প্রকাশ: সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১২:২০ এএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 80
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। মোট আয়তনের ৬২ শতাংশ বাংলাদেশের অংশ, আর বাকি অংশ ভারতের। পাশাপাশি দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে সুন্দরবন। এই বনে ব্যাপক প্রাণবৈচিত্র্য বিদ্যমান রয়েছে
১৯৯৭ সালে ইউনেসকো একে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে। তবে ২০১৩ সালে সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকা রামপালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মীয়মাণ কয়লাভিত্তিক মৈত্রী সুপার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনেসকো উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
রোববার সময়ের আলো থেকে জানা যায়, এক দশকে সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সংস্থাটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদের ৪৫তম বর্ধিত সভায় শুক্রবার সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশের ভূমিকায় প্রশংসা করা হয়েছে।
ইউনেসকোর এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংরক্ষণ প্রতিবেদন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থেকে অবমুক্তি লাভ করেছে। বিগত ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ সাতবার এই প্রতিবেদন দিয়েছে।
বাংলাদেশ সুন্দরবন ও এর জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সুন্দরবনের আয়তন বাড়ানোর জন্য কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলের বিস্তৃতি ঘটানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সুন্দরবনের বৃক্ষাদি এবং বন্য প্রাণী রক্ষার জন্য তথা বন অপরাধ দমনের জন্য স্মার্ট পেট্রোলিংসহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশের উন্নয়নে যে পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, সুন্দরবন এবং এর জীববৈচিত্র্য যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টি সবসময় গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। সুন্দরবনের গাছপালা ও বন্য প্রাণী রক্ষার জন্য বনকর্মীদের যুগোপযোগী করে তুলে তাদের সংখ্যা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য এলাকা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। বর্তমানে সুন্দরবনের প্রায় ৫৩ শতাংশ এলাকা অভয়ারণ্যের অন্তর্ভুক্ত। এ সংখ্যা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ইউনেসকোর স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা বলেছেন, এই অর্জন বিগত দেড় দশকে বৈশি^^ক জলবায়ু সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রণী ভূমিকা ও নেতৃত্বের আরও একটি স্বীকৃতি। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশকে তার টেকসই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রকৃতিতে নিঃসরিত কার্বনের পরিমাণ কমানোসহ সহনীয় মাত্রায় রেখে যেকোনো উন্নয়নকাজই টেকসই উন্নয়ন। বাংলাদেশসহ ১৯৩টি দেশ ১৫ বছরমেয়াদি ১৭টি টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রতি ইউনেসকো দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিশ্ব ঐতিহ্য পরিষদের সব সদস্যের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।
সময়ের আলো/আরএস/