চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় জীবনের চেনা মুখগুলো আজকে দেখার সুযোগ মেলেছে। ছাত্রজীবনে বন্ধুদের সঙ্গে ট্রেনে চড়ে গলা ছেড়ে গান গাইতে গাইতে ক্যাম্পাসে যেতাম। আবার যদি বিশ^বিদ্যালয় জীবনে ফিরে যেতে পারতাম। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের (চবি) প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে চবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রথম পুনর্মিলনী শুরু হয়। তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রকৃতি অপরূপ সাজে এ বিশ^বিদ্যালয়কে সাজিয়েছে। প্রকৃতি নিবিড় কোলে যেন লালন করছে এটিকে। যেখানে অনেক সময় কাটিয়েছি, সেটি আবার মনে পড়েছে। সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির সঙ্গে চবি ও দেশ যেন এগিয়ে যেতে পারে সে প্রত্যাশা করছি। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, অধ্যাপক বদিউল আলম, অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ, অধ্যাপক মো. আলাউদ্দিন, উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এরপর প্রত্যেকে নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, এতগুলো ভিসি ও প্রতিথযশা মানুষের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি, আল্লাহ আমাকে কত বড় সম্মানে ভূষিত করেছেন। আমি এই চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলাম, তারপর শিক্ষক ও বর্তমানে বিশ^বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করছি। এই অঙ্গনের জন্য দোয়া করবেন। যারা এই আয়োজনের সঙ্গে যোগ দেননি, আমরা আশা করব তারা সহ সবাই যেন একই ছায়ার নিচে থাকতে পারি।
তিনি আরও বলেন, জ্ঞান সৃজন, উৎপাদন ও গবেষণার মাধ্যমে যেন এগিয়ে যেতে পারি, সে জন্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন থেকে সবাই সহযোগিতা ও দোয়া করবেন। প্রাতিষ্ঠানিক উন্নতির মাধ্যমে আমরা যেন পৃথিবীর মানচিত্রে নাম লেখাতে পারি। আবারও কণ্ঠভরে বলি, ‘আকাশভরা সূর্য, তারা; বিশ^ভরা প্রাণ। পাহাড়ের মাঝে আমি পেয়েছি, পেয়েছি মোর স্থান; বিস্ময়ে তাই জাগে, জাগে আমার প্রাণ।’ আমার বিশ^বিদ্যালয়ের প্রত্যেকে যেন বিশ^মর্যাদায় আসীন হন, সেই কামনা করছি। অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলমের সঞ্চালনায় ও সভাপতি আবদুল করিমের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক তথ্যসচিব মোসলেম চৌধুরী, সাবেক মুখ্যসচিব আব্দুল করিম, সাবেক সচিব আব্দুস শহীদ, বিদ্যুৎ সচিব আহমেদ কায়কোজ, আওয়ামী লীগের দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, চাকসুর সর্বশেষ ভিপি নাজিম উদ্দীন ও সাবেক সদস্য মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী প্রমুখ।
বেলা পৌনে ৩টায় চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর সম্মিলিত নৃত্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্ব আরম্ভ হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নানান পরিবেশনা এবং রেনেসা ব্যান্ডের সদস্য নকিব খানের সঙ্গীত পরিবেশনা দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমাপনী হয়। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টায় নগরীর চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে র্যালি ও বাউল উৎসবের মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।