ই-পেপার বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৩
বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৩

মিধিলিতে উজাড় উপকূলের কৃষি, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রণোদনা দিন
প্রকাশ: সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩, ১২:৩৪ এএম  (ভিজিট : ১৪৪)
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৩৬ শতাংশ বাস করে উপকূলীয় অঞ্চলে। দেশের ৭১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলীয় অঞ্চলের মোট ১৯টি জেলা ও ১৪৭টি উপজেলা এর অংশ। জাতীয় অর্থনীতিতে উপকূল অঞ্চল জিডিপিতে কমবেশি প্রায় ২৫ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশের খাদ্য চাহিদার উল্লেখযোগ্য অংশই বর্তমানে উৎপাদিত হচ্ছে উপকূলে। সমুদ্রের মৎস্য সেক্টর পুরোপুরি উপকূলকেন্দ্রিক। উপকূলের জনশক্তি দেশের অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখছে। অথচ প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চল প্রকৃতির বিরূপ আচরণের প্রথম ও প্রত্যক্ষ শিকার। 

উপকূলীয় অঞ্চলের জীবন-জীবিকা প্রাথমিকভাবে নির্ভর করে মাছ, কৃষি, বন, স্থানীয় পরিবহন, লবণ ইত্যাদির ওপর। এ দেশের উপকূলের জনগোষ্ঠী প্রতি বছর নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন-সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা ইত্যাদির মুখোমুখি হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদীর গতি-প্রকৃতি এবং ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের প্রকৃতিও পরিবর্তিত হচ্ছে। 
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনীতির রিপোর্ট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার।

রোববার সময়ের আলো থেকে জানা যায়, আমন ধান এবং সবজির আবাদে সাগরপারের গ্রামগুলোতে মাঠের পর মাঠ যখন সবুজ হয়ে উঠেছিল, ঠিক সে সময় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে শুক্রবার বিকালে আঘাত হানে দেশের উপকূলগুলোতে। ক্রমশ দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে হতে ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড়টি। কয়েক ঘণ্টার তাণ্ডবে উজাড় করে যায় উপকূলীয় লোকালয়, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি। 

বিচ্ছিন্নভাবে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে কয়েকটি জায়গায়। আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এই পরিস্থিতি অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে কৃষকদের। 

উপকূলের প্রায় ৫ কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত বহুমুখী দুর্যোগের সঙ্গে বাস করেন। দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ যথেষ্ট সক্ষমতা অর্জন করেছে এবং বহির্বিশ্বে তা অনেকটা রোল মডেল হিসেবেও বিবেচিত। কিন্তু মিধিলি ফসলসহ জনজীবনে যে অভিঘাত করেছে, তা বিদ্যমান কঠিন বাস্তবতায় বাড়তি চাপ সৃষ্টি করল তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার মতো যে দূরদর্শী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তা অব্যাহত রাখতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের কথা ভাবতে হবে। সংরক্ষিত ও সমৃদ্ধ উপকূল গড়ে উঠলে উন্নতি হবে মানুষের জীবনমানের। 

প্রাকৃতিক দুর্যোগে অবকাঠামোগত ক্ষতি অনেকাংশে বেশি হয়ে থাকে। আর তা যদি ফসলের মৌসুমে হয় তা হলে এর চাপ জনজীবনে আরও বেশি পড়ে। যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করি, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো যোগাযোগ অবকাঠামো দ্রুত সংস্কারের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে সহায়তা নিয়ে দাঁড়াবে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com