অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ডিমের দাম। ঢাকার বাজারে এখন এক ডজন ডিমের দাম ১৮০ টাকায় ঠেকেছে। অর্থাৎ একটি ডিমের দাম ১৫ টাকা, এক হালি ৬০ টাকা। অথচ এক সপ্তাহ আগেও ডিমের ডজন ছিল ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। সুতরাং এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডজন প্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজরে ডিমের সরবরাহ কম-এ জন্যই দাম বাড়ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডিমের কোনো সংকট নেই, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের বাদামি রঙয়ের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা ডজন, ১৫ টাকা পিস। এছাড়া সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়; গত সপ্তাহেও যা ছিল ১৬০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে উভয় ধরনের ডিমের দামই ডজনপ্রতি ১০-১৫ টাকা করে বেড়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ডিম বিক্রেতা কবীর মিয়া বলেন, পাইকারি বাজারে ডিমের সরবরাহ কম। এ কারণে বাড়তি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরা পর্যায়েও ডিমের দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, পাইকারি বিক্রেতার কাছ থেকে প্রতি পিস ডিম ১৩ টাকায় কিনেছি। পরিবহন ও অবচয় খরচ যোগ করে প্রতিটির মূল্য পড়ছে ১৪ টাকা। এতে প্রতি ডজনের দাম দাঁড়ায় ১৬৮ টাকা। বিক্রি করছি ১৫ টাকা পিস, ৬০ টাকা হালি। আর কেউ এক ডজন নিলে ১৭৫ টাকা রাখছি।
পণ্য বিক্রয়কারী সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক বছরে ডিমের দাম ১৩ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত জুলাইয়ে ডিমের ডজন ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। আগস্টে অপরিবর্তিত থাকলেও সেপ্টেম্বর মাসে ডিমের দাম বাড়তে থাকে। মাস শেষ হতেই তা ১৭০ টাকায় দাঁড়ায়।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরসূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ফার্মের মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির ডিমের যৌক্তিক দাম ১৪২ টাকা ডজন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে বাজারে ওই মূল্যের চেয়ে ডজনে ২৩ থেকে ২৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম।
ডিমের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সরকারের কোন প্রতিষ্ঠান বা সহযোগিতা না থাকায় প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিরা ডিমের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। ফলে দিন দিন খামারির সংখ্যা কমছে। ডিমের যারা সিন্ডিকেট আছে তারা ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণ করে। সেই সিন্ডিকেট এখনো ভাঙতে পারেনি সরকার।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ এগ প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, কয়েক দিনের বৃষ্টির পর অতিরিক্ত গরম পড়ায় ডিমের উৎপাদন কমেছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমে ডিমের দাম বেড়েছে।
বাজারে ডিমের দাম অনেক দিন ধরেই বাড়তি রয়েছে। যেমন গত জুলাই মাসের অধিকাংশ দিনেই খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। আগস্টেও দাম মোটামুটি এ রকমই ছিল। তবে সেপ্টেম্বর মাসে ডিমের দাম বাড়তে থাকে। মাসের শেষে এসে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৭০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। পণ্য বিক্রয়কারী সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক বছরে ডিমের দাম ১৩ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ফার্মের মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির ডিমের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। তাতে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৪২ টাকায় বেঁধে দেওয়া হয়। অর্থাৎ এখন সরকারের নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্যের চেয়েও ডজনে ২৩ থেকে ২৮ টাকা বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে।
সময়ের আলো/এম