ই-পেপার মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪
মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪

হাতি পড়েছে খাদে
প্রকাশ: শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৩:৫৪ এএম  (ভিজিট : ৩২২)
এক রাতে এক ইঁদুর পথের ধারে ঘুরে ঘুরে তেলাপোকা ধরে মড়মড় করে খাচ্ছিল। পাশের রাস্তায় এক হাতি পায়চারি করে হাওয়া খাচ্ছিল। ইঁদুরের তেলাপোকা খাওয়ার মড়মড় শব্দ শুনে হাতি জোর গলায় বলে, কে রে? গভীর রাতে এমন শব্দ করিস! ইঁদুর হাতির শব্দ শুনে আতঙ্কিত দৌড়ে রাস্তা পার হতেই হাতির পায়ের নিচে পড়ে যায়! হাতিটি বেশ বয়স্ক ছিল আর ইঁদুরের শরীর তো তুলতুলে ও পিচ্ছিল। ইঁদুরটি হাতির পায়ের নিচে পড়তেই হাতি পিছলে দুরুম করে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়! যেখানে হাতিটি পড়ে যায় সেখানে লাখ লাখ পিপীলিকার এক জমজমাট ভোজের অনুষ্ঠান ছিল। সব পিপীলিকা সেখানে উৎসব করে মরা মুরগির মাংস খাচ্ছিল। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, হাতিটি পিপীলিকাদের ভোজসভার ওপরেই পড়ে।


হাতির বিশালাকৃতির দেহের নিচে পড়ে বেশুমার পিপীলিকা হতাহত হয়! যেসব পিপীলিকা হাতিটির পাশে মানে একেবারে কিনারে ছিল তারা মারাত্মকভাবে আহত হয়। আর বাকি পিপীলিকা মরে মাটিতে মিশে যায়। যে সব পিপীলিকা প্রাণে বেঁচে যায় তারা একটি তদন্ত কমিটি করে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের জন্য। 

যেমন সিদ্ধান্ত তেমন কাজ। বিড়াল দুধেলকে আহ্বায়ক ও বেজি আর খরগোশকে সদস্য করে তিন সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। 
তদন্ত কমিটি নানা তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে চার পৃষ্ঠার এক তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে। কমিটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে-হাতিটির কোনো দোষ নেই, সে বয়সের ভারে দুর্বল ছিল। আর থেতলে মরে থাকা ইঁদুরটিরও কোনো দোষ নেই।

হাতি তার জবানবন্দিতে বলেছে যে, ইঁদুরটির কোনো দোষ ছিল না। সে ভয়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে আমার পায়ের নিচে পড়ে গেল...এই বলে সে লজ্জায় আমতা আমতা করে বলে, বাকিটা আর কী বলব! বয়স হলে যা হয় তাই হয়েছে। মানে ইঁদুরের ওপর পাড়া লেগে ইঁদুরেরতো চিহ্ন নেই আমিও পিছলে পড়ে এখন আর উঠতেই পারছি না। তোমরা দয়া করে আমাকে একটু উঠে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করে দিলে হয়তো প্রাণে বেঁচে যাব। নয়তো আস্তে আস্তে আমিও কাক, শকুন, শেয়াল, কুকুর এমনকি পিপীলিকারও আহারের রসদ হয়ে যাব মরে গিয়ে! তাই আমার পড়ে যাওয়ার খবরটা বনের ভেতরে গিয়ে বন্য হাতিদের বলবে তারা যেন এসে আমাকে তুলে দেয়। পড়ে যাওয়ার ভয়ে আমি কখনো বেশি উঁচু-নিচু পথে চলি না। বনের পাশ দিয়ে যেসব লতাপাতা পাওয়া যায় তাই খেয়ে এই বৃদ্ধ বয়সে জীবনযাপন করে চলছি। শুইলে যদি উঠতে না পারি সে ভয়ে কখনো শুইনা। দাঁড়িয়ে থেকেই বিশ্রাম এবং চোখ বন্ধ করে ঘুমের চাহিদাও মেটাই। বেশি ঘুম পেলে বড় বড় গাছের সঙ্গে হেলান দিয়ে একটু ঝিমিয়ে নিই। পড়ে যাওয়ার কারণে যে অসংখ্য পিপীলিকা মারা গিয়েছে এ জন্য আমি ভীষণভাবে অনুতপ্ত, ব্যথিত ও লজ্জিত! তোমরা পিপীলিকার সর্দার পিলিসটিনকে বলবে সে যেন আমার পক্ষে সব পিপীলিকার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক দুধেল বলে ঠিক আছে, আপনার জন্যও আমরা সব ব্যবস্থা করব। এবার তদন্ত কমিটি বনের ভেতর গিয়ে হাতিদের কাছে এই দুর্ঘটনার খবর অবহিত করে এবং বলে তোমাদের বড় দাদা রাস্তায় পড়ে আছে রাত থেকে। তোমরা জলদি গিয়ে তাকে তুলে আনার ব্যবস্থা করো। খবর শুনে দশটি শক্তিশালী হাতি গিয়ে বয়স্ক হাতিকে শুড় পেঁচিয়ে তুলে দাঁড় করিয়ে দেয় এবং খুব সাবধানে চলাফেরা করার পরামর্শ দেয়।

তদন্ত কমিটি পিপীলিকার সর্দার পিলিসটিনের কাছে গিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। পিলিসটিন প্রতিবেদন পড়ে কমিটির নিরপেক্ষতার প্রশংসা করে ধন্যবাদ দিয়ে সবাইকে ফড়িং ভাজা খাইয়ে বিদায় করে দেয়।


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close