প্রকাশ: সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৪:৩৭ এএম (ভিজিট : ২৯৭)
ঈদ পরবর্তী প্রতি মাসেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। যা ডলার সংকটকে আরও উসকে দিচ্ছে। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৫ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার। যা দেশিয় মুদ্রায় ৮ হাজার ১০২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা ধরে।
সে হিসাবে গড়ে প্রতিদিন এসেছে ৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার ডলার প্রবাসী আয়। এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেমিট্যান্স আসতে পারে ১৪৮ কোটি ডলারের মতো। গেল আগস্ট মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। অর্থাৎ এ মাসেও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমতে পারে। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর চেয়ে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠালে ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়া যায়। এ জন্য প্রবাসীরা হুন্ডিতে বেশি ঝুঁকছেন। হুন্ডি বন্ধ করতে না পারলে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও কমে যেতে পারে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি মাসের ১৫ দিনে যে পরিমাণ প্রবাসী আয় দেশে এসেছে, এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৯৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৫ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৯ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। আগস্টে আসে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এক মাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয় কমে ৩৭ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার।
বিদায়ি ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট প্রবাসী আয় আসে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ ডলার। আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট প্রবাসী আয় আসে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ, যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার।
রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রফতানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনাবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।
সময়ের আলো/আরএস/