প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩, ৪:৪৬ এএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 108
সমুদ্র আমাদের বেঁচে থাকার একটি ভিত্তি। যে বাতাসে আমরা শ্বাস নেই, যে খাবার আমরা গ্রহণ করি তার জোগান দেয় এই সমুদ্র। সমুদ্রে রয়েছে আমাদের জলবায়ু ও আবহাওয়ার নিয়ন্ত্রণ। আমাদের গ্রহের জীববৈচিত্র্যের সর্ববৃহৎ আধার হলো এই সমুদ্র। বিশ্বব্যাপী অগণিত জনগোষ্ঠী, প্রভূত সমৃদ্ধি ও মানব স্বাস্থ্য দীর্ঘস্থায়ী করার ক্ষেত্রে অবদান রাখে সমুদ্রের বহুবিধ সম্পদ। সমুদ্রের ওপর পরম নির্ভরতায় রয়েছে মানব সম্প্রদায়। কিন্তু সমুদ্র কি আমাদের ওপর নির্ভর করতে পারে? আমাদের হওয়া উচিত সমুদ্রের পরম মিত্র। কিন্তু ঠিক এই মুহূর্তে মানব সম্প্রদায় হলো এর শত্রু।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ব সমুদ্র দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এক বাণীতে এমন মন্তব্য করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাণীতে বলেন, মানব-প্রভাবিত জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের গ্রহকে তাপদগ্ধ করে তুলছে, জলবায়ুর চিরাচরিত ধরন ও সমুদ্রস্রোত বাধাগ্রস্ত করছে এবং সমুদ্রতলের পরিবেশব্যবস্থা ও এতে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণীর জীবন বদলে দিচ্ছে। অতিরিক্ত মৎস্য আহরণ, সমুদ্র সম্পদের অতি ব্যবহার ও সমুদ্রে অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে সমুদ্রতলের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। মোট মৎস্য সম্পদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি এমন মাত্রায় আহরিত হচ্ছে যা এই সম্পদের দীর্ঘস্থায়ীত্বের অনুকূল নয়। আর আমরা বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, প্লাস্টিক ও মানুষের মলমূত্র নিক্ষেপ করে সমুদ্র তীরবর্তী জলরাশি দূষিত করে তুলছি। তবে এ বছর বিশ^ সমুদ্র দিবস উদযাপন গতানুগতিক ধারণা ও চর্চায় পরিবর্তনের হাওয়ার বিষয়টি আমাদের মনে করিয়ে দেয়। গত বছর আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ভূমি, সমুদ্র ও তীরবর্তী অঞ্চলের ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ ও সুব্যবস্থাপনার পাশাপাশি মৎস্য চাষের ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদান-সংক্রান্ত একটি মাইলফলক চুক্তি স্বাক্ষর বিষয়ক বৈশ্বিক লক্ষ্য স্থির করেছি। লিসবনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সমুদ্র বিষয়ক সম্মেলনে সমুদ্র-সংক্রান্ত আরও বেশি সংখ্যক ইতিবাচক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে বিশ্ব নেতৃত্ব সম্মত হয়েছেন। প্লাস্টিক দূষণের পরিসমাপ্তির লক্ষ্যে একটি বৈশি^ক আইন দ্বারা সীমাবদ্ধ চুক্তি প্রণয়নের বিষয়টি আলোচনাধীন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, বিগত মার্চ মাসে বিশে^র বিভিন্ন দেশ তাদের জাতীয় এখতিয়ারের বাইরে অবস্থিত এলাকায় সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার-সংক্রান্ত ঐতিহাসিক গভীর সমুদ্র বিষয়ক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এসব উদ্যোগের মাঝে নিহিত বিশাল সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দানের জন্য প্রয়োজন সামষ্টিক প্রতিশ্রুতি। এ সামুদ্রিক সম্পদের সংরক্ষণ ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার-সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ১৪-এর বাস্তবায়ন অনিশ্চয়তার দোলাচলে রয়েছে। আজ এই বিশ^ সমুদ্র দিবসে আসুন আমরা এ সংশ্লিষ্ট কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আসুন, আজ ও প্রতিটি দিন আমরা সমুদ্রকে অগ্রাধিকার দিই।