ই-পেপার মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সব পথ মিলল শহিদ মিনারে
প্রকাশ: শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১২:৪৫ এএম  (ভিজিট : ১২৮)
স্বাধীনতার পর এত রক্ত দেখেনি দেশ, বিদ্রোহে ফেটে পড়েনি মানুষ। নির্বিচারে গুলির প্রতিবাদে বুক পেতে দাঁড়িয়ে থাকেনি কোনো ‘আবু সাঈদ’। জুলাই অভ্যুত্থানের এক মাস ও শহিদদের স্মরণ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ‘শহীদি মার্চ’-এ পতাকা হাতে ছাত্র-জনতার সব পথ মিশে যায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণ করে ছবি, প্ল্যাকার্ড ও বিভিন্ন স্মারক নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয় ছাত্র-জনতা। ‘শহিদের স্মরণে, ভয় করি না মরণে’, ‘আমাদের শহিদেরা, আমাদের শক্তি’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘লাল-সবুজের পতাকায়, শহিদদের দেখা যায়’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’সহ বিভিন্ন স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
লাখো ছাত্র-জনতার এ শহীদি পদযাত্রায় মুহুর্মুহু ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়েছে মুক্তির স্লোগান, মুক্ত বাংলাদেশের স্লোগান। মুখে মুখে উচ্চারিত হয়েছে শহিদ আবু সাঈদ, মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধসহ গণআন্দোলনে নিহত অনেকের নাম। শহিদদের স্মৃতি উচ্চারণ করে তাদের আত্মত্যাগের মহিমাকে স্লোগানের ভাষায় রূপ দিয়ে রাজপথের উত্তাল জনতা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার শপথ নিয়ে পায়ের তালে পা রেখে ঢাকার রাস্তা প্রদক্ষিণ করছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, শহীদি মার্চ কর্মসূচিতে অংশ নিতে দুপুর ২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দলে দলে জড়ো হয় হাজারো ছাত্র-জনতা। রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ মার্চে অংশ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আসে। তাদের বেশিরভাগের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা দেখা গেছে। ‘শহীদি মার্চ’ নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, কলাবাগান, মিরপুর রোড ধরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও রাজু ভাস্কর্য হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এসে শেষ হয়।

‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি শেষে শহিদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সে রক্ত এবং স্পিরিট বৃথা যেতে দেব না। এখনও অনেক ফ্যাসিস্টের অস্তিত্ব রয়েছে, আমরা ফ্যাসিস্টদের এবং ফ্যাসিবাদী চিন্তা লালন করা মানুষদের বলতে চাই, এ স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট আচরণ করার চেষ্টা করবেন না। কোনো চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট এ বাংলাদেশে হবে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের যে ভাইয়েরা এ স্বাধীনতা আনতে রক্ত দিয়েছে, আমরা তাদের রক্তের মূল্য দিতে যেকোনো সময় নিজেদের রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না-এমন স্বপ্ন নিয়ে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে আমাদের ভাইয়েরা নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা আমাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করিনি। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। দেশকে পুনর্গঠনের যে লড়াই সেটি আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।

রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা, গণভবনকে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’ ঘোষণাসহ ৫ দফা দাবি তুলে ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মার্চ শেষে শহিদ মিনারে এ দাবিগুলো তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার। ৫ দফা দাবি হলো-গণহত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে; শহিদ পরিবারদের আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান করতে হবে; প্রশাসনে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টদের দোসরদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে; গণভবনকে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’ ঘোষণা করতে হবে এবং রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ দ্রুত ঘোষণা করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গত জুলাইয়ের শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগসহ তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলা-নির্যাতনের এক পর্যায়ে তা সরকারের পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। স্বৈরাচারী সরকার পতনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, ঠিক এক মাস আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে। এতে দ্বিতীয় স্বাধীনতার স্বাদ পায় বাংলাদেশ। এই স্বাধীনতার বিনিময়ে হাজারো ছাত্র-জনতাকে জীবন দিতে হয়েছিল। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা আহত হন। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন, অনেকে এখনও হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন। তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণের জন্যই এই কর্মসূচি।

ছাত্র অভ্যুত্থানে শহিদদের স্বপ্নের সঙ্গে কখনোই বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে এক বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ বিপ্লবীরা দেশের মানুষের মনে নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন জাগিয়ে দিয়েছে তা পূরণে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শহিদদের আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করতে চাই। এক নতুন যুগের সূচনা করতে চাই। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সবাই প্রতিজ্ঞা নিলাম-শহিদদের রক্ত এবং আহত ভাইবোনদের আত্মত্যাগকে জাতি হিসেবে আমরা কিছুতেই ব্যর্থ হতে দেব না। যে সুযোগ তারা আমাদের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন, সে সুযোগকে আমরা কখনো হাতছাড়া হতে দেব না। আজ তাদের স্মৃতিময় দিনে আবারও প্রতিজ্ঞা করলাম তাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ আমরা গড়বই।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ‘শহীদি মার্চ’ পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। দুপুর ২টা থেকেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। মার্চটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার, দয়াগঞ্জ মোড় হয়ে যাত্রাবাড়ী যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। ঢাকাসহ সারা দেশেই জুলাই অভ্যুত্থানের এক মাস ও শহিদদের স্মরণ উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানান, বিকালে নগরীর ষোলশহর স্টেশনে শহীদি মার্চ পালন করেন ছাত্র-জনতা। ষোলশহর স্টেশন চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে বহদ্দারহাট এলাকা ঘুরে মুরাদপুর এলাকায় গিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দেন। চট্টগ্রামে কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এবং এর আওতাধীন কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর স্কুল-কলেজের শত শত শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। শহিদদের স্মরণ করে ছবি, প্ল্যাকার্ড ও বিভিন্ন স্মারক নিয়ে নানা রকম স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় ‘শহিদদের স্মরণে, ভয় করি না মরণে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’সহ নানা স্লোগান দেন তারা।
কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মেশকাত চৌধুরী বলেন, স্বৈরশাসক ফ্যাসিবাদী হাসিনাকে আমরা যেভাবে টেনেহিঁচড়ে বিতাড়িত করেছি, আগামীতে যদি কেউ এ রকম করে, তা হলে ছাত্র-জনতা তাকেও বিতাড়িত করবে। দেশটাকে গঠন করতে হলে সবার আগে নিজেকে গড়তে হবে। গত ১৫ বছর ধরে হাসিনা তার লোকজন নিয়ে দেশটাকে লুটেপুটে খেয়েছে। ১৯৭১ সালে দেশটা যখন স্বাধীন হলো মুজিব তখন বলেছিলেন, এতদিন অন্যরা খেয়েছে এখন আমার লোকেরা খাইব। এখন আপনারা যদি বলেন, এতদিন আওয়ামী লীগ খেয়েছে এখন ছাত্ররা খাবে, তা হলে তার পরিণতিও আওয়ামী লীগের মতোই হবে। এটি কখনোই বলা যাবে না। আমাদের হাজারো ভাই জীবন দিয়েছে দেশটাকে গড়ার জন্য। এখনও শহীদি মিছিল অব্যাহতই রয়েছে। তাই এই রক্তের সঙ্গে বেইমানি করবেন না। যা কিছু করেন, মনে রাখবেন এটি রক্তের ওপর দাঁড়ানো একটা গণঅভ্যুত্থান।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সাভার অঞ্চলের শহিদদের কবর জিয়ারত করেন শিক্ষার্থীরা। দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ আসর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহিদদের স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা ও মোমবাতি প্রজ্জ্বালন এবং ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুর রশিদ জিতু বলেন, আজকে স্বৈরাচার পতনের এক মাস হলো, এই আন্দোলনে আমরা স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি এবং একই সঙ্গে এই আন্দোলনের জন্য আমাদের অনেক শিক্ষার্থী প্রাণ দিয়েছে। আজকের এই দিনে আমরা আমাদের সব শহিদ ভাইদের স্মরণ করছি এবং মূলত তাদের স্মরণেই আমাদের আজকের আয়োজন। তবে আজকের এই দিনে দাঁড়িয়ে আমরা সবাইকে একটা স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই যে, সামনে যারা দেশের নেতৃত্বে আসবে তারা যেন এই স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনকে একটি উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করে। বাংলাদেশের মানুষ আর কোনোদিন কারও একক নেতৃত্বকে মেনে নেবে না।

নিজস্ব প্রতিবেদক (বগুড়া) জানান, বিকালে বগুড়া শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা থেকে একটি মিছিল বের করে ছাত্র-ছাত্রীরা। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময়ে নানা স্লোগানের প্রকম্পিত হয়ে ওঠে বিভিন্ন সড়ক। পরে সাতমাথায় এসে সমাবেশ করে তারা। শিক্ষার্থীরা সারা দেশে ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম বন্ধের দাবি জানান।

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, বিকালে দ্বীপ হাতিয়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার উদ্যোগে হাতিয়া উপজেলা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলার প্রধান সড়ক হয়ে ওছখালী পুরাতন বাজার প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় শহিদ মিনারে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। শহিদ মিনারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে মতিউর রহমান মোকাররমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাইফুল ইসলাম, তামজিদ উদ্দিন প্রমুখ।

নিজস্ব প্রতিবেদক (ভোলা) জানান, বিকাল ৪টায় শহরের হাটখোলা জামে মসজিদে সামনে থেকে একটি র‌্যালি শহরের মহাজনপট্টি সদর রোড, বাংলাস্কুল মোড় হয়ে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। শহীদি মার্চ কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী জাতীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেয়। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো শহর।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সকালে শহরের সরকারি বৃন্দাবন কলেজের সামনে ছাত্র সমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী জাতীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেয়। পরে তারা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

পাবনা প্রতিনিধি জানান, বেলা সাড়ে ১১টায় পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ চত্বর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা মিছিল বের করেন। কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহীদি মার্চ কর্মসূচির আওতায় মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে আবদুল হামিদ সড়কের জিরো পয়েন্ট শহিদ চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউসুফ আরফান বিপ্লব, শাওন হোসেন, মনিরা, মনজুরুল ইসলাম, শামীম হোসেন, মোহাম্মদ মনিরুল হাসান মুন্না, বরকতুল্লাহ ফাহাদসহ অন্যরা।

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে এ কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এ উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকায় সজ্জিত হয়ে সরকারি দোহার নবাবগঞ্জ কলেজ ফটক থেকে শহীদি মার্চ শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি থানার সামনে দিয়ে কায়কোবাদ চত্বর হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শেষ হয়। পরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পথসভা করেন শিক্ষার্থীরা।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালী কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে একটি র‌্যালি বের হয় শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, দুপুরে শহরের টেংকের পাড় মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শহীদি মার্চের এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী আল মামুন, দুর্জয় মাহমুদ, রেহেনা বুশরা, মুনিয়া, রিয়াদুল ইসলাম, আবু বাশার সানি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক গাজী মো. নিয়াজুল করিম।

মধুপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা জানান, মধুপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিছিল শেষে নতুন ব্রিজের পাশে শহিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাদের আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সবুজের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মধুপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নাইম, ইকরামুল শামীম, তাহসিন হোসেম, মাহবুবা জান্নাত, মধুপুর আলিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী (আন্দোলনের সময় আহত) আল মাতাব শামীম, মধুপুর শহিদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিহান, মধুপুর রানী ভবানী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্বাধীন প্রমুখ।

মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, দুপুরে শহরের শহিদ ড. সামসুজ্জোহা পার্ক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। ইমতিয়াজ, তানজিমুল, সিহাব, শীতলসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। আন্দোলনে ছাত্রদের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। এ ছাড়াও আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার দাবি জানানো হয় বিক্ষোভ থেকে।

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, বেলা ৩টায় ‘শহিদরা আমাদের শক্তি’ স্লোগান দিয়ে সাতকানিয়ার কেরানীহাট হক টাওয়ার চত্বরে জড়ো হন ছাত্র-জনতা। শিক্ষার্থীরা ‘আমাদের শহিদেরা, আমাদের শক্তি’, ‘আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘২৪ আমাদের বিশ্বাস’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’সহ একাধিক স্লোগান দেন। শহিদদের স্মরণ করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করার শপথ নেন তারা।

সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close