ই-পেপার মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর ২০২৩
মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর ২০২৩

শিরোপাযুদ্ধ আজ
নাজমুল হক তপন
প্রকাশ: রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৩, ৬:৪১ এএম  (ভিজিট : ৩৯৬)
ফাইনালে ওঠার পথে শতভাগ জয়ের রেকর্ড রোহিত শর্মাদের। পক্ষান্তরে এবারের আসরে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের। প্রথম দুই ম্যাচেই হারের লজ্জায় ডোবে দলটি। কিন্তু ধাক্কা সামলে নিয়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে বিশ্বকাপে সবসময়ের ফেবারিট অজিরা। টানা আট জয়ের স্বাদ নিয়ে ফাইনালে পৌঁছে তারা

ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জিততে হলে ভারতকে কী করতে হবে এ নিয়ে অনেকেই দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মত। এ ক্ষেত্রে রোহিত শর্মাদের জন্য সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে ভারত পুরাণের শিক্ষা। বেহুলার বাসরঘরের চেয়েও নিñিদ্র থাকতে হবে স্বাগতিকদের। খেলতে হবে নিখুঁত ক্রিকেট। শিরোপার লড়াইয়ে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ভারত। রোববার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অজিদের সঙ্গে মহাদ্বৈরথে নামছে টুর্নামেন্ট ফেবারিট ভারত। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে।

ফাইনালে ওঠার পথে শতভাগ জয়ের রেকর্ড রোহিত শর্মাদের। এবারের আসরে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। রবিন লিগে প্রথম দুই ম্যাচেই হারের লজ্জায় ডোবে দলটি। কিন্তু এই জোড়া ধাক্কা সামলে নিয়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে বিশ্বকাপে সবসময়ের ফেবারিট অজিরা। টানা আট জয়ের স্বাদ নিয়ে ফাইনালে পৌঁছে তারা।
ইতিহাস অজিদের পক্ষে। ক্রিকেটে সবচেয়ে সফল তারা। আর এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে দাপুটে ক্রিকেট খেলছে ভারত। রবিন লিগে এই অস্ট্রেলিয়াকে তারা হারিয়েছে ৬ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। কিন্তু গ্রুপপর্বের সঙ্গে নকআউটপর্বের অজিদের পার্থক্য আকাশ-পাতাল। আর যদি সেটা ফাইনাল হয়, তা হলে ইস্পাত পাথর মানসিকতার অজিরা কতটা ভয়ংকর হয়ে ওঠে সেটা আর নতুন করে না বললেও চলে। কেননা ক্রিকেটে পেশাদারিত্বের শেষ কথাই তো অস্ট্রেলিয়া!

একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে শিরোপাযুদ্ধে নামছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া। টি-টোয়েন্টি প্রভাবে বদলে গেছে ওয়ানডে ক্রিকেটের ধরন। এবারের বিশ্বকাপে একাধিক চারশোর্ধ্ব রানের ইনিংস, সাড়ে তিনশ রানও নিরাপদ না থাকা, ছক্কার বিশ্বরেকর্ড এসবই নির্ধারণ করে দিচ্ছে নতুন ঘরানার ৫০ ওভারের ক্রিকেটের গতিপথ। বোলারদের জন্য এই বিশ্বকাপ হয়ে ওঠে খুব বড় এক চ্যালেঞ্জ। আর এই নতুনের রাজদণ্ড কার হাতে শোভা পাবে, এটাই এখন টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড।
ভারত-অস্ট্রেলিয়াকে ঘিরে যে ঐতিহাসিক বৈরিতা ফিরে এসেছে অতীতের সেই ঝাঁজ। কথার যুদ্ধে জড়িয়েছেন দুই দলের দুই সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি ও স্টিভ ওয়াহ। দুই দশক আগে এই দুজনের লড়াই ক্রিকেটকে দিয়েছিল বৈচিত্র্যতা। এবারও মুখ খুলেছেন তারা। ১৯৯৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ বলেছেন, এই অস্ট্রেলিয়াকে দেখে আমার দুর্দান্ত মনে হচ্ছে। বিশ্বকাপ জিতলে কামিন্সের মুকুটে নতুন পালক যোগ হবে। একই সঙ্গে একটা উত্তরাধিকার রেখে যাবে। আর এটা হারাবে না। কিংবদন্তি অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, সেই চিরন্তন কথাটি যে কামিন্সরা তাদের উত্তরসূরি। আর ট্রফি হারানোটা তাদের মনস্তত্ত্বে নেই।

স্টিভ ওয়াহর প্রায় অজেয় ওঠা দলটির প্রধান চ্যালেঞ্জার ছিল সৌরভের ভারত। ফাইনালে রোহিতদের শুভকামনা জানিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল এই অধিনায়ক বলেছেন, ভারত এখন বিধ্বংসী ছন্দে আছে। ফাইনালের জন্য রোহিতদের প্রতি অনেক শুভেচ্ছা থাকল। এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দারুণ খেলেছে। এখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিততে হবে। যেভাবে রোহিতরা খেলছে সেভাবেই যদি ফাইনালে খেলতে পারে তা হলে ট্রফি না জেতার কোনো কারণ দেখছি না। তবে দল হিসেবে অস্ট্রেলিয়াও ভালো। তাই ভারতকে সাবধানে থাকতে হবে।

মস্তিষ্ক বনাম হৃদয়, পেশাদারিত্ব বনাম আবেগ, এই কথাগুলো এখন ভেসে বেড়াচ্ছে ক্রিকেট দুনিয়াজুড়ে। ক্রিকেটের এই দুই বিপরীতমুখী ঘরানার শিরোপার লড়াই, এবারের ফাইনালের আমেজে যোগ করেছে উচ্চমাত্রা। ঘুরে-ফিরে আসছে ইতিহাসের সেসব বাঁক বদলে এই দুই দলের অর্জনের বিষয়গুলো। অ্যাশেজের যে প্রবল পরাক্রম অস্ট্রেলিয়া তার শুরুটা হয়েছিল উপমহাদেশ তথা ভারত থেকেই। ক্রিকেটের উদ্যান ইডেন গার্ডেনের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া।  অবশ্য উপমহাদেশের দ্বিতীয় আয়োজনে ছিয়ানব্বইয়ের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে রানার্সআপ ট্রফি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় অজিদের। ২০১১ সালের উপমহাদেশীয় আসরে কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের কাছে হারে অস্ট্রেলিয়া। নকআউট স্পেশালিস্ট হলেও এই অঞ্চলে উপমহাদেশের দলগুলোর বিপক্ষে অজিদের নকআউট পারফরম্যান্স ততটা উজ্জ্বল নয়। ২০১১ সালে উপমহাদেশের সবশেষ আসরে দাপটের সঙ্গেই শিরোপা জিতেছে ভারত।

ঘরের মাঠে সোয়া লক্ষাধিক মানুষের সমর্থন দুর্দান্ত ফর্ম। সবকিছু মিলিয়ে ভারতীয় শিবিরে সুবাতাস। উচ্ছ্বাস-আবেগে ভাসছে কোটি কোটি মানুষ। তবে জিততে না পারলে সবকিছুই চুপসে যাবে বায়ুশূন্য বেলুনের মতো। আর সেই কথাটিই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। শনিবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে কামিন্স বলেছেন, বিশাল দর্শকদের চুপ করিয়ে দেওয়ার মতো তৃপ্তি খেলাধুলায় আর হয় না।

দুই বিপরীত ঘরানার দুই শিরোপার দ্বৈরথ, ছড়াচ্ছে ভিন্ন সুর। হার্ট-হেডের এই লড়াইয়ে কে কাকে ছাপিয়ে ওঠে এখন তারই রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo[at]gmail.com