ই-পেপার বিজ্ঞাপনের তালিকা সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০ আশ্বিন ১৪৩০
ই-পেপার সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
https://www.shomoyeralo.com/ad/Amin-Mohammad-City-(Online).jpg

https://www.shomoyeralo.com/ad/SA-Live-Update.jpg
বেহাল সড়কে ১৫ গ্রামের ভোগান্তি
লতা মন্ডল, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ)
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১০:২৪ এএম | অনলাইন সংস্করণ  Count : 60

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের কুচিয়ামোড়া-পাথরঘাটা সড়ক। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষকে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয় এ সড়ক ধরে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে ভরে গিয়ে বেহাল হয়ে পড়েছে পুরো সড়ক। বিশেষ করে কুচিয়ামোড়া এলাকার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে রামকৃষ্ণদী গ্রাম পর্যন্ত সড়কটির চার কিলোমিটার অংশ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলতে গেছে। ভাঙা সড়কে স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না যানবাহন। বিশেষ করে তিন চাকার ছোটখাটো গাড়িগুলোর জন্য সড়কে দীর্ঘ এ অংশটি যেন সাক্ষাৎ মরণফাঁদ। সামান্য বৃষ্টিতে জলে ভরে যায় বড় বড় গর্তগুলো। তখন গভীরতা বোঝা না যাওয়ায় প্রায়ই উল্টে যায় হাল্কা যানগুলো; ঘটে যায় দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে, দীর্ঘদিন ধরে তারা সড়কটি মেরামতের কাজ চালিয়ে গেলেও আশপাশে বাড়িঘর থাকায় সৃষ্টি হচ্ছে এ জলাবদ্ধতা। তা ছাড়া বড় একটি প্রকল্পের আবেদন করা হলেও তা অনুমোদন না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় জনসাধারণকে। 

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কেয়াইন, বাসাইল, লতব্দী ও বালুচর-এ ৪টি ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে এ সড়কে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ৪ কিলোমিটার অংশ জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে বহুদিন ধরে। উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়ক এটি। কিন্তু রাস্তার বেহাল দশার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। 
এলাকাবাসী ও পথচারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহালেও জরাজীর্ণ এ সড়কটি সংস্কারের কোনো পদক্ষপে নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। খানাখন্দ আর গর্ত গুনে যেন শেষ করা যায় না। প্রতিদিনই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থী, পথচারী ও কৃষকরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে পানি জমে যায়। কখনো কখনো পায়ে হেঁটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। বিশেষ করে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সময়মতো বাজারজাত করতে না পারায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা। 

জানা যায়, অঞ্চলটির অধিকাংশ মানুষেরই আয় রোজগার কৃষিনির্ভর। মৌসুমি বিভিন্ন সবজিসহ প্রায় সব ধরনের ফসলের চাষাবাদ হয় এ এলাকায়। এসব ফসল এলাকার কৃষকরা ঢাকার শ্যামবাজার, যাত্রাবাড়ী ও কারওয়ান বাজার আড়তে বিক্রি করেন। কিন্তু রাস্তাটির অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে নিজেদের উৎপাদিত ফসল ঠিকমতো পরিবহন করতে পারছেন না তারা। সময়মতো পৌঁছাতে না পারায় ও পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা।

বালুচর ইউনিয়নের গুডাউন বাজার এলাকার সবজি ব্যবসায়ী নীলু বেপারী বলেন, রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে সময়মতো মালামাল আড়তে পৌঁছাতে পারি না, খারাপ রাস্তার কারণে ভাড়া দিতে হয় বেশি। লাভ তো দূরের কথা, অনেক সময় চালানও উঠে আসে না। 

সড়কটির প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হচ্ছে শত শত শিক্ষার্থীর। কখনো কখনো জমে থাকা পানির নিচে খানাখন্দে পড়ে গিয়ে জামা-কাপড় ভিজিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীকে। এ কারণে বর্ষাকালে শিক্ষার্থী উপস্থিতি অনেক কম দেখা যায় আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। 

পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক সুমা খান বলেন, সড়ক দিয়ে দিনে ও রাতে মাহেন্দ্র, ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচল করে। যে কারণে অল্প সময়ে সড়কগুলো নষ্ট হচ্ছে। তা ছাড়া সড়কের পাশে ড্রেন না থাকায় পানি জমে রাস্তাগুলো নষ্ট হচ্ছে। এসব সড়ক এখনই মেরামত করা প্রয়োজন। না হলে আরও খারাপ অবস্থা হবে। 

কুচিয়ামোড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম সর্দার বলেন, এই রাস্তার দুর্ভোগের কথা বলে আর শেষ করা যায় না। আমার স্কুলের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এই রাস্তায় আসা-যাওয়া করে। সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই বেশিরভাগ শিক্ষার্থী খারাপ রাস্তার জন্য আসতে পারে না। বর্তমানে যে অবস্থা হয়েছে অটোরিকশাতেও আসা সম্ভব না।
 
সড়কটির বিষয়ে কথা হলে কেয়াইন ইউপি চেয়ারম্যান মো. আশ্রাফ আলী ও বাসাইল ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। রাস্তার বিষয়টি আমার প্রশাসনকে জানিয়েছি, আশা করছি শিগগিরই এর সমাধান হবে। 

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, রাস্তাটির সংস্কারের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু রাস্তার দুই পাশে বাড়িঘর থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। তবে রাস্তাটি প্রশস্ত করার জন্য বড় প্রকল্পের আবেদন করেছি। এখনও অনুমোদন হয়নি। চেষ্টা করছি, প্রকল্পের অনুমোদন পেলেই খুব দ্রুত এর কাজ হবে।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com