অঘটন, বিতর্ক, নাটকীয়তা ভরপুর এবং রেকর্ডের উৎসবমুখর বিশ্বকাপ এসে পৌঁছেছে শেষাঙ্কে। আর মাত্র একটি ম্যাচ। রাত পোহালেই শিরোপার লড়াই। এবারের ঘটনাবহুল বিশ্বকাপে এখন অপেক্ষা ফাইনাল রোমাঞ্চের।
গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড এবার জায়গা করে নিতে পারেনি সেমিফাইনালেই। আবার ঐতিহাসিক ট্র্যাজেডিকে সঙ্গী করে ফাইনালের আগেই ছিটকে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। রবিন লিগে প্রথম দুই ম্যাচ হারা অস্ট্রেলিয়া সব বাধা পেরিয়ে উঠে এসেছে ফাইনালে। টানা ১০ জয়ে অপরাজিত থাকার গৌরব নিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল অজিরা। আর এবারের আসরের সবচেয়ে দাপুটে দল ভারত। ঘরের মাঠ, অভ্যস্ত কন্ডিশন, সঙ্গে লাখো দর্শকের সমর্থন; বিপরীতে ইস্পাত পাথর মানসিকতার অজিরা। ক্রিকেটে পেশাদারিত্বের শেষ কথাই যে অস্ট্রেলিয়া! একটা ভিন্ন আমেজের ফাইনালের আবহ পুরো ক্রিকেট দুনিয়াজুড়েই। মস্তিষ্ক বনাম হৃদয়, ক্রিকেটের এই দুই বিপরীতমুখী ঘরানার শিরোপার লড়াই এবারের ফাইনালে যোগ করেছে ভিন্নমাত্রা।
টি-টোয়েন্টির প্রভাব এবারের বিশ্বকাপের সর্বাঙ্গে। একাধিক চারশোর্ধ্ব রানের ইনিংস, সাড়ে ৩০০ রানও নিরাপদ না থাকা, বোলারদের জন্য এই বিশ্বকাপ হয়ে ওঠে খুব বড় এক চ্যালেঞ্জ। তবে ব্যাটারদের এই রাজত্বকে স্থায়ী হতে দেননি ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি। প্রথম চার ম্যাচ দলে সুযোগ পাননি। কিন্তু আসরের মাঝামাঝিতে সেরা একাদশে জায়গা পেয়েই বিশ্বকাপের সব আলো নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন শামি। অন্যদের চেয়ে চার ম্যাচ কম খেলেই চলতি আসরের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এখন শামি। এবারের আসরে নতুন রং ছড়াচ্ছেন শামি। সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন বিরাট কোহলি, ছক্কার ঝড় তুলে রেকর্ড বইয়ে বড় ঝাঁকি দিয়েছেন রোহিত শর্মা। কিন্তু ম্যাচের নায়ক বনে যাচ্ছেন পেসার শামি। ছয় ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই ম্যাচসেরা এই ভারতীয় পেসার।
অস্ট্রেলিয়ার জন্য পরিস্থিতি, কন্ডিশন এসব কোনো কিছুই যে বিবেচ্য নয়, ঐতিহাসিক সেই সত্যটিকেই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে প্যাট কামিন্স ব্রিগেড। রবিন লিগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে জয়ের জন্য ২৯২ রানের টার্গেটের সামনে একটা পর্যায়ে অজিরা সপ্তম উইকেট হারায় মাত্র ৯১ রানে। এখান থেকে অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেট জুটিতে ২০২ রান যোগ করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও কামিন্স। ম্যাচের পর কামিন্স বলেন, এটাই প্রমাণ করে যেকোনো পরিস্থিতি থেকে আমরা জিততে পারি।
এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ভারত অজেয় আর অজিরা প্রমাণ করে দিয়েছে প্রতিকূল অবস্থায়ও তারা জিততে জানে। এমন দুদলের শিরোপার দ্বৈরথ নতুন থ্রিলারের জন্ম দেবে, সেই প্রত্যাশায় এখন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
সময়ের আলো/আরএস/