প্রকাশ: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:৪১ পিএম (ভিজিট : ১৬৬)
নওগাঁ সদর উপজেলার হাসাইগাড়ী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে প্রায় একমাস ধরে ৯টি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে স্থানীয় হাসান মল্লিকসহ প্রভাবশালী কিছু মাতব্বরেরা। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো কোন প্রতিকার পায়নি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রাস্তার ধারে লাউ-কুমড়ার গাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে ছাগলকে মারধর করায় শুরু হয় ঘটনার সূত্রপাত। বেলাল মল্লিকের লাউ কুমড়ার গাছ খাওয়ায় মারধর করে বেলাল মল্লিক। তাতে ছাগলটির একটি পা জখম হয়। সে কারণে ছাগলের মালিক হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে বেলাল মল্লিককে মারধর করে এবং স্থানীয় কিছু কুচক্রী মাতববরের পরামর্শে বেলাল মল্লিকসহ তার পার্শ্ববর্তী আত্মীয়-স্বজনসহ ৯টি পরিবারের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তার তিনদিকে বেড়া দিয়ে গৃহবন্দী করে দেয়। বেলাল মল্লিক নিরুপায় হয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিদর্শন করলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই চলে যায়। এতে হাসান মল্লিক আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। বেলাল মল্লিক রাত সাড়ে ১০টা সময় বিলের মধ্যে মাছ ধরতে গেলে সেটি টের পেয়ে হাসান মল্লিকসহ জব্বার, দুলাল এবং তাদের পরিবারের মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে বেলাল মল্লিককে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে এবং মারধর করে বেলাল মল্লিককের অন্ডকোষ চেপে ধরে। পানির মধ্যে শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। বেলাল মল্লিক বিষয়টি বুঝতে পেরে, শরীরের সকল শক্তি দিয়ে পানি থেকে উঠে ডাক-চিৎকার দিতে দৌড়াতে থাকে এবং এক সময় গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করে পিন্টুর বাড়ির সামনে এসে পড়ে যায়। রাতেই বেলাল মল্লিককে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে বেলাল মল্লিক ও তার স্ত্রী জানায়, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মেরে ফেলার মত তারা সিদ্ধান্ত নেয়। গত একমাস যাবত আমরা অবরুদ্ধ অবস্থায় আছি। থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বর্তমানে তারা চাঁদা দাবিও করছে। চাঁদার টাকা না দিলে, এইবার আর বেঁচে থাকার সুযোগও দেবে না বলে হুমকি দিচ্ছে। তাই আমরা বাড়িও যেতে পারছিনা। আমরা প্রশাসনের কাছে আইনগত সহযোগিতা চাই।
হাসান, জব্বারের কাছে জানতে চাইলে বলেন, মাতব্বরের হুকুমে আমরা বেড়া দিয়েছি। তাদের অনুমতি ছাড়া বেড়া কখনোই সরাবনা। তাছাড়া আমার ছাগলের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
স্থানীয় মাতব্বর আক্কাস আলী জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটেছে যা স্থানীয় ভাবে মীমাংসা করা সম্ভব ছিল। তবে বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করার বিষয়ে আমরা কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে নওগাঁর ভীমপুর পুলিশ ফাঁড়ির তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরির্দশক জামাল উদ্দীন জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, বেড়া সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত যে বেড়া সরিয়ে নেওয়া হয়নি তা আমার জানা নেই। পার্বতীতে কেউ আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।
সময়ের আলো/আরআই