ই-পেপার বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৩
বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৩

মসজিদে ইবাদত হোক অবারিত
মীযান মুহাম্মদ হাসান
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১:৪১ এএম  (ভিজিট : ২১৬)
নামাজ মুসলমানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ইসলামে যার গুরুত্ব অনেক বেশি। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে নামাজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করার ফজিলতও অনেক। কিন্তু যারা জামাতে নামাজ আদায়ে অংশগ্রহণ করতে পারেননি ব্যস্ততার কারণে কিংবা ভ্রমণজনিত কারণে জামাত শেষ হওয়ার পর মসজিদে এসেছেন একাকী নামাজ আদায় করবেন বলে; তারা এসে দেখেন মসজিদ তালাবদ্ধ। তখন বিপদে পড়ে যান। শহর এলাকার প্রায় মসজিদের চিত্রই এমন। অধিকাংশ মসজিদ নামাজের পরেই বন্ধ হয়ে যায়। 

জামাতের পর যারা আসেন, তারা নামাজ পড়তে পারেন না। তাই হয়তো কখনো সে ওয়াক্তের নামাজ কাজা হয়ে যায়। আবার শহরের মসজিদগুলোতে ফরজ নামাজের জামাতের পরেই মসজিদে বা বারান্দায় কিছু মানুষ একটু আরাম ও বিশ্রাম করতে চান। এই বিশ্রাম গ্রহণ করাটাও দোষের কিছু নয়। বিশেষত রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ইত্যাদি এলাকার মসজিদগুলোতে মুসাফিরদের জন্য একটু বসার স্থান করে দেওয়া উচিত, যাতে করে একজন মুসল্লি আরামে ওজু ইস্তিঞ্জা সেরে নামাজ পড়তে পারেন। নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষাও করতে পারেন।

অনেক মসজিদে নামাজের পর এসি বা ফ্যানের নিচে কয়েক মিনিট বসাও যায় না। দায়িত্বশীল মুয়াজ্জিন বা কেউ এসে বন্ধ করে দেন। এতে করে মুসাফিরদের কষ্ট হয়। ক্লান্ত-শ্রান্ত মুসাফির পথিকও একজন মেহমান। তারও কিছু হক রয়েছে। হ্যাঁ, কিছু দুষ্ট লোক আছেন, যারা মসজিদের বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট করেন। হারানো যায় অনেক জিনিসপত্র। অবশ্যই নিরাপত্তার জন্য যথাসময়ে মসজিদ তালাবদ্ধ করে দেওয়া উচিত। তবে দায়িত্বশীলদের জন্য করণীয় হচ্ছে, তারা প্রতি নামাজের পর কিছু সময় মসজিদ বা বারান্দা খোলা রাখবেন, পথচারী মুসাফিরদের নামাজ আদায় ও বিশ্রামের জন্য। সম্মানিত মসজিদ কমিটিরও এ বিষয়গুলো বোঝা উচিত। মসজিদে আগত সব মুসল্লি যাতে আরামে একটু সময় বসতে পারেন। নামাজ ও জরুরি প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন। প্রফুল্লচিত্তে ইবাদত করতে পারেন। এই ব্যবস্থাটুকু অন্তত রাখা দরকার।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘পুণ্য রয়েছে তোমাদের জন্য, যারা অর্থের প্রতি ভালোবাসা সত্ত্বেও আত্মীয় স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত-মুসাফির, ভিক্ষুক ও দাসমুক্তির জন্য দান করেন’ (সুরা বাকারা : ১৭৭)। এ আয়াতে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে মুসাফিরদের জন্যও খরচ করতে বলা হয়েছে। আমরা যদি পথচারী মুসাফির ভাইদের জন্য অন্তত এ খেদমতটুকু করতে পারি। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদের দ্বিগুণ প্রতিদান দান করবেন। এ ছাড়া হাদিসে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তায়ালা দৃষ্টিপাত করবেন না। পবিত্র করবেন না মর্মে এমন এক ব্যক্তির কথা বর্ণিত হয়েছে, যার কাছে প্রয়োজন অতিরিক্ত পানি আছে। অথচ সে তা কোনো মুসাফিরকে দিতে অস্বীকার করে। (বুখারি : ২৩৫৮)।

এ হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, মুসাফিরের হক আদায় করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অন্যথা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের পথচারী মুসাফিরদের সেবায় আমাদের উত্তম অর্থ সম্পদ ব্যয় করার তওফিক দান করুন। মসজিদে ইবাদতের পরিবেশ বজায় রাখার তওফিক দান করুন।

খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com