প্রকাশ: সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম (ভিজিট : ১০২)
সারা দেশে শুদ্ধি অভিযান চলছিল। এ অভিযানে দুর্নীতিবাজদের তুলকালাম আধিপত্যে ভাটা পড়তে শুরু করেছিল। চুনোপুঁটি থেকে বাঘব-বোয়ালরাও লেজ গুটাতে শুরু করেছিল। হঠাৎ শুদ্ধি অভিযানে ভাটা পড়ায় দেশের মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়ে।
দৈনিক সময়ের আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন উদ্যমে শুরু হচ্ছে শুদ্ধি অভিযান। পার পাবে না রাঘব-বোয়াল থেকে চুনোপুঁটি কেউই। ক্যাসিনো কাÐে জড়িতরা ছাড় পাচ্ছে না। সাজার আওতায় আসবে নেপথ্যের গডফাদাররা। দুদক বলছে, দুর্নীতির জটিল বিষয় তদন্ত করে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করতে সংস্থাটির সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন পদে নতুন করে ২৮৮ জনকে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সারা দেশে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান ত্বরান্বিত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
বর্তমান সরকার নিজের দলের দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিয়ান শুরু করেছিল। অভিযান শুরু করার আগে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের অপকর্ম প্রচার করে। এবং তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি, মাদক, দুর্নীতিকে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন। তাতে দেশের মানুষের সায় রয়েছে। তার সুফল দেশের মানুষ পেতে শুরু করেছিল। এ শুদ্ধি অভিযানে জুয়াড়ি, মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, দুর্নীতিপরায়ণ সন্ত্রাসীরা ধরা পড়তেও শুরু করেছিল। এ সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজরা দুটি বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পতাকা তলে আশ্রয় নেয় এবং তাদের নেতাকর্মী সাজে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তারা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী। আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বনে যায়।
এদের কোনো আদর্শ নেই। একমাত্র উদ্দেশ্য সন্ত্রাস ও দুর্নীতির পথে ধনসম্পদের মালিক হওয়া। আইন নিজস্ব গতিতে চলার কথা এবং কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ব্যত্যয় ঘটল কেন? এটা অনুমান করতে অসুবিধা হয় না, ব্যর্থতার মূলে আছে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও রাজনীতিকের ব্যক্তিগত লোভের দুর্বার তাড়না। তারাও এ দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের সুবিধাভোগী। তারাই এদের গডফাদার তথা আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতা। তা ছাড়া দেশে আইন আছে, নিয়ম-কানুন আছে, সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব-কর্তব্য নির্ধারিত আছে। কঠোরভাবে তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন-এটাই সবার প্রত্যাশা। আমরা চাই, অভিযান দীর্ঘমেয়াদি হবে এবং এর বিচার প্রক্রিয়ায় আলাদা ট্রাইব্যুনালও হতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন, এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিকিউরিটি ইউনিটসহ বেশকিছু সরকারি সংস্থা এ অভিযানে যুক্ত হতে পারে। অভিযুক্তদের বিষয়ে ধারাবাহিক অনুসন্ধানসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পাদন করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।
দেশের সাধারণ মানুষ চায় বর্তমান এ শুদ্ধি অভিযান চলমান থাকুক। সংশ্লিষ্টরা শুদ্ধি অভিযান নতুন করে শুরু করতে যাচ্ছে। যা দেশের জন্য সুসংবাদ। আমরা, শুদ্ধি অভিযান চলমান রাখতে যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা দ্রæত নিরসন প্রয়োজন। অভিযান চলমান থাকলে, মনে করি দুর্নীতি করতে কেউ সাহসী হবে না। দেশের মানুষের সঙ্গে আমাদেরও সেটাই প্রত্যাশা।