রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে অন্তর্বর্তী সরকার যে ছয় কমিশন করেছে সেগুলোর মধ্যে পাঁচটি পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ পাঁচটি কমিশনে একজন করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুদক ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচটি কমিশনের সদস্যদের নামসহ আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনগুলো গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তবে সংবিধান সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এর আগে ছয় সংস্কার কমিশনের প্রধানদের নাম আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ৯০ দিনের মধ্যে কমিশন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে।প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনে পৃথকভাবে এসব প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কমিশন প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যক্তিকে কমিশনের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা করবে।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনে যারা :
নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনে আরও সাতজনকে সদস্য করা হয়েছে।
সদস্যরা হলেন-স্থানীয় সরকার ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ তোফায়েল আহমেদ, নির্বাচনব্যবস্থা, ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিশেষজ্ঞ ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মো. আবদুল আলীম, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও ওপিনিয়ন মেকার জাহেদ উর রহমান, শাসন প্রক্রিয়া ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিভিন, ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ সাদেক ফেরদৌস এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
বিদ্যমান নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করে দেশে জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেবে এ কমিশন।
পুলিশ সংস্কার কমিশনে যারা :
জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার কাজের জন্য সুপারিশ করবে পুলিশ সংস্কার কমিশন। এ কমিশনের প্রধান সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেন।
সদস্যরা হলেন-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজি শেখ সাজ্জাদ আলী, পুলিশের ডিআইজি মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকার কর্মী (বেসরকারি সংস্থা অধিকারের কর্মকর্তা) এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে যারা :
কমিশনের প্রধান হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী দায়িত্ব পালন করবেন।
সদস্যরা হলেন-সাবেক সচিব মোহাম্মদ তারেক, সাবেক সচিব মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া, বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব রিজওয়ান খায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএ ফিরোজ আহমেদ এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনে যারা :
আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান। আর সদস্যরা হলেন-হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার সাইয়েদ আমিনুল ইসলাম, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মাজদার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী তানিম হোসেন শাওন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
বিচার বিভাগ স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব করার জন্য বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে।
দুদক সংস্কার কমিশনে যারা :
দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে রয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। আর সদস্যরা হলেন-সাবেক কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল মাসুদ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ অধ্যাপক মোবাশে^র মোনেম, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের (সোয়াস) অর্থনীতির অধ্যাপক মোস্তাক খান, ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারজানা শারমিন এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।