প্রকাশ: বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 114
গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়েরকৃত মামলাকে কেন্দ্র করে মহল বিশেষের অশুভ তৎপরতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। একইসঙ্গে কোন ব্যক্তির পরিচয় বিবেচনায় না নিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
বুধবার (৩১ মে) সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ড. ইউনুস গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমের মাধ্যমে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করলেও কেউ আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে সেটি অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়ায় আসতে হবে। এটিই সভ্য সমাজের রীতি।
তারা বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করে ইউনুসসহ ১৩ জনের জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক। এঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের মামলা করেছে সংস্থাটি। তিনি দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত না হলে নিশ্চয়ই আইনি প্রক্রিয়ায় সেটি প্রমাণিত হবে। তথাকথিত কিছু কিছু সংগঠন বিবৃতির মাধ্যমে যে প্রতিবাদ করেছে, তা আইনের শাসনের পরিপন্থী ও দুরভিসন্ধিমূলক। কেননা, তারা যে রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী সেই রাজনৈতিক দলটি হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আইনের শাসন আর গণতন্ত্রকে হত্যার মধ্যদিয়ে জন্ম নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত অর্জনকে পদদলিত করে এদেশকে দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। এদের নেতার দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং বিচারের মাধ্যমে প্রমাণিত।
শিক্ষক সমিতি আরও জানায়, এই ষড়ষন্ত্রের শিকড় আরও গভীরে থাকার বিষয় স্পষ্ট হয়েছে বিবৃতিদাতাদের তথ্যে। ১৯৭৮ সালে একজন অবৈধ সামরিক স্বৈরশাসকের দেওয়া রাষ্ট্রপতি পুরস্কারই প্রমাণ করে ড. মুহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অনেক পুরনো। মূলত, বাংলাদেশবিরোধী প্রচার-প্রচারণা ও বিরাজনীতিকরণের ধারা প্রতিষ্ঠার অনুঘটকদের সঙ্গে ড. ইউনুসের দীর্ঘদিনের সখ্যতা রয়েছে। এ কারণেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার প্রতিবাদ করতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির কথা তুলে এনে বস্তুত অর্থে তারা ঘোলাজলে মাছ শিকারের অপতৎপরতার বিষয়টিই স্বীকার করে নিয়েছেন।
শিক্ষক সমিতির দুই নেতা বলেন, বিএনপি-জামাতের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপকৌশল ও ষড়যন্ত্রের কারণে ওয়ান-ইলেভেন সৃষ্টি এবং ধোঁয়াশাচ্ছন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল। ওই সময় প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে অকার্যকর করে ভূঁইফোড় রাজনৈতিক দল গঠন করে এসব ব্যক্তিদের ক্ষমতায় বসানোর অশুভ তৎপরতা কারা চালিয়েছিল সেটিও জাতি ভুলে যায়নি।
সমিতি জানায়, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দেশি-বিদেশি এসব চক্র আবারও অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। এসব চক্রান্তকারীদের ব্যাপারে দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সজাগ থাকতে আহ্বান জানান। একইসঙ্গে নির্দোষ কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন। শিক্ষক সমিতি ব্যক্তির পরিচয় বিবেচনায় না নিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।