এশিয়া কাপ জয়ের স্মৃতিটা এখনও টাটকা। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল এখনও ওই সাফল্যে বুঁদ হয়ে আছে, ব্যাপারটা এমন নয়। স্বপ্নের সীমানা যখন আরও বড়, তখন আসলে অতীত নিয়ে পড়ে থাকার উপায়ও থাকে না, নতুন উদ্যমে তাকাতে হয় সামনে। মাহফুজুর রহমান রাব্বির দল সেটাই করছে। এশিয়াজয়ী টাইগার যুবাদের চোখ এখন দক্ষিণ আফ্রিকায় হতে যাওয়া বিশ্বকাপে। সেখান থেকে কীভাবে শিরোপা নিয়ে ঘরে ফেরা যাবে, যুবাদের ভাবনাজুড়ে এখন সেটাই।
১৯ জানুয়ারি শুরু হবে এবারের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। ‘এ’ গ্রুপে থাকা বাংলাদেশ ১৬ দলের আসরে যাত্রা করবে পরদিন, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। গ্রুপের অপর দুদল আয়ারল্যান্ড আর যুক্তরাষ্ট্র। চার দলের গ্রুপে সেরা তিনে থাকলেই সুপার সিক্স পর্বে খেলার টিকেট মিলবে। এই ধাপেও থাকছে দুটি গ্রুপ, প্রতি গ্রুপে থাকবে ছয়টি দল। ‘এ’ গ্রুপের সেরা তিন দলের সঙ্গে যুক্ত হবে ‘ডি’ গ্রুপের সেরা তিন দল। একইভাবে ‘বি’ গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হবে ‘সি’ গ্রুপ। সুপার সিক্সের দুটি গ্রুপ থেকে সেরা হওয়া দুটি করে দল খেলবে সেমিফাইনাল। এরপর ফাইনাল।
ওই ফাইনাল আর শিরোপায় চোখ রেখেই আসরটির জন্য সোমবার ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ দল ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো পরিবর্তন না এনে এশিয়া কাপজয়ী দলটাকেই পাঠানো হচ্ছে বিশ^কাপ ফিরিয়ে আনার মিশনে। ২০২০ সালে আকবর আলী-শরিফুল ইসলাম-তাওহিদ হৃদয়দের হাত ধরে যুব বিশ্বকাপ জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০২২ সালে পরের আসরে সেটি ধরে রাখতে পারেনি যুবারা। এবার ওই আক্ষেপটা ঘুচানোই একমাত্র লক্ষ্য টাইগার যুবাদের। দল ঘোষণার পর এমনটাই জানিয়েছেন অধিনায়ক রাব্বি, কোচ স্টুয়ার্ট ল আর নির্বাচক হান্নান সরকার।
শিষ্যদের ক্রিকেটীয় দক্ষতার চেয়ে মানসিকতার দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ল বলেছেন, ‘যা হয়ে গেছে, তা নিয়ে ভাবা যাবে না। ভাবতে হবে সামনে যা আছে তা নিয়ে। আমরা যে প্রক্রিয়ায় কাজ করে ভালো করেছি, সেদিকে আবার মনোযোগ দিতে হবে। যদি তা করি, তা হলে আমরা ভালো খেলব।’ একই সুরে কথা বলেছেন অধিনায়ক মাহফুজুরও, ‘আশা তো অবশ্যই বেড়ে গিয়েছে। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করব। মানসিকভাবে আমাদের এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গিয়েছে। আমাদের এখন বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময়। আমরা যদি ওই জিনিসটাকে (এশিয়া কাপ জেতা) ধরে রাখি, সেটা ঠিক হবে না। আমাদের এখন বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবা উচিত।’
যেটা উচিত, সেটাই করছে যুবারা। বিশ্বকাপের জন্য যে দলটা ঘোষণা করা হয়েছে, সেটা নিয়ে বেশ আশাবাদী নির্বাচক হান্নান। তার বিশ্বাস, বিশ্বকাপ ফিরিয়ে আনতে পারবে এই দল, ‘আমরা ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। ২০২২ সালে সেটা ধরে রাখতে পারিনি। সেটাকে আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। চ্যাম্পিয়ন তো বলেকয়ে হওয়া যায় না। তবে আমাদের লক্ষ্য সবসময়ই থাকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া, বিশেষ করে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে। অন্যরাও আমাদের বড় দল হিসেবে চিন্তা করে। আমরাও চিন্তা করছি শিরোপাটা আবার ফিরিয়ে আনার।’
প্রত্যাশা পূরণের সক্ষমতা যে আছে, গত মাসে মরুর বুকে এশিয়া কাপ জিতেই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মাহফুজুর-শিবলিরা। যুব ক্রিকেটের পরাক্রমশালী দুদল ভারত এবং পাকিস্তান থাকার পরও এশিয়া কাপে বাংলাদেশ হয় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। দক্ষিণ আফ্রিকায় যদি তাদের পারফরম্যান্সের ধারা অব্যাহত থাকে, তা হলে দারুণ কিছুর আশা করাই যায়।
সময়ের আলো/জেডআই