আলোচিত মডেল-অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। টোলপড়া মিষ্টি হাসি, মায়াবী চাহনি আর সেই সঙ্গে অভিনয়ের কারিশমা। তরুণ প্রজন্মের দর্শকের কাছে যিনি একটু বাড়তি আকর্ষণ। ক্যারিয়ার খুব বেশি দিন না হলেও বহুমাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। শুধু টিভি নাটকেই নয়, দ্যুতি ছড়িয়েছেন অভিনয়ের সব মাধ্যমেই। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার ওয়েব ফিল্ম ‘বাবা, সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি’। অভিনয় ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন মাসুদুর রহমান।
‘বাবা, সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি’র প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন?
‘বাবা, সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি’ ওয়েবফিল্মের একটি প্রিমিয়ার হয়েছিল। সেখানে অভিনেতা আফজাল হোসেন আঙ্কেল, মিথিলা আপু, তুষার ভাইসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সবাই প্রশংসা করেছেন এবং এখন অডিয়েন্স যারা দেখছেন তাদের প্রতিক্রিয়াও খুব ভালো পাচ্ছি। ভালো কাজের প্রতিক্রিয়া সবসময় ভালো হয়।
পর্দায় নিজের কাজের ভালোমন্দ কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
আমরা কাজ করি দর্শকদের জন্যই। তাদের ভালো লাগাই আমাদের বড় প্রাপ্তি। তারা যখন কাজের প্রশংসা করেন তখন স্বাভাবিকভাবেই ভালো লাগে। কাজের স্পৃহা বেড়ে যায়। আবার ত্রুটিগুলোও চিন্তা করি। আসলে ভালোর তো শেষ নেই। যতই ভালো কাজ করেন না কেন, আপনার মনে হবে আরও ভালো করা যেত। কিন্তু একেকটি কাজ তো একেকটি অভিজ্ঞতা। অভিজ্ঞতা মানুষকে উন্নত করে।
অভিনেত্রী হিসেবে সমালোচনাকে কীভাবে দেখেন?
একজন অভিনেত্রীকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকবেই। গঠনমূলক সমালোচনা অবশ্যই ভালোভাবে গ্রহণ করি। আর চেষ্টা করি প্রতিনিয়ত নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে।
‘বাবা, সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি’ মূল বক্তব্যটা কী?
এখানে মূলত বাবা-মেয়ের এক রাতের একটি ঘটনাই উঠে এসেছে। এতে আমার চরিত্রের নাম বিজয়া। আর আমার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম। বিদেশে থাকা অবস্থায় বিজয়া হঠাৎ এক রাতে খেয়াল করল, কেউ একজন তাকে অনুসরণ করছে। বিপদের আঁচ পেয়ে সে তার বাবাকে ফোন করে। কীভাবে তার বাবা সাহায্য করবে বা আদৌ সাহায্য করতে পারবেন কি না! সেটি তুলে ধরা হয়েছে। নির্মাতা শিহাব শাহীন ভাইয়ার জীবনে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে এটি।
ফিল্মটিতে নতুন অভিজ্ঞতা কী ছিল?
সব কাজই নতুন অভিজ্ঞতা। এটি যেহেতু অস্ট্রেলিয়ায় শুটিং হয়েছে। সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা। অস্ট্রেলিয়ান অভিনয়শিল্পীও ছিলেন, তার সঙ্গে কাজ করা হয়েছে। ফিল্মের বেশিরভাগ দৃশ্য ছিল ফোনালাপের। এ ছাড়া অভিজ্ঞ অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কাজ করলে নতুন কিছু শেখা যায়।
এখানে অভিনয় করতে গিয়ে আপনার বাস্তব জীবনের কোনো মিল পেয়েছেন?
গল্পটির সঙ্গে নিজের বাস্তব জীবনের কোনো মিল খুঁজে পাইনি। গল্পটির বিষয়বস্তু আমার বাস্তব জীবন থেকে একেবারেই আলাদা। আমি আসলে কখনো আমার কাজকে ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে নিই না। গল্পের জায়গা থেকে যতটুকু মানিয়ে নিতে পারি ততটুকুই করি। তবে প্রায়ই বিদেশে কাজের জন্য যেতে হয়। তখন মা-বাবা অনেক চিন্তা করেন, উৎকণ্ঠায় থাকেন। ফিল্মটিতে কাজ করতে গিয়ে তাদের সেই উৎকণ্ঠার মাত্রা কিছুটা অনুভব করতে পেরেছি।
ওটিটিতে নতুন আর কী কাজ করছেন?
দুটি কাজ শেষ হয়ে আছে। শিহাব শাহীনের পরিচালনায় আরেকটি ওয়েবফিল্মে দেখা যাবে আমাকে। নাম ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’। এতে আমার বিপরীতে আছেন প্রীতম হাসান। এটি আগামী বছরের শুরুর দিকে মুক্তি পাবে। এ ছাড়া কাজল আরেফিন অমির ‘অসময়’ ওয়েবফিল্মের কাজ শেষ করেছি। আপাতত নতুন কোনো কাজের খবর নেই। কাজ হাতে আছে কিন্তু সেগুলো ওভাবে বলার মতো সময় হয়নি। যখন কাজ শুরু হবে বা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হবে তখন জানতে পারবেন।
কলকাতার সিনেমার খবর কী?
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘আরও এক পৃথিবী’ মুক্তি পেয়েছে। নতুন বছরে ‘পাত্রী চাই’ সিনেমাটির শুটিং শুরু হবে। এটি পরিচালনা করছেন বিপ্লব গোস্বামী।
দেশের প্রেক্ষাগৃহে দর্শক আপনাকে কবে পাবেন?
দেখার মতো ছবি হলে অবশ্যই দর্শক আমাকে সিনেমায় পাবেন। যদি আমার কাছে মনে হয় কোনো ছবি আমার দর্শকদের কাছে ভালো লাগবে। আমার সঙ্গে যায়, দর্শকদের পছন্দের সঙ্গে যায় তখন বড় পর্দায় অভিনয় করব। গল্প ও চরিত্র যদি মানসম্মত না-ই হয় তা হলে অভিনয় করে লাভ নেই। অনেক আগে থেকেই সিনেমার প্রস্তাব পেয়ে আসছি কিন্তু ব্যাটে-বলে না মেলায় অভিনয় করা হয়নি। তবে কলকাতার সিনেমা দুটির প্রস্তাব পছন্দ হওয়া যুক্ত হয়েছি।
নাটক-সিনেমায় গল্পের গুরুত্ব কতটুকু?
গল্প শক্তিশালী না হলে চরিত্র যতই ভালো হোক লাভ নেই। গল্প ভালো না হলে চরিত্রের গুরুত্ব বাড়ে না। গল্পই হচ্ছে একটি নাটক-সিনেমার প্রধান উপকরণ। গল্পের কারণেই দর্শক নাটক-সিনেমা দেখেন।
নাটক কি ছেড়ে দিচ্ছেন?
অভিনয়ের সব মাধ্যমেই কাজ করছি। নাটক ছেড়ে দিইনি। এখন ওটিটির মাধ্যমে ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় নাটকে কম কাজ করছি। ওটিটির জন্য শিডিউল মেলাতে না পারায় ইদানীং দেখা যাচ্ছে না। এ মাসেও জাকারিয়া সৌখিনের পরিচালনায় অপূর্ব ভাইয়ের সঙ্গে একটি নাটকে কাজ করলাম। নাটকের নাম ‘যদি থাকে নসিবে’। সামনে আরও নতুন নাটকে কাজ করব। যখন ডেট হবে তখন জানতে পারবেন।
বিয়ের পর ব্যক্তিগত জীবন কেমন কাটছে?
আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো কাটছে। দুজনই ভালো আছি। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। ব্যক্তিজীবন ও অভিনয় নিয়েই সন্তুষ্ট আমি।
সময়ের আলো/আরএস/