প্রকাশ: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ৮:৫৫ পিএম (ভিজিট : ১০২)
ট্রেড বেইসড মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।
বুধবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
নজরুল ইসলাম মজুমদার এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সাবেক সভাপতি।
বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানান, নজরুল ইসলাম মজুমদারের মালিকানাধীন নাসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ফিরোজা গার্মেন্টস লিমিটেড ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড থেকে ১৩০টি এলসি/সেলস কন্ট্রাক্ট (বিক্রয় চুক্তি) নেয়। এসব এলসির বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানি করে নির্ধারিত সময় চলে যাওয়ার পরও রফতানি মূল্য বাবদ প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশে আনেনি। এই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের তথ্য-প্রমাণ সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
তিনি আরও জানান, যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচারের মাধ্যমে লন্ডনের ফিলিমোর গার্ডেন এবং ব্রান্সউইক গার্ডেনে তার কন্যা আনিকা ইসলামের নামে বাড়ি কেনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বন্ড সুবিধার আওতায় বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাঁচামাল এনে সেই পণ্য দেশীয় খোলা বাজারে বিক্রি করে শত শত কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে।
সিআইডি জানায়, এছাড়াও নিজের ব্যক্তিগত ক্ষমতা ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নাসা গ্রুপের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট চারটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে আমদানি ও রফতানির আড়ালে আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা দুবাই, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচারের অভিযোগে নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটে পৃথক একটি অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান আছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় নিহত যুবক ইমন হোসেন গাজী নামের একজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
বুধবার তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহাবুল ইসলাম। অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ডের আবেদন বাতিল পূর্বক জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান জামিনের আবেদন নাকচ করে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সময়ের আলো/এম