ই-পেপার বিজ্ঞাপনের তালিকা সোমবার ২ অক্টোবর ২০২৩ ১৭ আশ্বিন ১৪৩০
ই-পেপার সোমবার ২ অক্টোবর ২০২৩
https://www.shomoyeralo.com/ad/Amin-Mohammad-City-(Online).jpg

https://www.shomoyeralo.com/ad/SA-Live-Update.jpg
নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোনো কারণ দেখছেন না পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩, ৬:৩৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ  Count : 226

নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোনো কারণ দেখছেন না পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ওপর নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণ নেই। আগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক যোগাযোগ চলছে। 

বুধবার (৩১ মে) গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ অ্যাট দ্য ক্রসরোড: ইনকনভারসেশন উইথ মো. শাহরিয়ার আলম’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, নতুন যে ভিসানীতি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সেটির যথেচ্ছ ব্যবহার আশা করে না সরকার। সরকার আশা করে যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য সবগুলো রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসবে এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিবে। 

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে সরকার কোনো চাপে নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আর হবে না। অন্যদিকে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সরকার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বড় ধরনের কোনো কেনাকাটা করবে না। এ ছাড়া বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক অনেক পরিপক্ক হলেও দুইপক্ষের সম্পর্কে অনেক মতবিরোধ রয়েছে, যার মধ্যে প্রধান সমস্যা হল বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়া।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক, নির্বাচন, নতুন ভিসানীতি, বিদেশি চাপ, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর, চীনের বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ (জিডিআই), প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়, রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ সমসাময়িক একাধিক ইস্যু নিয়ে আলাপ হয়।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব দলের সমান প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে। অবশ্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর দায়িত্ব বেশি। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে সকেলের দায়িত্ব সমান। সরকার আশা করে যে বিএনপি সামনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তিনি আরো বলেন, বিএনপি বলেছে যে পুলিশ, প্রশাসন এবং যারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে দেখে নেওয়া হবে এবং যা বড় ধরনের হুমকি। আমি আশা করবো, যুক্তরাষ্ট্র এগুলো বিবেচনা করবে। আর ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ ইস্যূটি শেষ হয়ে গেছে। আমরা সেটিতে আর ফিরে যাবো না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি করাটা এখন হবে অবৈধ এবং যা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিবেচিত হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি নিয়ে মো. শা্হরিয়ার আলম বলেন, আমরা আশা করি, ওই ভিসানীতির যথেচ্ছ ব্যবহার হবে না। ভিসানীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার বিষয়টি আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য নতুন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনও যুক্তি দেখি না। বিগত ২০২১ সালের পর নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। আমি কোনো কারণ দেখি না, যার কারণে সামনের বছরগুলোতে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। অবশ্য যদি না আমরা বড় ধরনের কোনও কাণ্ড ঘটাই।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বের একাধিক শক্তিশালী দেশ অন্য দেশের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মুহূর্তেও বাণিজ্য বন্ধ করেনি। এটি যদি সত্যি হয়, তবে বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে বাণিজ্যকে কেন জড়িয়ে ফেলা হবে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য সরকার রাজনৈতিকভাবে যোগাযোগ করছে। গত ২০২১ সালের পর পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বলেছে। এছাড়া আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে, যা আমরা অনুসরণ করবো।

বাংলাদেশ -যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের মতবিরোধ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই দুইদেশের সম্পর্কে কিছু সমস্যা আছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র একটি বন্ধুভাবাপন্ন দেশ হয়েও বঙ্গবন্ধুর আত্ন-স্বীকৃত খুনিকে সেদেশে আশ্রয় দিয়েছে। যা সমস্যার একটি বড় উৎস। এর সমাধান হচ্ছে ওই খুনিকে ফেরত পাঠানো। তিনি আরো বলেন, সৎভাবে বললে এই সমস্যা সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। কানাডাতেও বঙ্গবন্ধুর আরেকজন খুনি আছে, কিন্তু সেখানকার ইস্যুটি ভিন্ন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফেরত না পাঠানোর বিষয়ে কানাডার একটি আইন আছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের কোনো আইন নেই।

বিদেশি চাপ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কোনও বিদেশি চাপে প্রভাবিত হয় না। কোনো বিদেশি শক্তির চাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রভাবিত হন না। আমাদের বিদেশি বন্ধুদের বুঝতে হবে যে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা ও এটি তার অহঙ্কার। আর যদি বিদেশি চাপ প্রয়োগ করাও হয়, তাহলেও কি শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ফেলা যাবে?

চীন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের বিষয়ে এখনো কিছু ঠিক হয়নি। প্রধানমন্ত্রী চীন যাবেন কিনা, জানি না। তবে একটি বন্ধু দেশে তিনি যেতেই পারেন। নির্বাচনের আগে আমরা বিভিন্ন দেশে যেতেই পারি। আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া নির্বাচনের কারণে থেমে থাকবে না। বন্ধুত্বপূর্ণ সফর দেশের জন্য ভালো কিছু আনে। চীনের বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ (জিডিআই) নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগে অনেক আগেই যুক্ত হয়েছে এবং আরও অনেক দেশ এর সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু চীনের বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ (জিডিআই) একটি নতুন উদ্যোগ। এটি নিয়ে আলোচনা হওয়া ভালো। কারণ আমরাও জানি না যে এই উদ্যোগে যুক্ত না হওয়ার মতো কোনো উপাদান আছে কিনা।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমাদের বিভিন্ন ধরনের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় করতে হয়। আমাদের ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ রয়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সরকার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বড় ধরনের কোনো কেনাকাটা করবে না। কেননা এমন কেটাকাটা এই সময়ে করলে বড় যেসব ক্রয়াদেশ রয়েছে, সেগুলো শ্লথ হয়ে যাবে। দেশের অর্থনৈতিক মঙ্গল এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। আর আমাদের এখন কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। তবে অবশ্যই সবসময় উগ্রবাদের ঝুঁকি থেকে যায়। বাংলাদেশ এটিকে প্রতিরোধ করবে। একইভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় আঘাত আসলে, সার্বভৌমত্বে আঘাত আসলে, সেটিকে প্রতিরোধের জন্য আমাদের সরঞ্জাম লাগবে। যে কারণে ফোর্সেস গোল ২০৩০ এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশের কিছু কৌশলগত পরিকল্পনা আছে এবং এটি শেষ হওয়ার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।




https://www.shomoyeralo.com/ad/Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com