প্রকাশ: সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৪, ৩:০৯ এএম (ভিজিট : ২৪৬)
আশার বেলুন চুপসে গেছে আগেই। পাকিস্তান থেকে যে আত্মবিশ্বাস পুঁজি করে এনেছিল টিম বাংলাদেশ, দুই টেস্টের সিরিজেই তা শেষ। ভারতের মাটিতে ব্যাটিং বিভাগের পারফরম্যান্স এতটাই তথৈবচ যে আড়াই দিনে নেমে আসা দ্বিতীয় টেস্টেও হার এড়ানো যায়নি। ধবলধোলাইয়ের লজ্জায় ডুবতে হয়েছে। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও লজ্জায় ডুবিয়েছে ব্যাটিং বিভাগ। গোয়ালিয়রে ১২৭ রানেই অলআউট টিম বাংলাদেশ।
এই রান নিয়ে ভারতের শক্তিধর ব্যাটিং লাইনআপের সঙ্গে টক্কর দেওয়া যাবে না সেটা অনুমিতই। কিন্তু ব্যাটাররা যা করেছেন তা চরম হতাশার। দুই সপ্তাহ ভারতে কাটিয়ে দেওয়ার পরও সেখানকার উইকেট এবং আলো-বাতাসের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া যায়নি, এমন অজুহাত দেওয়ার সুযোগ অন্তত টাইগারদের নেই। তাই তারা যে পারফরম্যান্স রোববার দেখিয়েছে, সেটা তাদের সামর্থ্যকেই করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। অত আহামরি কোনো বোলিং আর্শদীপ সিং-বরুণ চক্রবর্তীরা করেননি, যা খেলা সম্ভবপর ছিল না। অভিষিক্ত মায়াঙ্ক যাদবের প্রথম বলেই যেভাবে তেড়েফুঁড়ে শট খেললেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তা দৃষ্টিকটুই।
ভারতীয় বোলাররা কৃতিত্বের দাবিদার, তবে তাদের কৃতিত্বপূর্ণ পারফরম্যান্সের নেপথ্যে মূল কৃৃতিত্বটা টাইগার ব্যাটারদেরই। কেবল মাহমুদউল্লাহই নন, অতিথি শিবিরের বেশিরভাগ ব্যাটারই বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন নিজের উইকেট। শুরুর দিকে অধিনায়ক শান্ত এবং তারপর মেহেদী হাসান মিরাজ ছাড়া লড়াইয়ের ন্যূনতম মানসিকতাও দেখা যায়নি অন্যদের মাঝে। হাল ধরে দলকে বিপদ থেকে তারা উদ্ধার করবেন কী, এলোমেলো শট খেলে উল্টো বিপদ আরও বাড়িয়েছেন। শান্ত ২৭ রানে বিদায় নেওয়ার পর তাই মিরাজের একার লড়াইটা কাজে আসেনি।
৩৩ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে মিরাজ জানিয়ে দিয়েছেন, সাকিবের বিকল্প হিসেবে তাকে যে দলে নেওয়া হয়েছে এবং ওই তারকার অভাব পূরণে তিনি যে পারঙ্গম, তা ভালোমতোই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে সাকিব জমানার পর নতুন অধ্যায়ে টিম বাংলাদেশকে কঠিন চ্যালেঞ্জই সামলাতে হবে, সেটাও পরিষ্কার করে বলে দিয়ে গেছে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিটা। দুই যুগেরও বেশি সময় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কাটিয়ে দেওয়ার পর এমন পারফরম্যান্স চরম হতাশারই। যাদের ভাবা হচ্ছে আগামী দিনের কাণ্ডারি, তারাই যেন মাঝ সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছেন!
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে বাধ্য হওয়ার পর যেমন শুরু প্রত্যাশা ছিল, তা মেটাতে পারেননি লিটন দাস আর প্রথমবার তার সঙ্গে জুটি বাঁধা পারভেজ হোসেন ইমন। এশিয়ান গেমসে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন ইমন, ওটাকে আইসিসি স্বীকৃতি না দিলে এ দিনই অভিষেক বাঁহাতি ওপেনারের। বড় বড় শট খেলার ক্ষেত্রে তার সুনাম আছে। তিনিই কি না এ দিন ৮ রান করে আউট হওয়ার আগে খেলে ফেললেন ৯ বল। তাওহীদ হৃদয় ১২ রান করতে খেলেছেন ১৮ বল। একটি করে ছক্কা হাঁকানোর পরই যেন জাকের আলী আর রিশাদ হোসেনরা ধরে নিয়েছিলেন তাদের কাজ শেষ!
ব্যাটারদের এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের ধারা যদি অব্যাহত থাকে তা হলে সামনে আরও দুর্ভোগই টাইগারদের অপেক্ষায়।
সময়ের আলো/আরএস/