প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১০:২৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 82
প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেট সেবার গুরুত্ব বাড়ছে। ব্যক্তিগত থেকে বাণিজ্যিক অনেক ধরনের কাজেই নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার হচ্ছে। প্রায় প্রতিটি দেশই নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ইন্টারনেট সেবার মানোন্নয়নের চেষ্টা করছে। বিশে^র অন্যান্য এলাকার মতো এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যেও ইন্টারনেট সেবার মানোন্নয়নের প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বছরের হিসাবে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর ইন্টারনেট সেবাগ্রহীতার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু আমাদের দেশের অপারেটরদের নানা শর্তের জাল, স্বল্প মেয়াদ আর অসংখ্য প্যাকেজের অরাজকতায় মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বিভ্রান্তিতে পড়েছে। তাই গ্রাহকদের সুবিধা বিবেচনা করে নতুন ডাটা প্যাকেজ নির্ধারণ করে নির্দেশিকা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
সোমবার সময়ের আলো থেকে জানা যায়, নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, ৩ ও ১৫ দিন মেয়াদের ডাটা প্যাকেজ বাতিল করে সর্বনিস্ন মেয়াদ ৭ দিন, ৩০ দিন এবং আনলিমিটেড প্যাকেজ রাখা হয়েছে। তবে ব্যবহারকারীরা এখন ৩ দিনের ডাটা প্যাকেজ ৭ দিন ব্যবহার করতে পারবেন। এ ছাড়া ডাটা প্যাকেজের সংখ্যা ৯৫ থেকে কমিয়ে ৪০টি করা হয়েছে। আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ওই নির্দেশিকা কার্যকর হবে।
এর আগে বিটিআরসি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার দাম (ঊর্ধ্বসীমা) বেঁধে দেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারা দেশে এক রেটে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন গ্রাহকরা। মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক ব্রডব্যান্ডের চেয়ে অনেক বেশি। অথচ মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকদের জন্য উদ্যোগটি আটকে ছিল।
২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে ঘোষণা করা হয় যে, ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ পরিণত হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল স্তম্ভ মানব সম্পদ উন্নয়ন, ইন্টারনেট সেবা, ই-প্রশাসন ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প খাত গড়ে তোলা। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু ইন্টারনেট সেবার নানা অরাজকতায় অনেক অগ্রগতি কাজে লাগছে না। অনেক অবকাঠামোর পরিপূর্ণ ব্যবহারও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
তবে শুধু ডাটা প্যাকেজের দাম নির্ধারণই মূল কাজ নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেবার মান বেঁধে দিয়ে যে বিধিমালা বিটিআরসি জারি করেছিল, সেটা সব অপারেটর যথাযথভাবে অনুসরণ করে গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করার দায়ও এ নিয়ন্ত্রক সংস্থারই। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আরও গতিশীল, উদ্যোগী ও উদ্যমী ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি বিটিআরসিকে ব্যবহারকারীবান্ধব ভূমিকাও পালন করতে হবে।
করোনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বেড়েছে। আর প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রয়োজন, যা মোবাইল অপারেটররা নিশ্চিত করতে পারছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার যেমন দায় আছে, তেমনি মোবাইল অপারেটরদের আগ্রাসী ব্যবসার মনোভাব ও উদাসীনতাও রয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি, ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে ইন্টারনেট সেবার মান দ্রুত উন্নত করার লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও মোবাইল অপারেটররা আরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে।
সময়ের আলো/জেডআই