বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেছেন, এই নির্বাচন সরকার ইতোমধ্যে হযবরল করে ফেলেছে। রাজধানীতে বসে কে কোন সিটে এমপি হবে এটা ইতিমধ্যে নির্ধারিত হয়ে গেছে। এই নির্বাচনে জনগণের কোনো প্রতিনিধি এমপি হবে না, এমপি হবে সিলেকশনে, ইলেকশনে নয়। আজকে ৭ তারিখ সম্পূর্ণ অর্থহীন হয়ে গেছে।
ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (১ জানুয়ারি) শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মঈন খান বলেন, ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচনের প্রস্তুত ক্ষমতাসীনরা নিচ্ছে, তাতে ইলেকশনে নয়,সিলেকশনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হবেন। এই মিথ্যা, ভুয়া নির্বাচনের জন্য যে নাটকীয় প্রহসন হচ্ছে সেই প্রহসনকে আমরা বর্জন করেছি এবং আমরা বাংলাদেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করে এই একদলীয় সরকারকে আমরা বর্জন করেছি। আমরা জনগণের শক্তিতে শক্তিশালী হয়ে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে ইনশাল্লাহ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। নতুন বছরে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সাবেক এই মন্ত্রীর অভিযোগ সরকার ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ মামলা দিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের কারাবন্দি করেছে। ছাত্রদলের সভাপতি ও সেক্রেটারিকে ভুয়া মামলা দিয়েছে তারা আজকে এখানে আসতে পারেনি। তার প্রতিনিধি এখানে আমার পাশে আছে। ছাত্ররা নিজের জীবনের পরোয়া করে না। এই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ইতিহাস যদি আপনারা বিশ্লেষণ করেন, তাহলে দেখবেন, ছাত্ররাই দেশের আন্দোলন-সংগ্রামের সূচনাকারী।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের এই দিনে দলের ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেন। সোমবার ছাত্রসংগঠনটির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সকালে পুলিশি নিরাপত্তায় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন ও অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মঈন খান শেরে বাংলা নগরে আসেন।
নেতা-কর্মীরা এ সময় ‘শুভ শুভ শুভ দিন, ছাত্র দলের জন্মদিন’, ‘আজকের এদিনে জিয়া তোমায় মনে পড়ে’, ‘দেশ গড়েছেন শহীদ জিয়া, ‘লাল সবুজের পতাকায় জিয়া তোমায় দেখা যায়’ নেত্রী মোদের খালেদা জিয়া’ ইত্যাদি শ্লোগান দেন।
এ সময় ছাত্রদলের সহসভাপতি তানজিল হাসান, শেখ আল ফয়সাল, সাইফুজ্জামান, নিজাম উদ্দিন রিপন, করিম প্রধান রনি, এবিএম মাহমুদ সরদার, সাখাওয়াত হোসেন, সাইফুল ইসলাম তুহিন সঙ্গে ছিলেন।
জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেওয়ার পর এবং প্রয়াত নেতার আত্মর মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন তারা। এদিন সারাদেশে ছাত্রদলের শোভাযাত্রা এবং বিকালে ভার্চুয়াল আলোচনা সভার কর্মসূচি রাখা হয়।
এদিকে ঢাকার সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ভোট বর্জনে লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেন, নতুন বছরের বার্তা একটাই। বাংলাদেশে একদলীয় সরকারের অধীনে একদলীয় নির্বাচন বর্জনে যে আহ্বান বিএনপি ও সমমনা দলগুলো দিয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য ২০২৪ সালের পহেলা জানুয়ারি আমরা শপথ নিচ্ছি এই নির্বাচন বর্জন করব।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সহসভাপতি আবদুল হালিম মিঞা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল করিব রিজভী এদিন সকাল সাড়ে ৭টায় ১০ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী নিয়ে কাফরুল এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, জাকির হোসেনসহ স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্র দলের নেতা-কর্মীরা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।