প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১:২৬ এএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 61
লিবিয়ার দেরনা শহরে যেতে এখন আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগে। বেনগাজি থেকে সড়ক ধরে যেতে যেতে দেখা যায় দুই পাশের জমিগুলো মরিচা ধরা লালচে পানিতে তলিয়ে গেছে। কাছে গেলেই দেখা যায় যানবাহনের গতি ধীর। ভূমি থেকে উপড়ে গেছে তারবাহী বিদ্যুতের পিলার। সড়কের এখানে সেখানে তৈরি হওয়া গর্তে পড়ে বেহাল দশা যানবাহনের। ভূমধ্যসাগর-ঘেঁষা এ শহর যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুপুরী।
দেরনার কাছেই একটি সেতু বন্যার পানিতে পুরোপুরি ভেসে গেছে। সেখানে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে লোকজন। কাছেই সেনাসদস্যদের দেখা গেল প্রতিটি গাড়ির চালক ও যাত্রীকে মাস্ক দিচ্ছেন। মাস্ক পরেই বিকল্প পথে যানবাহন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন চালকরা। কিছু দূর গেলেই বোঝা যায় এর কারণ কী। শহরের বিভিন্ন জায়গায় মরদেহের যে দুর্গন্ধ তার বর্ণনা দেওয়া প্রায় অসম্ভব।
নিশ্বাস নিলে কিছুটা সুয়ারেজের গন্ধ মনে হলেও বাকিটা কেমন তা বর্ণনা করা কষ্টসাধ্য। সে সময় গা গুলিয়ে উঠবে আপনার, বিশেষ করে যদি কেউ বন্দরের দিকে যায় তখন। উদ্ধারকারী দলগুলোর সদস্যরা বিবিসির সাংবাদিককে বলেছেন, এখনও সেখানে যত্রতত্র পাওয়া যাচ্ছে মরদেহ। তিনি যে দিন দেরনা গিয়েছিলেন, সে দিনও তিনটি মরদেহ পাওয়া গেছে। জোয়ারে ভেসে এসে আটকা পড়েছিল বন্যায় ভেসে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্যে।
বিবিসির বর্ণনা অনুযায়ী, খেলনার মতো যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে গাড়ি। মসজিদের দেয়াল উড়ে গেছে। আবার কোথাও বা একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। মোটা কংক্রিটের দেয়ালের কোনো চিহ্ন নেই। শিকড় বেরিয়ে এসেছে গাছপালার। এখানে শুধু কয়েক হাজার মানুষ পানিতে ভেসে যায়নি, ভেসে গেছে তাদের ঘরবাড়ি, তাদের জীবন। মানবতা যেন ধুয়েমুছে গেছে শহরের এই অংশ থেকে।
সময়ের আলো/আরএস/