ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীরা আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। দেশে বা বিদেশে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা তাদের অপরাধ জগৎ তথা আন্ডারওয়ার্ল্ড গোছাতে কাজ শুরু করেছে বলেও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। তারা অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নিজেদের বিশ^স্ত সহযোগীদের কাজে লাগাচ্ছে। এছাড়া নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে ‘প্রতিনিধি’ নিয়োগ করছে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীরা। এরই মধ্যে গত শনিবার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মাজহারুল ইসলাম শাকিল ওরফে শাকিল মাজহারকে গ্রেফতারের পর র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের বেরিয়ে এসেছে প্রায় অভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার-বিন-কাশেম সময়ের আলোকে বলেন, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের মধ্যে বর্তমানে এক ধরনের তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। তারা নিজেদের গ্রুপ বা এলাকাভিত্তিক প্রভাব বিস্তারের পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। তাদের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করতে র্যাবের গোয়েন্দারা সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কোথাও কোনো অপকর্ম ঘটাতে গেলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান র্যাবের এই মুখপাত্র।
বাংলাদেশ পুলিশের ওয়াবসাইটে গতকালও দেখা গেছেÑ বাংলাদেশ পুলিশের ‘ওয়ান্টেড’ হিসেবে জারিকৃত নোটিস অনুসারে অন্তত ১৯ বাংলাদেশি শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ও ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছেÑ টোকাই সাগর, মানিক, আগা শামীম, পিচ্ছি হেলাল, সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, আরমান, কামাল পাশা, কিলার আব্বাস, মুন্না, প্রকাশ, ইমাম হোসেন, ফ্রিডম রসু, হারিস, জয়, ফ্রিডম সোহেল, টিটন ও কালা জাহাঙ্গীর অন্যতম। যদিও এর মধ্যে কেউ কেউ মারা গেছে বলেও বিতর্ক রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এসব ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীরা বেশ কয়েক বছর ধরেই পাশর্^বর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছে। তবে বিদেশে পালিয়ে থাকলেও তাদের অনেকেরই নামে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় নিয়মিত চাঁদাবাজি হয়ে আসছে।
একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ওইসব ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীর বিশ^স্ত সহযোগীরা কখনও কখনও মাথাচাড়া দিয়ে
ওঠার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে এলাকাভিত্তিক বিভিন্নভাবে তারা চাঁদাবাজির চেষ্টা চালায়। অন্যদিকে একশ্রেণির ছিঁচকে মাস্তান বা প্রতারকও শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ব্যবহার করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে থাকে। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক মনিটরিং ও কঠোর পদক্ষেপের কারণে পেশাদার সন্ত্রাসীরা খুব বেশি প্রকাশ্যে তৎপরতা চালাতে পারছে না বলেও জানান কর্মকর্তারা।
কিছুদিন আগে দুবাইয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান গ্রেফতারের খবর প্রকাশ করা হয়। তবে এ নিয়ে ধূম্রজাল এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই গত শনিবার জিসানের সহযোগী শাকিল গ্রেফতার হলে বিষয়টি নিয়ে আবার নতুন হিসাব কষতে শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শাকিলকে গ্রেফতারের পর র্যাব জানিয়েছিল, শাকিল জিসানের সহযোগী। জিসানের নির্দেশ ও সহযোগিতায় বাংলাদেশ সন্ত্রাসী কার্যক্রম নতুনভাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শাকিল দেশে আসে। গত জানুয়ারিতে দুবাই থেকে দেশে আসে শাকিল। দেশে ফিরে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন সে। ওই হাসপাতালে থেকেই সে নানা ধরনের পরিকল্পনা করে আসছিল বলে র্যাব জানায়।