ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

খাবারের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের আদব
প্রকাশ: বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩, ৭:২৮ এএম  (ভিজিট : ৬১৭)
আশপাশে যারা বসবাস করে তারা আমাদের প্রতিবেশী, নানা সময়ে আমাদের জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় যারা অংশীদার হয়। কখনো কোনো অনুষ্ঠান বা প্রীতিভোজের আয়োজনে একে অন্যকে দাওয়াত দিলে প্রত্যাখ্যান না করে বরং সেখানে উপস্থিত হওয়া উচিত। এটাই প্রিয় নবী (সা.)-এর সুন্নত। সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ তার ভাইকে দাওয়াত দিলে সে যেন তা কবুল করে। তা বিয়ের অনুষ্ঠান বা প্রীতিভোজ যাই হোক না কেন’ (আবু দাউদ : ৩৭৩৮)। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘যাকে দাওয়াত দেওয়া হয়, সে যেন তাতে সাড়া দেয়। অতঃপর ইচ্ছে হলে খাবার গ্রহণ করবে নতুবা বিরত থাকবে’ (আবু দাউদ : ৩৭৪০)।

আমাদের সমাজে একটা বিষয় খুব ব্যাপকভাবে চলে আসছে। তা হলো, কোনো অনুষ্ঠানে যদি কাউকে এককভাবে দাওয়াত করা হয়, সেখানে সে পুরো পরিবার নিয়ে উপস্থিত হয় এবং সেটাও মেজবানের অজান্তে। এদিকে মেজবান পড়ে যায় বিপাকে। কখনো শিকার হন বিব্রতকর পরিস্থিতির। অনেক সময় খাদ্য-স্বল্পতার কারণে লজ্জিতও হতে হয়। তাই এসব ভোজ-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে রাসুল (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন সর্বোৎকৃষ্ট শিষ্টাচার। যদি কখনো এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় অর্থাৎ আহুত মেহমানের সঙ্গে অতিরিক্ত অনাহুত মেহমান বাড়িতে চলে আসে তা হলে কি তাকে তাড়িয়ে দেবে নাকি মেজবানের অনুমতি চাইবে সে সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে একটি শিক্ষণীয় ঘটনা। হজরত আবু মাসউদ বদরী (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দাওয়াত দিয়েছিল। তাঁর সঙ্গে আরও চারজন ছিল। ওই যুগে সামাজিক লৌকিকতা এত প্রকট ছিল না বিধায় রাসুলুল্লাহ (সা.) অনেক সময় নিজের সঙ্গে আরও দুয়েকজন নিয়ে নিতেন। এখানে লোকটি দাওয়াত দিয়েছিল রাসুল (সা.)-সহ মোট পাঁচজনকে। রাসুল (সা.) যখন দাওয়াত খাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলেন পথিমধ্যে আরেকজন যোগ হয়ে গেল। আজকাল যেমনিভাবে কোনো বুজুর্গকে দাওয়াত দেওয়া হলে সঙ্গে আরও দুয়েকজন আসেন। যখন তিনি মেজবানের বাড়িতে পৌঁছালেন, মেজবানকে উদ্দেশ করে বললেন, এ ভদ্রলোক আমাদের সঙ্গে চলে এসেছে। তুমি চাইলে তাকে মেহমান হওয়ার অনুমতি দিতে পারো। অন্যথায় সে ফেরত চলে যাবে। মেজবান বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি তাকে ভেতরে আসার অনুমতি দিলাম।’ (বুখারি : ১৯৩৯)

এ হাদিসে রাসুল (সা.) যে শিক্ষাটি দিয়েছেন, তা হলো কারও বাড়িতে দাওয়াত খেতে গেলে যদি তোমার সঙ্গে এমন ব্যক্তিও যায়, যার দাওয়াত নেই তা হলে প্রথমে মেজবানের অনুমতি নিয়ে নেবে, তারপর দাওয়াত খাবে। কেননা এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি বিনা দাওয়াতে চলে আসে, সে যেন চোর হয়ে এলো আর ডাকাত বনে চলে গেল। কিছু এলাকায় অবশ্য এর প্রচলন আছে। অর্থাৎ একজনকে দাওয়াত করা মানেই পুরো পরিবারকে দাওয়াত করা। সেখানে অবশ্য এই বিধান প্রযোজ্য নয়। তাই যেকোনো আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সময় এ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখা প্রত্যেকের কর্তব্য।

ইসলাম যে পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা এসব সূক্ষ্ম দিকই তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। তাই আসুন ইসলামকে জানি। ইসলামকে মানি এবং পার্থিব ও পরকালীন জীবনে মহান আল্লাহর ভালোবাসার পাত্র হয়ে যাই। আল্লাহ সবাইকে তওফিক দিন।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close