ই-পেপার শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিয়েই যার পেশা, বিয়েই যার নেশা
নৌবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ১৩ বিয়ে
প্রকাশ: রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১০:৪১ পিএম  (ভিজিট : ৫৩৯)
নৌবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে বিভিন্ন স্থানে ১৩টি বিয়ে করেছে মইদুল ইসলাম (২৭) নামে এক যুবক। গ্রামের সাধারণ মুসলিম পরিবারগুলো ছিলো তার মূল টার্গেট। সরলতার সুযোগ নিয়ে বিয়ে করে কিছুদিন সংসার করে তারপর নানা কৌশলে টাকা আত্মসাৎ পালিয়ে যেতো। ছাড় পায়নি প্রতিবন্ধী নারীও। সম্প্রতি এক স্ত্রীর করা মামলায় মইদুলকে গ্রেফতার করেছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা। গ্রেফতার মইদুল মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর চর কটারি এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

জানা গেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার লালমা এলাকার বাসিন্দা অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে বিয়ে করে মইদুল। বিয়ের পর তিন দিন স্ত্রীর বাড়িতে অবস্থান করে সংসার করে। এসময় সাভার আশুলিয়ায় ৮ শতাংশ জমি কিনেছে এবং কিছু টাকা বাকি আছে বলে জানায়। বাকি পরিশোধের কথা বলে শ্বশুরের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা ধার নিয়ে আশুলিয়া হয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে চাকরিতে যোগদানের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। কিছুদিন পর আরও ২ লাখ টাকা ধার নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘ ৬ মাস যোগাযোগ না থাকায় ওই ছাত্রী খোঁজ নিতে গেলে মইদুলের আরও কয়েকজন স্ত্রীর সন্ধান পায়।

পরে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় মামলা দায়ের করেন। গত শুক্রবার রাতে গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকা থেকে মইদুলকে এবং তারাকান্দা থেকে ঘটক কুদ্দুছ আলীকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেফতারের পর মইদুলের প্রতারণার স্বীকার ১৩ নারী ছুটে আসেন ডিবি কার্যালয়ে। যার মধ্যে ময়মনসিংহের ছয়জন, মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের তিনজন করে এবং কিশোরগঞ্জের এক নারী রয়েছে। মইদুলের এই প্রতারক চক্র এসব পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লক্ষেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমনকি তার এই প্রতারণার ফাঁদ থেকে প্রতিবন্ধী নারীও রেহাই পায়নি। মাসিক প্রতিবন্ধী ভাতার সামান্য টাকা হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে সে টাঙ্গাইল জেলার একজন প্রতিবন্ধী নারীকে বিয়ে করে।

পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, নৌবাহিনীর এমএলএসএস হিসেবে দুই বছর চাকরি করার পর বিধি বহির্ভূতভাবে বাল্যবিয়ে করার অপরাধে চাকরি হারায় মইদুল। এরপর প্রতারণার মাধ্যমে বিয়েকেই তার পেশা হিসেবে বেঁছে নেয়। তার এই কাজে বিজিবি থেকে চাকরিচ্যুত এক সদস্য তাকে সরাসরি সহায়তা করে। গ্রেফতারকৃত অপর আসামি কুদ্দুছসহ অন্যান্যরা কখনও ঘটক কখনও মহিদুলের নিকট আত্মীয় হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়ে অভিভাবকদের বিশ্বাস অর্জন এবং প্রতারণার অপকৌশল বাস্তবায়নে সংঘবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, আসামি মইদুলের কাছে নৌবাহিনীর ভুয়া আইডি কার্ড, বাহিনীর ব্যবহার্য ট্রাকস্যুট এবং বিভিন্ন বাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি পাওয়া গেছে। মহিদুলসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে জামালপুর ও টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক প্রতারণা মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close