্যক্ষেত্র। এখানে যেমন চাষ করা হবে, পরকালে তেমন সুফল পাওয়া যাবে।
প্রতিদিনের ফরজ ইবাদত তো অবশ্যই করতে হবে, এ ছাড়াও আরও অনেক আমল আছে, যা স্বাভাবিক জীবনাচারের ভেতর দিয়েই করা যায় এবং পরকালেও সজ্জিত হয় জান্নাতের স্বপ্নিল ভুবন। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি একবার বলে ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়াবিহামদিহি’, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হয় (তিরমিজি : ৩৪৬৪)। ছোট এই বাক্যটি পড়তে মাত্র তিন সেকেন্ডের কম সময় লাগে। কিন্তু আল্লাহ এতই মহান যে তিনি এর বিনিময়ে তাঁর প্রিয় বান্দার জন্য জান্নাতে খেজুর গাছ লাগিয়ে দেন। এমন ছোট অনেক আমলের মাধ্যমে বান্দা জান্নাতের মেহমান হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করতে পারে।
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সব মুসলমানকেই পড়তে হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে ১০ মিনিট করে সময় ব্যয় করলেও দিনে এক ঘণ্টার মতো সময় লাগে। প্রতি নামাজের পরই কিছু আমল আছে, যা নামাজের স্থানে বসেও করা যায়, নামাজ থেকে ফেরার পথেও করা যায়। হজরত আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে তাকে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো কিছু জান্নাতে যেতে বাধা দিতে পারবে না (তাবরানি : ৭৫৩২)। প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একবার আয়াতুল কুরসি পড়তে ১৫ সেকেন্ডের বেশি সময় লাগার কথা নয়। আল্লাহ এতই মহান, বান্দার মাত্র ১৫ সেকেন্ডের আমলের বিনিময়ে তাকে জান্নাতের মেহমান বানিয়ে নেন!
যাদের অন্তরে শিরকের বিষ থাকবে মহান আল্লাহ তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। রাসুল (সা.) তাঁর সাহাবিদের এমন একটি দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন, যে আমলটি করতে মাত্র কয়েক সেকেন্ড প্রয়োজন হয়। হজরত মাকিল ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর সঙ্গে নবী (সা.)-এর কাছে গেলাম। তিনি বলেন, ‘হে আবু বকর, নিশ্চয়ই শিরক পিপীলিকার পদচারণ থেকেও সন্তর্পণে তোমাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকে।’ আবু বকর (রা.) বলেন, ‘কারও আল্লাহর সঙ্গে অপর কিছুকে ইলাহরূপে গণ্য করা ছাড়াও কি শিরক আছে?’
নবী (সা.) বলেন, ‘সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! শিরক পিপীলিকার পদধ্বনির চেয়েও সূক্ষ্ম। আমি কি তোমাকে এমন কিছু দোয়া শিখিয়ে দেব, যা পাঠ করলে তুমি শিরক থেকে রক্ষা পাবে।’ তিনি বলেন, তুমি বলো, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আ-লামু, ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আ-লামু’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আমি সজ্ঞানে তোমার সঙ্গে শিরক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যা আমার অজ্ঞাত তা থেকেও তোমার কাছে ক্ষমা চাই’ (আদবুল মুফরাদ : ৭২১)। আল্লাহ সবাইকে আমল করার তওফিক দিন।