কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ষষ্ঠ প্রভোস্ট হিসেবে ৫ সেপ্টেম্বর যোগ দেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তোফায়েল হোসেন মজুমদার। তিনি প্রভোস্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে হলটির দায়িত্ব পেয়েছেন। দায়িত্ব নিয়েই ডাইনিংয়ের খাবারের মান বৃদ্ধি, গণরুম বিলুপ্তি, মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি হলের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন। হল নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন সময়ের আলোর কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিনিধি এবিএস ফরহাদ
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট নিযুক্ত হওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন।
প্রভোস্ট : আপনাকে ধন্যবাদ।
প্রশ্ন : প্রায় ৮ বছর পর দ্বিতীয় মেয়াদে বঙ্গবন্ধু হলের দায়িত্ব পেয়ে কী কী পরিবর্তন দেখছেন?
প্রভোস্ট : হল বড় হয়েছে, শিক্ষার্থী বেড়েছে। আসলে আমি এমন দায়িত্ব এখন আর এনজয় করি না। আমি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। তবু উপাচার্য প্রফেসর ড. এএফএম আবদুল মঈন স্যার আমাকে দায়িত্ব নিতে বলেছেন তাই নেওয়া। উপাচার্যের ভিশনকে এগিয়ে নিতে আমার জায়গা থেকে কাজ করব।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু হল নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
প্রভোস্ট : হলের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা আমার প্রথম কাজ। আমি হলের আবাসিক শিক্ষকদের সঙ্গে মিটিং করেছি, সবাইকে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছি। আমাদের আরও লোকবল প্রয়োজন, সেজন্য উপাচার্য স্যারকে আমি জানাবো। সবার সহযোগিতা থাকলে আমরা হলে একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে পারব।
প্রশ্ন : হলে গণরুম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বঙ্গবন্ধু হলে কি তাহলে গণরুম থাকছে না?
প্রভোস্ট : সব হলের প্রভোস্টরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যারা হলে থাকবে তাদের অবশ্যই আবাসিক হতে হবে। অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবে না। এছাড়া স্নাতকোত্তরের ফল প্রকাশ হলে সিট বাতিল হয়ে যাবে। হলে নতুন করে সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে, সে অনুযায়ী শিক্ষার্থী হলে উঠবে। হলে কোনো গণরুম থাকবে না। যারা গণরুমে আছে তাদের বলব বাইরে মেস বা বাসার ব্যবস্থা করতে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হল ছেড়ে দিতে হবে তাদের। আমরা সিট বরাদ্দ দিলে আবেদন করে পুনরায় হলে উঠতে পারবে। সেখানে মেধা, সিনিয়র-জুনিয়র, দূরত্ব ও আর্থিক বিবেচনায় সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে।
প্রশ্ন : হলের ডাইনিংয়ের খাবারের মান বৃদ্ধিতে কী পরিকল্পনা রয়েছে?
প্রভোস্ট : ইতিমধ্যে আবাসিক শিক্ষক ও হলের কর্মকর্তাসহ ডাইনিং ম্যানেজারদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। হলের খাবারের মান বৃদ্ধিতে আমি নিজেই প্রতি সপ্তাহে তিন-চার বেলা খাব। আমরা হল প্রশাসন থেকে এবার ডাইনিং পরিচালনা করব। এতদিন শিক্ষার্থীরা ডাইনিং পরিচালনা করে আসছিল। আমি আবাসিক শিক্ষকদেরও আহ্বান জানিয়েছি হলের ডাইনিংয়ে খেতে। হলে ফ্রি কেউই খেতে পারবে না, আমি এটা বন্ধ করব।
প্রশ্ন : হলে মাদক বন্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন?
প্রভোস্ট : হলের কোন কোন রুমে বা কোথায় মাদক সেবন করা হয় তা আমার এখনো জানা নেই। তবে আমি জেনেছি ছাদে ও রুমে বসে কিছু শিক্ষার্থী মাদক সেবন করে। আমি মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কেউ যদি মাদকসহ ধরা পড়ে তাহলে সে আর হলে থাকতে পারবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
প্রশ্ন : আবাসিক শিক্ষকরা হলে আসেন না, শিক্ষার্থীরাও চেনেন না তাদের। এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবেন?
প্রভোস্ট : প্রথমেই আমি ডিউটি ভাগ করে দিয়েছি। সপ্তাহে প্রতিদিন কোনো না কোনো হাউজ টিউটর হলে থাকবেন। তবে আমাদের হলে আরও কিছু আবাসিক শিক্ষকের প্রয়োজন আছে।
সময়ের আলো/জেডআই