সময়ের আলো সাক্ষাৎকার
নীলফামারী সদরকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা হবে
শাহিদ মাহামুদ চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা পরিষদ, নীলফামারী
আতোয়ার রহমান নীলফামারী
|
![]() শাহিদ মাহামুদ নীলফামারী শহরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মরহুম আজিম উদ্দিন আহমেদ আর মাতার নাম রওশন আরা বেগম। তিনি ১৯৮৬ সালে নীলফামারী সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিষয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেরেবাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শাহিদ মাহামুদ ছাত্রজীবন থেকেই এলাকার মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেন। এভাবে তিনি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য-২ আসাদুজ্জামান নূরের হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিতে পরিণত হন। নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের পর কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন জানতে চাইলে শাহিদ মাহামুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ভিশন-২০২১-২০৪১ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে নীলফামারী সদর উপজেলাকে অনুকরণীয় উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অডিটোরিয়াম নেই। আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে একটি ডিও লেটার নিয়ে উপজেলা এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর মাধ্যমে একটি অডিটোরিয়াম ও উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে একটি করে কমিউনিটি সেন্টার স্থাপনের জন্য প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়েছি। বর্তমানে গ্রাম এলাকায় কমিউনিটি সেন্টারের গুরুত্ব অনেক। দেখা যাচ্ছে গ্রাম এলাকায় বসতবাড়িগুলো ছোট হচ্ছে। কমিউনিটি সেন্টার না থাকার কারণে গ্রামের মানুষের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালনে অনেক অসুবিধা হয়। এ অবস্থায় আমি আমার উপজেলাবাসীর সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছি। নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ একটি বড় পরিষদ। আর এসব ইউনিয়নের পাকা রাস্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমি আমার উপজেলার মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও কৃষি ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। উপজেলা পরিষদের কর্মচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে আমি প্রতি মাসে ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ১৭টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সঙ্গে নিয়মিতভাবে মাসিক সমন্বয় সভা করে থাকি। আমি আমার উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের জন্য সরকারি ভিজিএফ, ভিজিডি ও ৪০ দিনের কর্মসৃজনসহ সব ধরনের প্রকল্পসমূহের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে কঠোর নজরদারি করে থাকি। উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিদ মাহামুদ বলেন, শিক্ষার প্রসারে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ চলমান যার প্রতিটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩.৫ কোটি টাকা। এ ছাড়াও ৩৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের নির্মাণকাজ চলছে, যার প্রতিটিতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়াও স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে। উপজেলায় ইতোমধ্যে শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত হাজিরা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল হাজিরা সিস্টেম চালুর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ও আধুনিক বিশে^ তাদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পাশাপাশি সুস্থ বিনোদনের জন্য খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে। উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০০টি সোলার সড়কবাতি স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা ও বয়স্ক ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা তদারকির মাধ্যমে চলমান রয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সামাজিক সংগঠন তৈরি করে প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় তরুণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সামাজিক আন্দোলন শুরু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা রয়েছে। |