প্রকাশ: সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৪:১৬ এএম (ভিজিট : ৭৪৯)
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বিতীয় কিস্তি পেতে সরকার এখন মরিয়া। কারণ, ডলার সংকট মেটাতে এখন পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে এই ঋণের ওপর। তবে আইএমএফ তাদের শর্ত পূরণ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে চায়। আর সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিনিধি দল আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রটি জানায়, আইএমএফের শর্ত পূরণের অগ্রগতি নিয়ে ইতিমধ্যে গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয় বৈঠক করেছে। যেখানে অর্থ বিভাগ ছাড়াও ব্যাংকিং বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইএমএফের শর্ত হিসেবে ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাতে ঋণখেলাপি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈদেশিক রির্জাভের গণনা পরিবর্তন করেছে। এ ছাড়াও সুদহারের ক্যাপ তুলে নিয়েছে। এখানে তাদের শর্ত অনেকাংশে পূরণ হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে আইএমএফের শর্ত ছিল, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতি তুলে নেওয়া। এটি সম্পূর্ণ না হলেও আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে তেমন কোনো সন্তোষজনক জবাব এখনও তৈরি করতে পারেনি এনবিআর। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য আইএমএফের জোর তাগিদ ছিল। সেই তাগিদ থেকে ত্রিপক্ষীয় আলোচনার সূত্রপাত শুরু করেছে এনবিআর।
রাজস্ব প্রশাসনে সংস্কার এখনও পুরোপুরিভাবে না হলেও এটি চলমান রয়েছে বলে অবহিত করবে প্রতিনিধি দলকে। এভাবে সবদিকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে অর্থ মন্ত্রণালয়। একইভাবে বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য আইএমএফের শর্ত এখনও পুরোপুরি পূরণ হয়নি। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতি তিন মাস অন্তর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রাখছে বলে জানা গেছে। আর জ্বালানি খাতে গ্যাসের অপচয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আইএমএফের বিভিন্ন শর্ত নিয়ে এখন আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য মোট ৩৮টি শর্ত রয়েছে। সেসব শর্তের মধ্যে সব এখনই পূরণ করা সম্ভব হবে কি না তা যুক্তি তুলে ধরা হবে প্রতিনিধি দলের কাছে। আর্থিক খাতের ঝুঁকি নিয়ে আইএমএফ যে শর্ত দিয়েছে তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হবে বলে আশ্বাসের মধ্যে আপাতত থাকতে চায় অর্থ মন্ত্রণালয়।
এদিকে স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের লোকসান কমাতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তার একটি খতিয়ান তৈরি করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরই ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকটি চিনিকল বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোকসান কীভাবে কমানো যায় তার একটি কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হতে পারে।
আইএমএফের প্রথম কিস্তি ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার পর এখনও দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়া যায়নি। আর এই দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার কথা রয়েছে আগামী নভেম্বর মাসে।