ই-পেপার সোমবার ৪ নভেম্বর ২০২৪
সোমবার ৪ নভেম্বর ২০২৪

আমি কোনো দুর্নীতি করিনি : মাদকের ডিজি
প্রকাশ: সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৪, ৭:৫৮ পিএম  (ভিজিট : ১৮৮)
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান নিজেই। তিনি দাবি করেছেন, কোন দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন এবং কখনো দুর্নীতি করেন-ই নি তিনি। 

সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিএনসি’র সদরদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন দাবি করেন অধিদফতরের ডিজি।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে আপনি দুইটি জেলায় ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেসব জায়গায় আপনার বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারাও আপনার বিরুদ্ধে নানা সময় অভিযোগ করেছে- এবিষয়ে কি বলবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি আগে যেসব জায়গায় কাজ করেছি বা দায়িত্ব পালন করেছি, সেসব জায়গায় আমার বিরুদ্ধে বিন্দু পরিমান দুর্নীতির কোন অভিযোগ নেই। কেউ বলতে পারবে না আমি ঔসব জায়গায় দুর্নীতি করেছি। একজন লোকও এই কথা বলতে পারবে না। ওইসব জায়গায় আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করেছি।’ 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পূর্বে যেসব জায়গায় দায়িত্ব পালন করেছিলেন সেসব জায়গায় সাংবাদিক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন, কেন? এমন প্রশ্ন করার পরই ডিজি খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা, আমি এই ধরনের কোন নিষেধাজ্ঞা দেইনি’।  

রাজউক এবং গৃহায়নের কাছ থেকে একটি করে মোট দুটি প্লট নিয়েছেন। দুটি প্লট কীভাবে নিয়েছেন? এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলে ডিজি বলেন, ‘আমি এই প্লট গুলো অনিয়ম করে নেইনি। নিয়মের মধ্য থেকেই নিয়েছি। আমি সরকারি নিয়ম নীতি মেনে প্লটের জন্য আবেদন করেছি’। একজন সরকারি কর্মকর্তা দু’টি প্লট পায় কিনা? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সবকিছু নিয়মের মধ্য থেকেই করেছ’।

অভিযানে জব্দ মাদকের সংখ্যা কমিয়ে দেখাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, এমন কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা? জানতে চাইলে অধিদফতরের ডিজি বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর এমন চারটি অভিযোগ পেয়েছি। পরে একটি কমিটি গঠন করেছি, এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে কমিটি তদন্ত করছে। কুষ্টিয়াতে আমাদের কর্মকর্তার এমন একটি অভিযোগ পেয়ে সেটি আমরা তদন্ত করেছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছ’।  

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পর বহন নিয়ে টুঙ্গীপাড়া ফুল দিতে গিয়েছিলেন বর্তমান ডিজি খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। কেন গিয়েছিলেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওই সময় যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা সবাই সেখানে গিয়েছে। কে যায়নি, সাংবাদিকরা সেখানে গিয়েছে। আমি ঐদিন টুঙ্গীপাড়ায় একটি মাদকবিরোধী সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছিলাম’। অধিদফতরে শেখ কামালের জন্মদিন পালন করা হয়েছিলো। এবিষয়ে কোনো অফিস আদেশ ছিলো কী? জানতে চাইলে ডিজি বলেন, ‘শেখ কামালের জন্মদিন পালন করা হয়নি’। 

গুলশান সার্কেলের মাদকের পরিদর্শক সুমন রহমান এর দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অধিদফতরর কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে? উল্টো তাকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে মানিকগঞ্জে। তার শাস্তি কি হলো? এই প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, ‘গুলশান থেকে মানিকগঞ্জ এটা কি ভালো পোস্টিং হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আমরা তদন্ত করছি। পোস্টিং কোন শাস্তি না’। দিন দিন মাদক সেবীদের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু আপনারা কার স্বার্থ রক্ষা করার জন্য মন্ত্রণালয়ে মাদক ব্যবসায়ী এবং সেবীদের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না কোন সংখ্যা কমানো হয়নি। একই ব্যক্তি একাধিক বারের মালিক হতে পারে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নিয়ম মেনে কোন ব্যক্তি যদি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় বার স্থাপন করতে চায় তাহলে সেটি সম্ভব, এখানে কোন আইনি বাধা নেই’। রাজধানীতে বৈধ বারের তুলনায় অবৈধ বারের সংখ্যা বেশি, এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ অবৈধভাবে মাদক বিক্রি করতে পারবে না। এ বিষয়ে আমরা সবসময় কাজ করি’। 

এর আগে, সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ডিজি খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের প্রতি একটি অভিযোগ রয়েছে- আমরা শুধু ছোট মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করি বা আইনের আওতায় আনি। তবে এটি ঠিক নয়। আমরা শুধু ছোট মাদক কারবারি না বড় মাদক কারবারিদেরও আইনের আওতায়ন আনি।  তবে আমাদের সব লোকজন যে ফেরেশতা তা বলি না। আমাদের মধ্যেও কিছু অসৎ ও খারাপ লোক আছে। এই ধরনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করব। কাউকে কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। জিরো টলারেন্স নীতিতে আমরা মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করি। তিনি বলেন, অধিদফতরের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি-অপকর্মের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে অপরাধীর পরিচয় শুধু অপরাধী, সে যেই হোক না কেন। কারো বিরুদ্ধে আমাদের বিন্দুমাত্র সহানুভূতি নেই। যারা এই ধরনের অপকর্ম বা দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। 

তিনি আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিশেষ  অভিযান পরিচালনা করে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত  ৫ হাজার ২৬৪ টি  অভিযান পরিচালনা করে  ১ হাজার ১৯৮ টি মামলা দায়ের পূর্বক ১ হাজার ২৯৯  জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে করেছে। গ্রেফতারদের মধ্যে  ১১ জন গডফাদারসহ ৮৯ জন শীর্ষ মাদক কারবারি রয়েছেন। অভিযান পরিচালনাকালীন সময়ে ৩ লাখ ৯ হাজার ১০১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩.৭৬০ কেজি হেরোইন, ১.১ কেজি আইস, ৩৭৭৪ বোতল ফেন্সিডিল, ২৪১৬ বোতল বিভিন্ন ব্রান্ডের বিলাতি মদ, বিয়ার- ২৪১৬ ক্যান, টাপেন্টাডল ট্যাবলেট- ৫৭৯১ পিস, চোলাই মদ ১৩৮০ লিটার, ৬৬৪.২ কেজি গাঁজা, ইনজেকশন ৪২২২ এমপুল, শটগান-০১ টি, গুলি ৫১ রাউন্ড, বিভিন্ন যানবাহন- ৯টি এবং নগদ অর্থ ২১ লাখ ১১ হাজার ৭৮০ টাকা উদ্ধার ও জব্দ করা হয়।

সময়ের আলো/জেডআই




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close