নওগাঁয় দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি পেয়ে খুশি অসহায়রা
নওগাঁ প্রতিনিধি
|
জানা গেছে, ৪০০ বর্গফুটের উপর একটি বাড়ি হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে প্রায় সাড়ে ৮শ বর্গফুট জমির প্রয়োজন হচ্ছে। বাড়ির বারান্দা থেকে রান্নাঘর ও স্যানিটারি ল্যাট্রিন পর্যন্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৭ফুট এবং প্রস্থ প্রায় ২৩ফুট। বাড়ির মোট আয়তন দাঁড়ায় ৮৫১ বর্গফুট (প্রায় দুই শতাংশ)। ![]() অনেক দরিদ্র পরিবার আছে যাদের বাড়ির ধরন বা আকৃতি অনুযায়ী বাড়ি তৈরী করা কষ্টকর। এজন্য বাড়ি দুই বা তিন ধরনের হওয়া প্রয়োজন। এতে করে যার যা জমির ধরন, সেখানে বাড়ির ধরন পরিবর্তন করে তৈরী করা সম্ভব। উল্লাশপুর গ্রামের দরিদ্র বিধবা গৃহবধু ফিরোজা বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করে দুই মেয়েকে মানুষ করেছি। এখনও কষ্ট করেই যাচ্ছি। ভাঙা টিনের ঘরে বসবাস করতাম। এখন সরকার থেকে একটি ঘর দিয়েছে সেখানে বসবাস করছি। ইটের ঘর পাবো তা স্বপ্নেও ভাবিনি। এখন শান্তিমতো ঘরে ঘুমাতে পারছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোয়া করি তিনি সুস্থ ভাবে আরো বেঁচে থাকেন। আর গবীর মানুষের দিকে মুখ তুলে দেখেন। সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুক্তারপাড়া (আকন্দ পাড়া) সুবিধাভোগী বিধবা গৃহবধু রেখা বেগম বলেন, গত ৬ বছর আগে দুই বছরের ছেলে (নিরব) কে রেখে স্বামী ক্যানসার হয়ে মারা গেছে। নানার দেয়া সামান্য জমিতে বেড়ার বাড়ি ছিল। নিজের বলতেই ওই বেড়ার বাড়ি সম্পদ। মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবন যাপন করি। প্রতিবেশীদের সহায়তায় ছেলেকে পড়াশুনা করাচ্ছি। সরকার থেকে ৩ মাস হলো ইটের ঘর পেয়েছি। আমি খুবই খুশি ইটের ঘর পেয়ে। বদলগাছীর নিহনপুর গ্রামের সুবিধা বেলাল হোসেনের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ। কোন কাজকর্ম করতে পারে না। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। মানুষের দয়া আর দানের উপর কোন মতে বেচে আছি। জামাইরা বেড়াতে আসলে দিনে থেকে রাতে চলে যায়। কারণ ভাঙা মাটির বাড়িতে ঘুমানোর পরিবেশ নাই। চেয়ারম্যান ও মেম্বারের সহযোগিতায় ঘর পেয়ে অনেক খুশি। এখন মেয়ে জামাইরা বেড়াতে আসলে একটা রাত ঘুমাতে পারবে শান্তিতে। নওগাঁ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো: মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটা বিশেষ উদ্যোগ, কোনও মানুষ যেন বাস্তুহারা না থাকে সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন। নির্মানে অংশীদার হতে পেরে আমরাও খুশি। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও রান্নাঘর সুবিধাসহ এসব বাড়ি বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, বজ্রপাত প্রতিরোধে সক্ষম সদর উপজেলায় ২০টি ঘর পেয়েছি। ঘরের চাহিদা অনেক, সে তুলনায় অপ্রতুল। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো: হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের বাড়ি দেওয়া হচ্ছে যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিনব ও চমৎকার উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা আছে-‘ আমার গ্রাম, আমার শহর, সেটি বাস্তবায়ন হবে।’ বাড়িগুলো পেয়ে হতদরিদ্ররা এতো বেশি খুশি হয়েছে যে আমার সামনে তারা হাত তুলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেছেন। আমরা সফল ভাবে ঘরগুলো তৈরী করতে পেরেছি। এতে করে গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন হবে। প্রয়োজনীয় চাহিদা থাকায় ধারা অব্যাহত থাকবে। |