‘মায়াবতী’ নিয়ে প্রচন্ড ব্যস্ত তিশা, অন্যদিকে ইয়াশ ‘পরান’ ছবির শুটিংয়ে। ব্যস্ততার মাঝে দুই শিল্পী জানালেন ‘মায়াবতী’ নিয়ে নানা কথা। প্রথমেই দুজনার কাছে জানতে চাওয়া হলো ছবিটি নিয়ে কী প্রত্যাশা করছেন? স্বভাবসুলভ হাসি দিয়ে তিশা বললেন, আমরা যখনই ছবি করি অনেক প্রত্যাশা নিয়েই করি। প্রত্যাশা বেড়ে গেছে কারণ ট্রেলার, গান সব কিছু মিলিয়ে দর্শকরা অনেক পছন্দ করেছে। যেহেতু দর্শকরা এ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে ছিল, আমি আশা করব ছবি মুক্তির পরেও তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে।
ইয়াশ একটু ভেবে বললেন, আমি খুব বেশি প্রত্যাশা করতে চাই না। এর কারণ হচ্ছে প্রত্যাশা যত বেশি হয় তত চাপটা বেড়ে যায়। তবে আমি আশা করছি, ছবিটি মানুষ দেখবে। স্বপ্নজালের সময় পজেটিভ কমেন্ট পেয়েছি। মানুষের যদি ভালো লাগে তাহলে প্রশংসা করবে, মানুষের যদি খারাপ লাগে তাহলে গঠনমূলক সমালোচনা করবে।
ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ব্যাপারটি কেমন লাগছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিশা বললেন, আসলে নাম ভ‚মিকায় অভিনয় করছি এর চেয়ে বড় ব্যাপার হলো আমি একটি ভালো গল্পে অভিনয় করেছি। আমার কাছে যখন একটি ভালো গল্প আসে এবং যদি আমি তার সঙ্গে থাকতে পারি সেটা আমার জন্য অনেক বড় বিষয়। তারপর সেটি যদি নাম ভূমিকায় হয় তাহলে তো সোনায় সোহাগা।
ছবিটিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? সময় না নিয়েই ইয়াশ জানালেন, দেখেন আপনি যখন বড় বড় তারকাদের সঙ্গে কাজ করবেন তখন পরিবেশটা অন্যরকম হয়ে যায়। কাজটাও ভালো হয়। সিনিয়রদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। এটা আমার জন্য খুবই ভালো অভিজ্ঞতা। ছবিটা করতে গিয়ে আমি অনেক কিছু শিখেছি।
ইয়াশের সঙ্গে সুর মিলিয়ে অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিশা বলেন, ‘ছবি একটি টিমওয়ার্ক। সহশিল্পীরা ভালো কাজ না করলে আমিও ভালো কাজ করতে পারব না। এখানে ইয়াশ কাজ করেছে, বাবু ভাই আছেন, রাইসুল ইসলাম আসাদ আছেন। বড় মাপের আরও অনেকেই আছেন। সবাই নিজ নিজ জায়গায় অবশ্যই দক্ষ। তাদের সঙ্গে কাজ করে অসাধারণ লেগেছে। চমৎকার একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার।’
দৌলতদিয়ায় শুটিংয়ের ব্যাপারটি তুলে ধরে তিশা বললেন, দৌলতদিয়ার মানুষগুলোর সাপোর্ট ছিল বলেই আমরা কাজ করতে পেরেছি। তারা সবার সঙ্গেই সুন্দর ব্যবহার করেছে। তারা খুব ভালো মানুষ। এই ছবিটি তাদের উৎসর্গ করা উচিত। তিনি যোগ করে আরও বলেন, আমার মনে আছে যখন আমার ব্রেক থাকত তখন তারা আমাকে গান শোনাত, নাচ দেখাত।
তিশার সঙ্গে অভিনয় করতে ইয়াসের কেমন লেগেছে? উত্তর যেন মুখেই ছিল। বললেন, অ্যামেজিং। প্রথমদিকে আমার ভয়ই লেগেছে।
কারণ নুসরাত ইমরোজ তিশা এত অভিজ্ঞ
অভিনেত্রী ভেবেই নার্ভাস লেগেছিল। আইস ব্রেকিং থেকে শুরু করে, আমাকে ফ্রি করার ক্ষেত্রে উনি আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে। আমাদের মধ্যে ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে। যার কারণে কাজ করা সহজ হয়েছে।
একজন অভিজ্ঞ অভিনেত্রী হয়ে নবীন ইয়াশ কিংবা সিয়ামের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করছেন তিশা। অনেকে সিনিয়র শিল্পীই এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক নন, তিশা কেন ব্যতিক্রম? এমন প্রশ্নের জবাবে তিশা বলেন, আমি যখন নতুন ছিলাম তখন অনেক সিনিয়র শিল্পীদের বিপরীতে কাজ করেছি বলেই আজ আপনারা আমাকে চিনতে পেরেছেন। আমি নতুন শিল্পী, ডিরেক্টরদের সঙ্গে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কারণ তাদের সঙ্গে কাজ করলে ফ্রেশ আইডিয়া পাই যা আমার কাজের ক্ষেত্রে অনেক সহায়তা করে। কাজেই আমি মনে করি নতুনদের সঙ্গে কাজ করা উচিত এবং তাদের সঙ্গে কাজ করলে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হবে।
ছবির গল্প নিয়ে কিছুই বলতে চাইলেন না তিশা-ইয়াশ। তবে তিশা নিরাশ করে বলেন, ‘না’ মানে না। সবারই ‘না’ বলার অধিকার আছে। সেই ‘না’ কে শ্রদ্ধা করা উচিত সবার। এটার ওপর ভিত্তি করে পুরো ছবি। বাকিটা সিনেমা হলে গিয়ে দেখতে হবে।
দর্শক ‘মায়াবতী’ কেন দেখবে? প্রশ্নটি ছুঁড়ে দেওয়া হলে ইকবাল চরিত্রের ইয়াশ বলেন, ‘মায়াবতী’ একজন নারীর গল্প। এই সময়ের জন্য, যেখানে নারীদের ওপর নানা অত্যাচার হচ্ছে, আমি মনে করি যে ‘মায়াবতী’র মতো একটি গল্পের দরকার ছিল। সে জন্যই দর্শক ছবিটি দেখবে।
‘মায়া’ চরিত্রে রূপদানকারী তিশা বললেন, ‘বাংলা সিনেমা বাঁচিয়ে রাখতে হলে দর্শককে হলে আসতে হবে, সিনেমা দেখতে হবে। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে ‘মায়াবতী’ ছবিতে দর্শক একটি সুন্দর গল্প দেখবে। গান আছে, নাচ আছে, রোম্যান্স আছে, কষ্ট আছে এবং সাধারণ কিছু মানুষের জীবন নিয়ে কথা আছে। সেই সঙ্গে একটি সুন্দর বার্তা আছে যা আমরা সব সময় বলছি। এত কিছুর একটি প্যাকেজ দর্শক অবশ্যই দেখতে যাবে।’ ‘মায়াবতী’ ছবিটি তিশার ক্যারিয়ারে ভিন্নমাত্রা যোগ করবে। পাশাপাশি ইয়াশ চলচ্চিত্রে ধীরে ধীরে দর্শকের কাছে ঠাঁই করে নিবে এমনটাই প্রত্যাশা।