ই-পেপার বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫
বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫

বান্দার প্রার্থনায় আল্লাহর সন্তুষ্টি
প্রকাশ: শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:৪০ এএম  (ভিজিট : ২৪৭৬)
আল্লাহ স্রষ্টা আর মানুষ হলো সৃষ্টি। আল্লাহ সবসময় তাঁর সৃষ্টির প্রতি সদয় এবং প্রার্থনা কবুল করতে প্রস্তুত। মানুষ যেহেতু সৃষ্টি, সে নিজে সৃষ্টার মুখাপেক্ষী। তাই মানুষ কীভাবে অপর মানুষের সব চাওয়া পূরণ করতে পারে? উপরন্তু কেউ কারও কাছে চাইতে থাকলে সব থেকে উদার দাতাও একসময় বিরক্ত হয়ে যায়। আপনজন চাইলেও আমরা ত্যক্ত হয়ে উঠি। 

কিন্তু আমাদের রব এমন এক সত্তা, যিনি চান মানুষ তাঁর কাছে প্রার্থনা করুক। বেশি বেশি বলুক- আমার এটা দরকার, ওটা দরকার, সুখ দরকার, শিফা দরকার, টাকা দরকার, এই দরকার, সেই দরকার। তিনি দিতে ভালোবাসেন। মজার বিষয় হলো, না চাইলে তিনি রাগ করেন। তাঁর কাছে না চাওয়াটাকে তিনি অহংকার মনে করেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। যারা অহংকারবশে আমার ইবাদত থেকে বিরত থাকে, লাঞ্ছিত হয়ে এরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা গাফির : ৬০)

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরকারকগণ বলেন, ‘ইবাদত’ এখানে  ‘দোয়া’র সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আর দোয়া মানে হলো চাওয়া। সাধারণ চাওয়া আর দোয়া শব্দের ‘চাওয়া’র মাঝে পার্থক্য আছে। দোয়া মানে নিজেকে কারও সম্পূর্ণ মুখাপেক্ষী মনে করে প্রার্থনার হাত প্রসারিত করা। বলাবাহুল্য, এটা কেবল আল্লাহর সামনেই করা যায়। আল্লাহর কাছে না চাইলে আল্লাহ এমনভাবেই রাগ করেন। যে রাগের বহিঃপ্রকাশ হলো একেবারে জাহান্নাম, তাও আবার লাঞ্ছিত-অপদস্থ হয়ে। আরেকটা বিষয় হলো, চাওয়াটা দুনিয়ার দৃষ্টিতে ‘লজ্জা’র বিষয় হলেও আল্লাহর কাছে ‘চাওয়া’ ব্যাপারটা কিন্তু কিন্তু সম্মানজক। রাসুল (সা.) বলেন, ‘দোয়া বা চাওয়া অপেক্ষা আল্লাহর কাছে সম্মানজনক কোনো বিষয় নেই’ (তিরমিজি : ৩৩৭০)। এর থেকে বড় অফার আর কী হতে পারে? আল্লাহ আসলে আমাদের দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন!

আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। তাই স্রষ্টার সঙ্গে সৃষ্টির সম্পর্ক থাকা জরুরি। জীবনের সুখ-দুঃখ ও একান্ত আলাপ সবই যেন মানুষ তাঁকে বলতে পারে। বান্দা আল্লাহর কাছে চাইলে খুশি হন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার প্রয়োজন আল্লাহর কাছে বলে না, আল্লাহ তার প্রতি ক্ষেপে যান’ (তিরমিজি : ৩৩৭৩)। তাই দোয়া করলেই লাভ, প্রার্থিত জিনিস পেলেও লাভ, না পেলেও লাভ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে কেউ কিছু যখন চায়, আল্লাহ তাকে তাই দেন, অথবা অনুরূপ খারাপ কিছু তার থেকে দূরে রাখেন’ (তিরমিজি)। 

আর দুনিয়াতে এর ফল না পেলেও বলা হয়েছে,  ‘দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত’ (আবু দাউদ : ১৪৭৯)। এর প্রেক্ষিতে বলা যায়, আমলনামায় ইবাদতের সওয়াব তো জমতে থাকবেই। সুতরাং লস নেই, লাভ ছাড়া। দ্বিতীয়ত অন্যান্য ইবাদতের জন্য একটা শর্ত লাগে। যেমন সালাতের জন্য অজু, জাকাতের জন্য মাল, হজের জন্য সামর্থ্য ইত্যাদি। কিন্তু দোয়া এমন একটা সিম্পল ইবাদত- এর জন্য প্রি-কন্ডিশন বলতে কিছু নেই। পথচলায়, বিশ্রামে, কাজে, অবসরে সর্বাবস্থায় শুধু মুখে বা অন্তরে বিড়বিড় করে প্রয়োজন আওড়াতে থাকলেই ইবাদত হয়ে যায়, আল্লাহ তায়ালাও খুশি হয়ে যান।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close