গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বস্তরের যে বিষয়টি আলোচিত তা হলো আমাদের রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণ। যদিও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর অনেকেরই ধারণা ছিল হয়তো রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন নিজেই নিজেকে সব সমালোচনার ঊর্ধ্বে রেখে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে নিজের আত্মমর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখবেন। কিন্তু আমরা আর তেমনটি দেখলাম না। এখন দেখছি রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কমতি নেই। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমেছেন।
মাঝরাতের সেই আন্দোলনকে থামাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাউন্ড গ্রেনেড পর্যন্ত নিক্ষেপ করতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যা এই মুহূর্তে দেশবাসীর কারোই কাম্য নয়। কারণ বর্তমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফসল অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে আছেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপাকে ফেলতে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার দেশি-বিদেশি দোসররা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সদ্য নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক ২৩ অক্টোবর এইচএসসি পরীক্ষার ফল বাতিলের দাবিতে জোরপূর্বক সচিবালয়ে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন আওয়ামী জোট সরকার কর্তৃক মনোনীত রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে তিনি ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ, এরপর দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ছিলেন। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ কর্তৃক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দখল হওয়ার পর বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনকে ব্যাংকটির পরিচালক করা হয়েছিল পরে তিনি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকিং জগতের সেরা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লুটের রাজ্যে পরিণত হয়। আজ ব্যাংকটির করুণ দশার জন্য লাখ লাখ গ্রাহক এক ধরনের নিঃস্ব।
রাজনৈতিক জীবনে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সবশেষ ২২তম জাতীয় পরিষদে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান পদে মনোনীত হন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের অন্যতম কান্ডারি হিসেবে পরিচিত তাকে পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতিও। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন দিয়ে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেন।
তার বিরুদ্ধে বিদেশে বিনিয়োগকারী হিসেবে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি পারমিট নেওয়ার অভিযোগ এনে বিভিন্ন প্রমাণাদিসহ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী জুলকারনাইন সায়ের খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে আলোচনার সৃষ্টি করলেও অজানা কারণে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যাপারটিকে কোনো গুরুত্বই দেয়নি। এ নিয়েও জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে এমন বিতর্কের জরুরি নিষ্পত্তির জন্য বর্তমান সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
সম্প্রতি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির একান্ত আলাপচারিতায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয় এলে তিনি বলেছেন, ‘আমি শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু আমার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।’ ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গভবনে ফোন এলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে।
বলা হলো, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে আসবেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। এটি শুনেই প্রস্তুতি শুরু হলো বঙ্গভবনে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফোন এলো তিনি আসছেন না। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে মতিউর রহমান চৌধুরীর ব্যক্তিগত আলাপচারিতা আর ব্যক্তিগত থাকেনি। পরবর্তীতে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সাপ্তাহিক রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’ শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য প্রকাশিত হয়। এরপরই রাষ্ট্রপতির এ বক্তব্য নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে।
রাষ্ট্রপতির এমন মন্তব্যের পর আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, আমার কথা হচ্ছে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, উনি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এটি মিথ্যাচার। এটি উনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। উনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যদি রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দেননি।
প্রায় আড়াই মাস পরে, তা হলে এটি এক ধরনের স্ববিরোধিতা হয়। উনার শপথ লঙ্ঘন হয় এবং এই পদে থাকার যোগ্যতা ওনার আর আছে কি না প্রশ্ন আসে। কারণ আমরা জানি বাংলাদেশের সংবিধানে বলা হয়েছে, শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা না থাকলে বা গুরুতর অসদাচরণ করলে রাষ্ট্রপতি হিসেবে থাকতে পারে কি না সেটি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আমাদের দেশের সংবিধানে আছে।’
ড. আসিফ নজরুলের এমন মন্তব্যের পরই দেশের সাধারণ জনগণের একটি বিরাট অংশ মনে করেন রাষ্ট্রপতিকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। আর এ দাবি নিয়ে গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যার পর থেকে শত শত ছাত্র-জনতা বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন, এমনকি তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধ্য হন। এতে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি দিয়ে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
সেই দাবির একটি ছিল ছাত্রলীগকে সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা। যদিও ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের এই দাবি পূরণ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা থাকা না থাকার বিষয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতার ভিত্তিতেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হবে না।’ বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের তিন নেতা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করলেন যে তারা এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চান না।
রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মোঃ সাহাবুদ্দিনকে সরানোর দাবির পক্ষে ঐকমত্য তৈরির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে গত ২৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। এ বৈঠকের পর বিএনপির মহাসচিব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদের বক্তব্য তারা শুনেছেন, কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে তাদের দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।’ রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনকে তার পদ থেকে অপসারণ বা পদত্যাগে বাধ্য করার প্রশ্নে বিএনপির একেক নেতা একেক মন্তব্যই প্রমাণ করছে বিএনপি এখন পর্যন্ত তাদের দলকে সুশৃঙ্খলভাবে গুছিয়ে নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে এনে দাঁড় করাতে পারেনি। যদিও বিএনপির হাইকমান্ড বিশেষ করে তারেক রহমান এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন বলে জানা যায়।
রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের আইন, শাসন ও বিচার বিভাগের সব শাখার আনুষ্ঠানিক প্রধান সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক অর্থাৎ কমান্ডার ইন চিফ। রাষ্ট্রের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হলেন রাষ্ট্রপতি, যাকে আমরা মহামান্য বলে সম্বোধন করি। রাষ্ট্রপতি পদটি শুধু সম্মান ও শ্রদ্ধার জায়গায়। তিনি দলীয় মনোনয়নে রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেও রাষ্ট্রপতি দলীয় বৃত্তের বাইরে এসে জনগণের হতে পারেননি। এই অভিযোগ শুধু বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে এমনটি নয়, আগের কোনো এক রাষ্ট্রপতি দলীয় বৃত্তের বাইরে আসতে পারেননি। জনগণ যখন নানা ন্যায়সঙ্গত দাবি নিয়ে রাজপথে তখন রাষ্ট্রপতি জনগণের কথায় কান দেননি। দেশে যখন ভোটাধিকার, বাক-স্বাধীনতা হনন, গুম-খুনসহ নানা অপকর্ম চলছিল তখন রাষ্ট্রপতি জনগণের পক্ষ হয়ে ক্ষমতাসীনদের নানা অপকর্মের জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করেননি। অথচ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় নেওয়াই রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য।
ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানা অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রপতির প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থা কতটুকু তা অবশ্যই ভাবার বিষয়। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ নিয়ে বিভিন্নজন বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। কেউ সংবিধানের দোহাই তুলছেন, কেউবা আবার গণঅভ্যুত্থানের। গত ৫ আগস্ট সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হাজারো মানুষের জীবন ও কয়েক হাজার মানুষের পঙ্গুত্বের বিনিময়ে সংগঠিত গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা সেই সঙ্গে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা।
৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান কোনো সংবিধান মেনে হয়নি। এমনকি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও সংবিধানের আওতায় হয়নি বা সাংবিধানিক সরকারও নয়। তবে এই সরকারকে ইতিমধ্যে একটি সাংবিধানিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে রাষ্ট্র ও জনগণের প্রয়োজনে ও
দাবির প্রেক্ষিতে সবকিছুই যে সাংবিধানিকভাবে হবে তা কাম্য নয়। আর যেই সংবিধানের কথা বলা হচ্ছে সেই সংবিধান কি আমাদের সাধারণ জনগণের আশা-আকাংখা প্রতিফলনের সংবিধান?
না মোটেও না, এ সংবিধানই সংশোধনের মাধ্যমে আমাদের ভোটাধিকার হরণ করেছে। আর এ সংবিধানকে সংস্কার করে জনগণের আশা-আকাংখার একটি সংবিধান হবে এটির জন্যই এত আত্মত্যাগ। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের কোন ধারার, কোন অনুচ্ছেদের বলে পদত্যাগ করবেন সেটি বিবেচ্য বিষয় নয়। রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নিজের বিবেকের তাড়নায় রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করে জাতির জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবেন-এটাই প্রত্যাশা।
প্রাবন্ধিক ও বিশ্লেষক
সময়ের আলো/আরএস/