ই-পেপার বিজ্ঞাপনের তালিকা শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৭ আশ্বিন ১৪৩০
ই-পেপার শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাম জোটের মিছিলে লাঠিপেটা আহত ২০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম আপডেট: ৩১.১২.২০১৯ ১২:৩২ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ  Count : 315

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘ভোট ডাকাতির’ নির্বাচন অ্যাখ্যা দিয়ে মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোটের। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় ৯ পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। সোমবার বেলা ১টার দিকে রাজধানীর হাইকোর্টের কাছে কদম ফোয়ারা ও মৎস্য ভবনের মোড়ে দুই দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ৫-৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে, হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ১২টি ছাত্র সংগঠনের জোট সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ ছাড়া আজ (মঙ্গলবার) প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ডেকেছে গণতান্ত্রিক বাম জোট।
সংশ্লিষ্ট জোট, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ৮টি বাম দলের জোট ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোমবার ৩০ ডিসেম্বরকে ‘গণতন্ত্রের কালো দিবস’ পালন উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। এই জোটে রয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।
জোটের নেতাকর্মীরা বলেন, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের কালো দিবস’ হিসেবে পালন করার কর্মসূচি দেয় জোট। তাদের কর্মসূচির মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুপুর ১২টার দিকে প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শেষে পৌনে ১টার দিকে কয়েকশ নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে রওনা হয় তারা। তবে হাইকোর্টের কাছে কদম ফোয়ারার সামনে গেলে পুলিশের প্রথম বাধার মুখে পড়ে মিছিলটি। আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে সামনে এগোতে গেলে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। তবে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি সামনের দিকে এগিয়ে যায়। বেলা ১টার দিকে মৎস্য ভবনের সামনে দ্বিতীয় ব্যারিকেডের সামনে পড়ে মিছিলটি। সেখানে পুলিশের উপস্থিতি ও ব্যারিকেডের সংখ্যা বেশি থাকায় শক্ত বাধার মুখে পড়ে জোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় জোটের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সামনে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে জোটের নেতাকর্মীরা আবার প্রেসক্লাবের সামনে এসে জড়ো হয়ে পুলিশের ভ‚মিকার নিন্দা জানান।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল মিছিলের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এতে তাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো ধরনের উসকানি ছাড়া পুলিশের এমন হামলা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।
এদিকে, জোটের ওপর হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক নিন্দা জানিয়েছে ১২টি ছাত্র সংগঠনের জোট সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্যসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্য এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্য সোমবার সন্ধ্যায় ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে টিএসসি থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদিক্ষণ শেষে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
রমনা জোনের ডিসি সাাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, দুপুর ১টার দিকে বাম জোটের নেতারা মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবনের দিকে গেলে তাদেরকে ব্যারিকেড না ভাঙতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু নেতাকর্মীরা নিষেধাজ্ঞা না শুনে প্ল্যাকার্ডের সঙ্গে থাকা লাঠি ও বাঁশ দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। আমরা অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। তাদের হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজন গুরুতর আহত। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়েছে।
আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এএসআই জিয়াউর রহমান, এএসআই আবদুল মালেক, পুলিশ সদস্য রফিকুল ইসলাম, আশিক, মনোরঞ্জন ও ফয়সাল, পার্থ, ইলিয়াস ও রমজান ঢামেক হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ ছাড়া আহত বাম নেতাকর্মীদের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, মনিরুজ্জামান পাপ্পু, লিপি আক্তার, সৈকত আরিফ, সুমিত, সজীব, রাশেদ, তমা, উজ্জ্বল, রিমি, নাঈম, ইরফানসহ ২০ নেতাকর্মী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। জোটের সমন্বয়ক কাফী রতন জানান, হামলাকালে পুলিশের লাঠিপেটায় সাইফুল হক ও জোনায়েদ সাকীসহ ২০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তারা সবাই ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে গণতান্ত্রিক বাম জোট।
জোটের নেতাকর্মীরা অভিযোগে বলেন, মিছিল থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের রমনা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের নাম-পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, মিছিল থেকে চার-পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড
এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com