ই-পেপার মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর ২০২৩
মঙ্গলবার ২৮ নভেম্বর ২০২৩

ঠিক সময়ে নামাজ আদায়ের উপকার
হুমায়ুন কবীর
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৩, ২:৫৪ এএম  (ভিজিট : ৩১৪)
মুসলমানদের জন্য দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ এবং সেটা সময়মতো পড়াও ফরজ। নামাজের যখন ওয়াক্ত হবে তখনই নামাজ পড়তে হবে। নামাজের ওয়াক্ত গড়িয়ে শেষ হয়ে গেলে পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। কুরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা নামাজ কায়েম করার হুকুম দিয়েছেন। জানার বিষয় হলো, নামাজ কায়েম করার অর্থ কী? মুফাসসিরগণ নামাজ কায়েমের ব্যাপারে অনেকগুলো মতামত ব্যক্ত করেছেন। তার মধ্যে একটা মত হলো, তিনটি বিষয় একত্রিত হলেই নামাজ কায়েম হয়- ১. সুন্নত মোতাবেক অর্থাৎ নবীজি যেভাবে নামাজ পড়েছেন সেভাবে নামাজ পড়া। ২. সময়মতো নামাজ পড়া। ৩. খুশু-খুজুর সঙ্গে নামাজ পড়া (তাফসিরে জালালাইন)। এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে, আল্লাহর নামাজ কায়েমের নির্দেশ মানতে হলে ওয়াক্তমতো নামাজ পড়তে হবে। হাদিসে নবীজি (সা.) প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সময় আলাদা আলাদা করে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। কোন নামাজের ওয়াক্ত কখন শুরু, কখন শেষ, সব নবীজি (সা.) বলে গেছেন। আর ওয়াক্তের মধ্যে কোন নামাজ কখন পড়া উত্তম সেটাও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।

আমরা ওয়াক্তের শুরুতে অথবা যে নামাজ যখন পড়া উত্তম, তখন না পড়ে অনেক সময় দেরি করে পড়ি। অলসতা করি। এটা উচিত নয়। এর দ্বারা অবশ্য আমাদের ওপর যে নামাজের হুকুম অর্পিত ছিল সেটা আদায় হয়ে যায় কিন্তু ফজিলত থেকে বঞ্চিত হতে হবে। অসংখ্য হাদিসে শুরুর ওয়াক্তে নামাজ পড়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে এবং ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘শুরুর ওয়াক্তে নামাজ পড়লে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করা যায় আর শেষ ওয়াক্তে নামাজ পড়লে আল্লাহর ক্ষমা পাওয়া যায়’ (তিরমিজি : ১৭২)। এখানে ‘আল্লাহর ক্ষমা পাওয়া যায়’ কথাটির অর্থ হলো, নামাজের যে বিধান তার ওপর ছিল সেটা থেকে মাফ পাওয়া যায়। কিন্তু শুরুর ওয়াক্তে পড়লে আল্লাহর যে সন্তুষ্টি লাভ হওয়ার কথা ছিল সেটা পাওয়া যায় না। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘হে আলী! তিনটি ব্যাপারে দেরি করো না, ১. যখন নামাজের ওয়াক্ত হয়ে যায় তখন নামাজ পড়তে দেরি করো না। ২. যখন জানাজা উপস্থিত হয়ে যায় তখন জানাজা পড়তে দেরি করো না। ৩. সন্তান যখন বিয়ের উপযুক্ত হয়ে যায় এবং উপযুক্ত সঙ্গী পাওয়া যায় তখন বিয়ে দিতে দেরি করো না’ (তিরমিজি : ১৭১)। আরেক হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চেয়েছেন, কোন আমল সর্বোত্তম? নবীজি তিনটি আমলের কথা বলেছেন। সর্বপ্রথম উল্লেখ করেছেন, সময়মতো নামাজ পড়া। (তিরমিজি : ১৭৩)

এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, যতগুলো হাদিসে ওয়াক্তমতো নামাজ পড়া, শুরুর ওয়াক্তে নামাজ পড়ার কথা এসেছে, সবগুলো হাদিস বুঝতে হলে আমাদের দুটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত, ওয়াক্তমতো নামাজ পড়া মানে অলসতা করে একদম শেষ ওয়াক্তে নামাজ না পড়া। আর প্রতি নামাজের ওয়াক্তের মধ্যে একটা উত্তম সময় আছে, সেই সময়ে নামাজ পড়া। আমাদের দেশের মসজিদগুলোতে জামাতের যে সময় দেওয়া আছে, সেগুলো সাধারণত ওয়াক্তের উত্তম সময়ে দেওয়া। আমরা অলসতা না করলে ওয়াক্তমতো নামাজ পড়ার বিধানের ওপর আমল করতে পারব। আবার শুরু ওয়াক্তের যে ফজিলত আছে সেটাও হাসিল করতে পারব ইনশাআল্লাহ। কুরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘নিশ্চয় মুমিনদের ওপর নামাজ ফরজ করা হয়েছে সময়মতো’ (সুরা নিসা : ১০৩)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের নামাজগুলো সুন্দরভাবে সময়ের প্রতি খেয়াল করে আদায় করার তওফিক দান করুন।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo[at]gmail.com