ই-পেপার শুক্রবার ৪ অক্টোবর ২০২৪
শুক্রবার ৪ অক্টোবর ২০২৪

প্রভুর দরবারে আত্মসমর্পণের প্রতীক
প্রকাশ: রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১:৪৬ এএম  (ভিজিট : ৭৮৬)
মহান রবের কুদরতি কদমের সামনে সমর্পিত হওয়ার প্রকাশ হচ্ছে সেজদা। সেজদা আল্লাহর হক এবং আল্লাহর প্রতি যাবতীয় ইবাদতের শ্রেষ্ঠাংশ। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অতঃপর মানব জাতির সেজদার প্রতীক হিসেবে কাবাগৃহকে নির্ধারণ করেছেন। ফলে সমগ্র বিশ্বের মানুষ আল্লাহর আদেশে কাবাগৃহকে কেবলা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। ঠিক তেমনি সৃষ্টির সূচনায় আদমকে (আ.) ‘কেবলা’ বানিয়ে সেজদা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ফেরেশতারা এই নির্দেশ পালন করেন। কিন্তু ইবলিস সেজদা করতে অস্বীকার করে। এ ঘটনার মাধ্যমে সেজদার মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য প্রকাশিত হয়।

পৃথিবীর সব কিছুই মহান আল্লাহর জন্য সেজদা করে। কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আর আল্লাহকে সেজদা করে-যা কিছু আছে নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে এবং তাদের ছায়াগুলোও (সেজদা করে); সকালে ও সন্ধ্যায়, ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায়’ (সুরা রাদ, আয়াত : ১৫)। অন্যত্র আল্লাহ আরও বলেন, ‘তুমি কি দেখো না যে আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু আছে নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু ও বহু মানুষ। আর বহু মানুষ (যারা সেজদা করতে অস্বীকার করেছে) তাদের ওপর শাস্তি অবধারিত হয়েছে। বস্তুত আল্লাহ যাকে লাঞ্ছিত করেন তাকে সম্মানদাতা কেউ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ যা চান তাই করেন’ (সুরা হজ, আয়াত : ১৮)। শুধু নিম্নজগতে নয়, সেজদার এই নিয়ম রয়েছে ঊর্ধ্বজগতেও। সেখানে ফেরেশতারা মহান আল্লাহর উদ্দেশে সেজদা করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা কি আল্লাহর সৃষ্ট বস্তুগুলোর প্রতি লক্ষ করে না। তাদের ছায়া ডানে ও বাঁয়ে ঢলে পড়ে আল্লাহর প্রতি সেজদাবনত হয় বিনীতভাবে? আসমান ও জমিনে যত প্রাণী আছে, সবই আল্লাহকে সেজদা করে এবং ফেরেশতারাও। আর তারা অহংকার করে না।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৪৮-৪৯)

সেজদার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে কাছাকাছি হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত-রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী হয়, যখন সেজদারত থাকে। অতএব তোমরা তখন অধিক দোয়া করতে থাকো’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৮২)। হজরত রাবিআহ ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহর (সা.) সঙ্গে রাতযাপন করতাম। একদা আমি তাঁর ওজু ও ইস্তেঞ্জা করার জন্য পানি আনলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, তোমার কিছু চাওয়ার থাকলে চাইতে পারো। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনার সঙ্গে জান্নাতে থাকতে চাই। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ওটা ছাড়া আর কিছু চাও কী? আমি বললাম, এটাই চাই। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তা হলে বেশি বেশি সেজদার দ্বারা তুমি এই ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করো’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৮৯)।

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমার যেকোনো উম্মতকে কেয়ামতের দিন আমি চিনে নিতে পারব। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করেন, এত মানুষের মধ্যে আপনি তাদের কীভাবে চিনবেন? তিনি বলেন, তোমরা যদি কোনো আস্তাবলে প্রবেশ করো যেখানে নিছক কালো ঘোড়ার মধ্যে এমন সব ঘোড়াও থাকে যেগুলোর হাত, পা ও মুখ ধবধবে সাদা, তবে কি তোমরা উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে না? সাহাবিরা বললেন, হ্যাঁ, পারব। তিনি বলেন, ওইদিন সেজদার কারণে আমার উম্মতের চেহারা সাদা ধবধবে হবে, আর ওজুর কারণে হাত-পা উজ্জ্বল সাদা হবে’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৮৩৬)। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বেশি বেশি তার কুদরতি কদমে সেজদাবনত হওয়ার মাধ্যমে তার নৈকট্য লাভের তওফিক দান করুন।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close