ই-পেপার শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অভয়নগরে দ্বিগুণ টাকায়ও মিলছে না স্ট্যাম্প
সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে দেড় মাস ধরে চলছে সংকট
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩, ৭:৩২ এএম  (ভিজিট : ৪০২)
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় স্ট্যাম্প কিনতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। স্থানীয়দের অভিযোগ, ১০০ টাকার স্ট্যাম্পের জন্য নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। উপজেলায় গত দেড় মাস ধরে চলছে ১০০ টাকার স্ট্যাম্প সংকট। উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ও দলিল লেখক সমিতির চত্বর ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সব ধরনের স্ট্যাম্প কিনতে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে। ১০০ টাকার নন-জুুডিশিয়াল স্ট্যাম্প কিনতে হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। এছাড়া ৫০ টাকার স্ট্যাম্পের জন্য গুনতে হচ্ছে ৭০ টাকা। উপজেলার নওয়াপাড়া দলিল লেখক সমিতি চত্বরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কিছু অসাধু স্ট্যাম্প ভেন্ডর সিন্ডিকেট তৈরি করে সেবাগ্রহীতাদের পকেট থেকে বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। 

সেবাগ্রহীতারা জানান, দলিল নিবন্ধন, জমির দলিল, চুক্তিপত্র, নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিট, হলফনামা, বন্ধকনামার চুক্তিপত্র, মালামাল খালাস আদেশ, শুল্ক বন্ড, শেয়ার বরাদ্দ, মামলা মোকদ্দমাসহ বিভিন্ন কাজে স্ট্যাম্প ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। তাই এসব কাজের জন্য সেবাগ্রহীতারা স্ট্যাম্প কিনে থাকেন। আর এই সুযোগে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে স্ট্যাম্প বিক্রি করছেন কিছু অসাধু স্ট্যাম্প ভেন্ডর। 

অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা গ্রামের কৃষক আহাদ আলী বলেন, সম্প্রতি আমি একটি মোটরসাইকেল কিনেছি। মালিকানা লিখে নিতে আমার ২০০ টাকার স্ট্যাম্প দরকার। নওয়াপাড়া দলিল লেখক সমিতির চত্বর থেকে ১০০ টাকার দুটি স্ট্যাম্প ৪৫০ টাকা দিয়ে কিনতে বাধ্য হয়েছি। এই বাড়তি ২৫০ টাকা আমার মতো গরিব কৃষকের পক্ষে বহন করা বেশ কষ্টকর। একবেলা ভাতের দাম জোগাতেই যেখানে হিমশিম খেতে হচ্ছে, সেখানে এভাবে সিন্ডিকেট করে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। 

কথা হয় স্ট্যাম্প কিনতে আসা ফজর আলী শেখ, হান্নান রহমান ও রহমত আলীর সঙ্গে। তারা বলেন, নতুন দোকান ভাড়া নিয়েছি। চুক্তিপত্র করতে ৩০০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্প লাগবে। দুই দিন ধরে ঘুরে কোথাও পাইনি স্ট্যাম্প। আজ রবিউল ইসলাম বাবুর কাছে গেলে তিনি জানান তার কাছে স্ট্যাম্প আছে কিন্তু বেশি দাম দিয়ে কিনতে হবে। ৩০০ টাকার একেকটি স্ট্যাম্পের দাম চাওয়া হয়েছে ৬০০ টাকা। তাই স্ট্যাম্প না কিনেই ফিরে এসেছি। নওয়াপাড়া এলাকার মনির শেখ জানান, নওয়াপাড়ায় না পেয়ে যশোর থেকে ২০০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্প কিনেছি। প্রতিটির দাম নিয়েছে ৩৯০ টাকা করে। এই উপজেলায় গত দেড় মাস ধরেই চলছে স্ট্যাম্প সংকট। নওয়াপাড়া দলিল লেখক সমিতির অধীনে ৯ জন স্ট্যাম্প ভেন্ডর রয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে স্ট্যাম্প তোলেন ৭ জন। 

স্ট্যাম্প ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বাবু বলেন, এই এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় স্ট্যাম্প সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে ১০০ টাকার স্ট্যাম্প ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এই স্ট্যাম্পগুলো বাইরে থেকে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহে সব ঠিক হয়ে যাবে। দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, স্ট্যাম্প সংকট বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে। ভেন্ডররা বাইরে থেকে স্ট্যাম্প এনে বিক্রি করছেন। বাইরে থেকে স্ট্যাম্পগুলো আনতে খরচ হয়। এ কারণে অনেক সময় বেশি দামে স্ট্যাম্প বিক্রি করতে হয়। সমিতির অধীনে থাকা ভেন্ডররা অকারণে বেশি দামে স্ট্যাম্প বিক্রি করলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।  

অভয়নগর উপজেলায় স্ট্যাম্প সংকট ও বেশি দামে বিক্রির বিষয়ে জানার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) থান্দার কামরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, স্ট্যাম্পের দাম বেশি নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংকট থাকলেও দাম বেশি নেওয়া যাবে না। এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলেই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে হবে স্ট্যাম্প।

সময়ের আলো/আরএস/




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close