প্রকাশ: বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩, ১:৫৮ পিএম আপডেট: ৩১.০৫.২০২৩ ২:০৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 117
১৫ বছর বয়সি সাশা ক্রায়নিউক এর একটি ছবি দেওয়া হয় ইউক্রেনীয় তদন্তকারীদের হাতে। ছবির ছেলেটি একটি স্কুল ডেস্কে বসে আছেন। ডান হাতার উপর রাশিয়ার যুদ্ধের জেড চিহ্ন। রাশিয়ার পতাকার লাল, সাদা এবং নীল রঙ। ছবি যাচাই করে চোখ কপালে উঠে তদন্তকারিদের। ছেলেটি রাশিয়ান নয়, ইউক্রেনীয়। নাম আর্টেম।
গত সেপ্টেম্বরে উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের কুপিয়ানস্কে বালাক্লাভাসে সশস্ত্র রাশিয়ান সৈন্যরা স্কুল ১৩ জন শিশুকে ধরে নিয়ে যান। তাদের মধ্যে আর্টেম একজন। ঘটনার দিন তড়িগড়ি করে তাদের একটি বাসে উঠানো হয়। এরপর কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের হদিস পাওয়া যায়নি।
এক সময় বন্দি শিশুদের তাদের বাড়িতে কল করার অনুমতি দেওয়া হয়। তখন জানা যায়, তাদের রাশিয়ান-অধিকৃত একটি অঞ্চলের অনেক গভীরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। অবস্থান জানার পর তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য স্বজনরা মরিয়া হয়ে হাজার হাজার মাইল দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে সন্ধানের চেষ্টা করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পেরেভালস্ক থেকে মাত্র আটটি শিশু মায়ের কোলে ফিরে আসতে পেরেছে। তাদের একজন হলেন সে-ই আর্টেম। সন্তানকে ফিরে পেয়ে মা যেনো বসন্তের আনন্দে হারিয়ে গেলেন।
অমানবিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে সারাহ রেইনসফোর্ড বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ের পরিচালকের কাছে ফোন করে জানতে পারি যে, আক্রমণকারীরা ইউক্রেনীয় শিশুদের তার চোখের সামনে সেনাবাহিনীর পোশাক পরতে বাধ্য করেছে। এসময় তিনি অসহায়ের মতো তাকিয়ে ছিলেন। করার যেনো কিছুই ছিল না।’
এ কর্মকাণ্ড নিঃসন্দেহে ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত মার্চ মাসে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তখন তার বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় শিশুদের ধরে নিয়ে বেআইনিভাবে নির্বাসনের জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
তবে এ অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছে রাশিয়া। তাদের দাবি, মানবিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনা করে বিপদ থেকে রক্ষার জন্য শিশুদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিয়েভের কর্মকর্তারা জানান, একের পর এক আক্রমণের পর দখলকৃত এলাকা থেকে ১৯ হাজারেরও বেশি শিশুকে তারা ধরে নিয়ে গেছেন।
খবর: বিবিসি।