ই-পেপার বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

মেহেদী, হাসান, শান্তরাই বিপিএলের প্রাপ্তি
প্রকাশ: শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম আপডেট: ১৮.০১.২০২০ ১:০৪ এএম  (ভিজিট : ১৬৯)
শেষ হয়ে গেল আরেকটি বিপিএল। জৌলুসপূর্ণ এ ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি আসর থেকে কি পেল বাংলাদেশের ক্রিকেট? পেছন ফিরে তাকালে বিদেশি তারকাদের ভিড়ে দেশি তারকাদেরও উজ্জ্বলতা চোখে পড়বে বেশ। ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, আফিফ হোসেনরা যেভাবে পারফর্ম করেছেন, তা ছিল প্রশংসনীয়। তবে তা অপ্রত্যাশিত কিছু নয়।

জাতীয় দলে খেলা এই ক্রিকেটারদের এভাবে আলো ছড়াতে দেখতে চাই সবাই। তাই তাতে তেমন কোনো চমক ছিল না। তবে মেহেদী হাসান রানা, মেহেদী হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত আর হাসান মাহমুদের মতো তরুণ এই বিপিএলে যেভাবে পারফর্ম করেছেন, তাতে তাদের ঘিরে স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বড় প্রাপ্তি এই তরুণরাই।

বাংলাদেশ দলে ভালো মানের পেসারের অভাব শুরু থেকেই। মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোস্তাফিজুর রহমান আর রুবেল হোসেনকে বাদ দিলে দীর্ঘ সময় ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে জাতীয় দলকে সার্ভিস দিয়েছেন, এমন পেসার খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে এই বিপিএলে মেহেদী হাসান রানা আর হাসান মাহমুদ যেভাবে পারফর্ম করেছেন, তাতে আগামী দিনে তারকা হয়ে উঠার স্পষ্ট আভাসই পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১০ ম্যাচ খেলে ১৮ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী। প্রায় প্রতি ম্যাচেই দলকে ভালো শুরু এনে দিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। দারুণ লাইন এবং লেংথে বল করে গেছেন, বারবার পরীক্ষায় ফেলেছেন প্রতিপক্ষের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের।

ঢাকা প্লাটুনের হয়ে ১৩ ম্যাচ খেলে হাসান নিয়েছেন ১০ উইকেট। এবারই প্রথম বিপিএলে নাম লেখানো ডানহাতি এ পেসার নজর কেড়েছেন সবার। বয়স কম হলেও বোলিংয়ে ছিল পরিণতবোধের ছোঁয়া। গতির সঙ্গে বোলিংয়ে বৈচিত্র্যও আছে বেশ। ইয়র্কার ডেলিভারিতেও ভালো দক্ষতা আছে। এ তরুণের মধ্যে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন ঢাকার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। সঙ্গে এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে হলে হাসানের মতো প্রতিভাদের যথাযথভাবে পরিচর্যা করতে হবে। তাদের স্বপ্ন দেখাতে হবে, আবার সেই স্বপ্নটা যেন সামর্থ্যরে বাইরে না হয়, সেদিকেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

সালাউদ্দিনের দারুণ কৌশলেই এই বিপিএলে মেহেদী হাসানকে দেখা গেছে নতুন এক ভূমিকায়। মূলত অফস্পিনার তিনি। সেই ভূমিকাটা এই বিপিএলে ১২ উইকেট নিয়ে ভালোভাবেই পালন করেছেন। সেই সঙ্গে চমক দেখিয়েছেন ব্যাট হাতে। টপঅর্ডারে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে এমন ঝড়ো ব্যাটিং করেছেন, যা ছিল টি- টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য আদর্শ। দুর্দান্ত এক অলরাউন্ডারের ছবিই দেখা গেছে মেহেদীর মাঝে। খুলনা টাইগার্সের হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজও শেষদিকে এভাবেই নিজেকে মেলে ধরেছেন। তবে সব থেকে বেশি নজর কেড়েছে উদ্বোধনী জুটিতে তার সঙ্গী নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে কজন ক্রিকেটারকে ভবিষ্যৎ মনে করা হয়, শান্ত তাদেরই একজন। তবে জাতীয় দলে জায়গাটা পাকা করতে পারেননি এই বাঁহাতি। বঙ্গবন্ধু বিপিএলেও তার শুরুটা ছিল যারপরনাই হতাশার। প্রথম চার ম্যাচে করতে পেরেছিলেন মোটে ৬ রান। একাদশ থেকে ছিটকেও গিয়েছিলেন। পরে আবার ফিরে আসেন। বেরিয়ে আসেন দীর্ঘ হতাশার খোলস ভেঙেও। জ্বলে উঠেছেন চোখধাঁধানো ব্যাটিংয়ে। এবারের আসরে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে করেছেন সেঞ্চুরি। সেই ম্যাচে ৫৭ বলে অপরাজিত ১১৫ রানের ইনিংসের পর কোয়ালিফায়ারে ৫৭ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করেন শান্ত। দুটো ম্যাচে তার পারফরম্যান্স নতুন করেই ভাবতে বাধ্য করবে নির্বাচকদের।

সামনেই পাকিস্তান সফর। প্রথম দফায় ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ২২ জানুয়ারি ঢাকা ছাড়বে বাংলাদেশ দল। দুয়েক দিনের মধ্যেই সফরের দল ঘোষণা করবেন নির্বাচকরা। সেই দলে শান্তকে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বলার অপেক্ষা রাখে বিপিএলের পারফরম্যান্স দিয়ে মেহেদী-হাসানরাও থাকবেন নির্বাচকদের ভাবনায়।





সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close