প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০২০, ১১:০৪ পিএম আপডেট: ২৬.০৩.২০২০ ১২:০৫ এএম (ভিজিট : ১৭৪)
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রফতানিমুখী শিল্পের জন্য ৫
হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের ঘোষণা দিয়েছেন। এই অর্থ শ্রমিকদের মজুরি
প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যয় করা যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর
এই ঘোষণায় স্বস্তি এসেছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের মনে। শিল্প মালিকরা
বলছেন, এ দুর্যোগের সময় প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা আমাদের সাহস জুগিয়েছে। এ
বিষয়ে বিকেএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সময়ের আলোকে বলেন,
করোনাভাইরাস যখন পোশাক শিল্পের গলা টিপে ধরেছে, একের পর এক রফতানি আদেশ
বাতিল হওয়ায় শিল্প মালিকরা যখন দিশেহারা তখন প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা আমাদের
সাহস জুগিয়েছে। তিনি তার ভাষণে বলেছেন, ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা
প্যাকেজ দেবেন এবং এ অর্থ শ্রমিকদের মজুরি প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যয় করা হবে।
এটিই আমাদের বড় কাজে আসবে। কারণ আমরা শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার বিষয়টি নিয়েই বেশি চিন্তিত ছিলাম। অন্যদিকে
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের রফতানি
আদেশ বাতিলের পরিমাণ বাড়ছেই। বুধবার পর্যন্ত ২৫৮ কোটি মার্কিন ডলার
মূল্যের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ
রাখার জন্য সরকার থেকে ঘোষণা দেওয়া হলেও পোশাক কারখানা খোলা বা বন্ধ রাখা
হবেÑ এ নিয়ে নির্দেশনা চেয়েছে তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন তৈরি পোশাক
প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
বুধবার বিজিএমইএ পরিচালক ও
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। অন্যদিকে
বুধবার তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৯৩৬টি কারখানার
৮০ কোটি পোশাক পণ্যের অর্ডার বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। যার মূল্য ২৫৮ কোটি
ডলারের বেশি। ১৯ লাখ ২০ হাজার শ্রমিক এসব কারখানায় কাজ করে।
জানতে চাইলে
আসিফ ইব্রাহিম বলেন, কারখানা বন্ধের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা এখনও
দিকনির্দেশনা পাইনি। এ ছাড়া গত মঙ্গলাবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে
বিবৃতিতে তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রাখা হবে কি না, এ নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট
তথ্য না থাকায় বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দিকনির্দেশনা
চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস
ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানসহ বৃহৎ অর্থনীতির সব দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের
পোশাক রফতানির বড় অংশই যায় ইউরোপে। ইতালি ও জার্মানিসহ কয়েকটি দেশে এরই
মধ্যে করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করেছে। অনেক জায়গাতেই বন্ধ করে দেওয়া
হয়েছে দোকান। কমেছে স্থানীয় কিংবা আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের পরিসর। বেশি
আক্রান্ত স্থানগুলোতে বিভিন্ন ব্র্যান্ড নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গুটিয়ে
নিয়েছে তাদের আউটলেট। এমন অবস্থায় ক্রেতারা বাতিল করছেন ক্রয়াদেশ। আর এতে
ভয়াবহ সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে তৈরি পোশাকশিল্প।
বিজিএমইএ সভাপতি বর্তমান
পরিস্থিতিকে ভয়াবহ অবস্থা আখ্যা দিয়ে তৈরি পোশাকশিল্পের সব ক্রেতাকে এ সময়
পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে বর্তমান সঙ্কটময় পরিস্থিতিতেও শ্রমিকদের
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক।