ই-পেপার শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্বজনদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম  (ভিজিট : ১৭০)
ব্যবহার মানুষের পরিচয় বহন করে। যাদের আচরণ সুন্দর, ব্যবহার ভদ্র ও মাধুর্যপূর্ণÑ চারপাশের লোকজনও তাদের পছন্দ করে। সর্বাবস্থায় তাদের পাশে থাকে। একজন মানুষের আসল চরিত্র কেমন সে সম্পর্কে তার পরিবার ও স্বজনরাই ভালো অবগত থাকে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও এর
স্বীকৃতি দিয়েছেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি সর্বাধিক উত্তম, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম।’
(তিরমিজি : ১৯৭৭)
স্ত্রীদের সঙ্গে যার আচার-ব্যবহার যত বেশি সুন্দর হবে সে তত বেশি কল্যাণের অধিকারী হবে। চরিত্র ও আচার ব্যবহার যেমন পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়ার অন্যতম গুণ, তেমনি স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম ব্যবহারও কল্যাণের অধিকারী হওয়ার আলামত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ঈমানদারদের মধ্যে সবচেয়ে পরিপূর্ণ মুমিন ওই ব্যক্তি, যার চরিত্র সবচেয়ে ভালো। আর তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিপূর্ণ কল্যাণের অধিকারী ওই ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীদের সঙ্গে আচার-ব্যবহারে সবচেয়ে ভালো।’ (মুসনাদে আহমাদ : ২/৪৭২)। ঘরের ভেতর সবার সঙ্গে সবসময় নরম-কোমল ব্যবহার করা। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, সবচেয়ে পরিপূর্ণ ঈমানদার ওই ব্যক্তি, যে তার পরিবার-পরিজনের সঙ্গে অধিক নরম ও কোমল হয়।’ (তিরমিজি : ২৬১২)
সংসারে নিত্যদিনের জীবনযাত্রায় অনেক সময় রাগ-অভিমান অস্বাভাবিক নয়। এমন মুহূর্তে ধৈর্য ধারণ করা। ঘরের সদস্যদের প্রহারে উদ্যত না হওয়া। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ঘরের ভেতর কখনও কাউকে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করেননি। তার কোনো স্ত্রী ও সেবক-গৃহকর্মীকেও প্রহার করেননি। শুধু তিনি আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করেছিলেন। কারও থেকে কখনও প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। কিন্তু আল্লাহর অসম্মানী করা হলে, তখন আল্লাহর জন্য প্রতিশোধ নিয়েছেন।’ (হাদিস : ২৩২৮)। এমনকি রাসুল (সা.) ঘরের লোকদের কাজে ভুল হলে সামান্য বিরক্তি পর্যন্ত প্রকাশ করতেন না। এ সম্পর্কে হজরত আনাস (রা.) নিজেই বলেছেন, ‘আমি ১০ বছর ধরে রাসুল (সা.)-এর খেদমত করেছি। আল্লাহর কসম! তিনি কোনো দিন আমাকে বকা দেননি। কোনো দিন ‘উফ’ শব্দটিও বলেননি। কখনও বলেননি, এ কাজটি কেন করেছ? এ কাজটি কেন করনি?’ (বুখারি : ৬৪৩০)
মানুষ মাত্রই ভুল হওয়া স্বাভাবিক। তাই ঘরের লোকদের থেকে কোনো ভুল হয়ে গেলে ক্ষমা করে দেওয়া চাই। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একবার এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ঘরের লোকদের আমরা আর কত ক্ষমা করব? নবীজি তখন চুপ করে থাকলেন। সে ব্যক্তি আবারও একই প্রশ্ন করলেন। এভাবে তিনবার প্রশ্ন করার পর রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাদের দৈনিক ৭০ বার করে ক্ষমা করবে।’ (আবু দাউদ : ৪৪৯৬)
সুযোগ হলে সময়ে সময়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাইরে ঘোরাফেরা ও খেলাধুলারও অবকাশ রয়েছে। নবীজি (সা.) মাঝেমধ্যে স্ত্রীদের নিয়ে বাইরে যেতেন। হাসান-হুসাইনকে (রা.) কোলে নিয়ে খেলতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘একবার একটি জনমানবহীন নির্জন উপত্যকায় নবী (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। নবীজি (সা.) আমার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করলেন, আমি তার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করে তার আগে চলে গেলাম। পরবর্তীতে আরেকবার তার সঙ্গে আবারও দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম। এবার তিনি আমাকে পেছনে ফেলে দিয়ে বিজয়ী হলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এ বিজয় সেই বিজয়ের বদলা। (আবু দাউদ : ২৫৭৮)। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মুসলমানের জন্য সব খেল-তামাশা নিষিদ্ধ, তবে তীর-ধনুক চালনা, ঘোড়া চালনা, স্বামী-স্ত্রী পরস্পরে রসিকতাÑ এসব নিষিদ্ধ নয়, কেননা এসব উত্তম ও ন্যায়সঙ্গত।’ (তিরমিজি : ১৬৩৭)






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close