ই-পেপার শনিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শনিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জামাতে নামাজ আদায়, যেসব বিষয়ে সতর্কতা জরুরি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩, ২:০০ এএম  (ভিজিট : ৩৯৯)
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। এর সওয়াবও অধিক। কিন্তু এই অধিক সওয়াব অর্জন করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা কিছু ভুল করে থাকি, যা কাম্য নয়। তাই সতর্কতার সঙ্গে নামাজ আদায় করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল করতে হবে, আবার বর্জনীয় কিছু কাজ ছাড়তেও হবে। 

সামনের কাতার খালি না রাখা

সামনের কাতারে জায়গা ফাঁকা রেখে পেছনে দাঁড়ানো ঠিক নয়। বরং নিয়ম হলো, প্রথমে সামনের কাতার পূর্ণ করা। এরপর পেছনে নতুন কাতার করা। অনেক সময় দেখা যায়, মসজিদে জামাত শুরু হয়ে যাওয়ার পর কেউ মসজিদে এসে তাকবিরে উলা কিংবা রুকু পাওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করে পেছনে দাঁড়িয়ে যায়। অথচ তখনো মসজিদের দুপাশে সামনের কাতারের দিকে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। এটা সমীচীন নয়। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সামনের কাতার আগে পরিপূর্ণভাবে পূরণ করো, তারপর এর পেছনের কাতার (এভাবে পর্যায়ক্রমে কাতারগুলো) পূরণ করো, অপূর্ণতা যদি থাকে, সেটা যেন সর্বশেষ কাতারেই থাকে।’ (আবু দাউদ : ৪৭১)

দৌড়ে না আসা 

অনেকে তাকবিরে উলা বা জামাতের সওয়াব অর্জন করতে গিয়ে দৌড়ে এসে নামাজে শরিক হওয়ার চেষ্টা করেন। এটা নামাজের ভাবগাম্ভীর্যের পরিপন্থি। রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ হচ্ছে- ‘নামাজের ইকামত শুনলে তোমরা ধীর ও শান্তভাবে মসজিদে বা জামাতে যাও এবং তাড়াহুড়া করো না। অতঃপর ইমামের সঙ্গে নামাজের যতটুকু অংশ পাও ততটুকু পড়ে নাও এবং যেটুকু অংশ ছুটে যায় তা একাকী পূর্ণ করে নাও’ (বুখারি : ৬৩৬; মুসলিম : ৬০২)। কোনো ব্যক্তি যখন দৌড়ে এসে নামাজে শরিক হয় তখন তাকবিরে উলা বা প্রথম তাকবির হয়তো পায় কিংবা এক বা দুই রাকাত বেশি পায় কিন্তু তখন সে স্থিরচিত্তে নামাজ পড়তে পারে না। বরং নামাজজুড়েই একটা অস্থিরতা কাজ করতে থাকে। 

অপেক্ষা না করা 

রুকু না পেলে অনেকে জামাতে শরিক না হয়ে এমনিই দাঁড়িয়ে থাকেন। ইমাম যখন সেজদা শেষ করে পরবর্তী রাকাতের জন্য দাঁড়ান বা তাশাহুদে বসেন তখন তিনি নামাজে শরিক হন। এ পদ্ধতিটি ঠিক নয়। কেননা নবীজি (সা.)-এর নির্দেশ হচ্ছে ‘তোমরা ইমামকে যে অবস্থায় পাও নামাজে শরিক হয়ে যাও, আর যতটুকু ছুটে গেছে তা জামাত শেষে আদায় করো।’ (বুখারি  : ৬৩৬) 

ইমামের আগে রুকু-সেজদা না করা

জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার সময় অনেকে ইমামের পূর্বেই রুকু-সেজদায় চলে যান কিংবা ইমামের পূর্বেই রুকু-সেজদা থেকে উঠে পড়েন। ভুলবশত এমনটি করলে নামাজ নষ্ট হবে না। কিন্তু ইচ্ছা করে যারা এমন করে, তাদের জন্য হাদিসে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ কি এ কারণে ভয় করে না, যখন সে ইমামের পূর্বে তার মাথা উঠিয়ে নেয় তখন আল্লাহ তার মাথাকে গাধার মাথায় কিংবা তার আকৃতিকে গাধার আকৃতিতে পাল্টে দিতে পারেন’ (বুখারি : ৬৯১)। হাদিসের ভাষ্য থেকেই বোঝা যায়, যারা ইমামের আগে আগে রুকু-সেজদায় চলে যায় তাদের প্রতি আল্লাহর রাসুল (সা.) কী পরিমাণ কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন!

হাত বাঁকিয়ে অন্যকে কষ্ট না দেওয়া

অনেকে সেজদায় গিয়ে দুই হাতের ডানা এমনভাবে দুদিকে বিস্তৃত করে বাঁকিয়ে দেন যে, তার পাশে নামাজ আদায়কারীর কষ্ট হয়। এমন করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। স্বাভাবিকভাবে যতটুকু ফাঁকা রাখতে হয় ততটুকু রাখা। অর্থাৎ জমিন-ঊরু-বুক থেকে দুই হাতের ডানা যে পরিমাণ পৃথক রাখা দরকার ততটুকুই ফাঁক রাখা। এত বেশি ফাঁক না করা, যাতে অন্যরা কষ্ট পায়।

দ্রুত না দাঁড়ানো 

যখন ইমাম সাহেব সালাম ফেরাবেন, তখন মাসবুক ব্যক্তি সালাম না ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে যাবে এবং ছুটে যাওয়া রাকাতগুলো আদায় করবে। অনেককেই দেখা যায়, ইমাম সাহেব এক সালাম ফেরানোর পর যখন দ্বিতীয় সালাম শুরু করেন, তখনই তারা অবশিষ্ট নামাজ শেষ করতে দাঁড়িয়ে যান। 

অথচ নিয়ম হচ্ছে, ইমাম ডানে-বামে উভয় দিকে সালাম ফেরানো শেষ করে পূর্ণ স্থিতির পর মাসবুক ব্যক্তি দাঁড়ানো। এর আগে নয় (ফতোয়ায়ে শামি : ২/৩৪৮)। নামাজের এই ছোটখাটো বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন ও আমলে নিয়ে তা প্রয়োগ করার তওফিক দান করুন, আমিন।






https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close